অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস কক্সবাজারের খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন। 

শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেলে তিনি জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য নির্মিত এই প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখেন এবং চলমান কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হন।

পরিদর্শনকালে প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিরাজুল ইসলাম প্রধান উপদেষ্টাকে প্রকল্পের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, ১২৯টি ভবনে ৪ হাজার ২১৮ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাস্তুচ্যুত মানুষদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।

পরিদর্শন শেষে প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজারের পর্যটন ও উন্নয়ন সম্ভাবনা নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। সভায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, ‘‘আঁরা হতা হৈবল্যা নু আইয়্যি, অনরাত্তু জাইনতো আইস্যিদে।’’ (আমরা কথা বলার জন্য আসিনি, আপনাদের কাছ থেকে জানতে এসেছি)।

এদিকে, বিকেল ৫টার দিকে প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসসহ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে, দুপুর ১টার দিকে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে একই ফ্লাইটে কক্সবাজারে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। এসময় তিনি কক্সবাজার বিমানবন্দরের চলমান নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আমিনুল হাসিব প্রধান উপদেষ্টাকে বিমানবন্দরের নির্মাণকাজের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মাণকাজ ৯৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঢাকা/তারেকুর/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’

নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি। 

৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে। 

আরো পড়ুন:

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা। 

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী। 

উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” 

চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।” 

চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়। 

মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ