পঞ্চগড়ে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির লাশ ফেরত দিল ভারত
Published: 12th, March 2025 GMT
পঞ্চগড়ের ভিতরগড় সীমান্তের ওপারে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি নাগরিক আল আমিনের (৩৬) লাশ ফেরত পাঠানো হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের শূন্যরেখায় তেঁতুলিয়া মডেল থানা-পুলিশের কাছে লাশটি হস্তান্তর করে ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। পরে তেঁতুলিয়া মডেল থানা-পুলিশ নিহত আল আমিনের লাশ তাঁর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে।
লাশ হস্তান্তরের সময় বিএসএফ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নিহত আল আমিনের স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন। তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনায়েত কবির লাশ হস্তান্তরের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
নিহত আল আমিন পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের জিন্নাতপাড়া এলাকার সুরুজ আলীর ছেলে। তিনি সীমান্তে চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে বিজিবি।
এর আগে গত শুক্রবার রাত তিনটার পর পঞ্চগড় সদর উপজেলার ভিতরগড় সীমান্তে ৭৪৪ নম্বর মেইন পিলারের ৭ নম্বর সাবপিলার-সংলগ্ন এলাকার ওপারে ভারতের ভাটপাড়ায় কাঁটাতারের বেড়ার লিংক রোড-সংলগ্ন এলাকায় বিএসএফের গুলিতে মারা যান আল আমিন। পরে বিএসএফ লাশটি ভারতের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
ওই ঘটনার পর বিজিবির সঙ্গে শনিবার ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে ও সোমবার সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে দুই দফা পতাকা বৈঠক হয়। তখন পুলিশ ও হাসপাতালের আইনি কার্যক্রম শেষে লাশ ফেরত দেওয়ার কথা জানায় বিএসএফ।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে নিহত আল আমিনের ভাতিজা সাব্বির হোসেন বলেন, ‘রাতে পুলিশ আমাদের কাছে চাচার (আল আমিনের) লাশ হস্তান্তর করার পরপরই বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। বুধবার সকাল ৯টায় স্থানীয় পাহাড়বাড়ি কবরস্থানে জানাজা শেষে দাফন করা হবে।’
হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম মুঠোফোন প্রথম আলোকে বলেন, সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত আল আমিনের লাশ চার দিনের মাথায় হস্তান্তর করেছে ভারতের পুলিশ। রাতে স্বজনেরা আল আমিনের লাশ বাড়িতে নিয়ে এসেছেন। বুধবার সকাল ৯টায় তাঁর লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এসএফ র গ ল ত
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ