বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট জয়ের লক্ষ্যে অভিযান শুরু করেছেন পর্বতারোহী ইকরামুল হাসান শাকিল। ২৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্রসৈকত থেকে হাঁটা শুরু করেছেন। এভারেস্টে আরোহণের পথে তিনি বেশ কয়েকটি রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন। সফল হলে এটি হবে পদযাত্রা করে সবচেয়ে বেশি পথ পাড়ি দিয়ে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে সবচেয়ে কম সময়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এভারেস্ট জয়ের বিশ্বরেকর্ড।
এর আগে ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়ার পর্বতারোহী টিম ম্যাকার্টনি-স্নেপ ভারতের গঙ্গাসাগর থেকে ৯৬ দিনে প্রায় ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পা রাখেন পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গে। ৩৫ বছর আগের ম্যাকার্টনির সেই কৃতিত্ব বেশ অনুপ্রাণিত করেছে বাংলাদেশের পর্বতারোহী ইকরামুল হাসান শাকিলকে। এই তরুণও তাঁর অভিযানের নাম দিয়েছেন ‘সি টু সামিট’।
কক্সবাজার থেকে হেঁটে হেঁটে চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা ও মুন্সীগঞ্জ হয়ে ১২ দিন পর ঢাকায় পৌঁছান শাকিল। এভাবে ৯০ দিনে প্রায় ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এভারেস্টের ২৯,০৩১ ফুট উঁচু শিখরে আরোহণ করবেন। এ অভিযানে তাঁর সঙ্গে আছে বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাব। অভিযানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক বা টাইটেল স্পনসর হিসেবে আছে প্রাণ গ্রুপ। স্ন্যাক্স পার্টনার হিসেবে আছে মিস্টার নুডলস। গিয়ার পার্টনার হিসেবে আছে মাকলু-ই-ট্রেডার্স নেপাল। হেলথ পার্টনার হিসেবে আছে সিস্টেমা টুথব্রাশ এবং অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় বেশ কিছু মানুষ, যা সফল হলে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে।
এ অভিযানের সঙ্গে পরিবেশ সচেতনতার বিষয়ও যুক্ত রয়েছে। শাকিল সম্প্রতি প্লাস্টিকদূষণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশ রক্ষায় টেকসই সমাধান প্রচারের জন্য জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) ইয়ুথ অ্যাডভোকেট হয়েছেন। তাঁর লক্ষ্য– দুর্গম অভিযানও পরিবেশের ক্ষতি না করে অভিযান সম্পন্ন করা সম্ভব। এভারেস্ট চূড়ায় আরোহণের এ অভিযানে পথে যেতে যেতে পরিবেশ সচেতনতার বার্তাও ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এর মধ্যে আছে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জন এবং কার্বন নিঃসরণ কমানোর কথা। এ প্রসঙ্গে শাকিল বলেন, ‘এ অভিযান শুধু একটি রেকর্ড গড়ার প্রচেষ্টা নয়, এটি প্লাস্টিকদূষণের বিরুদ্ধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান। বঙ্গোপসাগর থেকে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ পর্যন্ত ভ্রমণের মাধ্যমে আমি মানুষকে প্লাস্টিক ব্যবহারের বিষয়ে নতুন করে ভাবাতে এবং সবাইকে পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসতে অনুপ্রাণিত করতে চাই।’
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার প্লাস্টিকদূষণের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘প্লাস্টিকদূষণ আমাদের সময়ের অন্যতম বড় পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ, যা জীববৈচিত্র্যকে বিপন্ন করছে, সাগরকে দূষিত করছে এবং লাখো মানুষের জীবিকা প্রভাবিত করছে। এই সংকট মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ ও ব্যাপক সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি আশা করি, শাকিলের অভিযান মানুষকে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো এবং টেকসই জীবনধারা গ্রহণের জন্য অনুপ্রাণিত করবে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস গড়ার এই প্রচেষ্টায় তাঁর সফলতা কামনা করি।’
বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাবের (বিএমটিসি) প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক বলেন, ‘শৃঙ্গজয়ে শাকিলের যে সামর্থ্য আছে, আমরা তাঁর গ্রেট হিমালয়া ট্রেইল অভিযান দেখেই বুঝেছিলাম। তবে পাহাড়ের সাফল্য নিজের সক্ষমতা ছাড়া আরও অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। ভালো আবহাওয়া তার মধ্যে অন্যতম। তাই শাকিল যত দক্ষই হোন না কেন, শিখর জয় নিশ্চিত নয়।’
অভিযানের সম্পূর্ণ খরচও জোগাড় করতে পারেননি শাকিল। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি ব্যয়বহুল অভিযান। সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে যা সহযোগিতা পেয়েছি, তা পর্যাপ্ত নয়। আরও ২০ লাখ টাকা লাগবে। বিভিন্নভাবে বাকি টাকা সংগ্রহের চেষ্টা করছি।’
শাকিল হিমালয়ের ‘কেয়াজো-রি’, ‘দ্রৌপদী-কা-ডান্ডা-২’, ‘ডোলমা খাং’, ‘হিমলুং হিমাল’ ও ‘দ্য গ্রেট হিমালয়ান ট্রেইল’-এর সাফল্যের পর এখন এভারেস্ট জয়ের পথে। বাংলাদেশ থেকে এভারেস্ট একাধিকবার জয় করা হয়ে গেছে, তারপরও কেন এভারেস্ট জয় করার স্বপ্ন– এমন প্রশ্নের জবাবে ইকরামুল হাসান শাকিল বলেন, ‘আমার কাছে এভারেস্ট ওয়ার্ল্ড কাপের মতো, যা বারবার জয় করা যায়।’
গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বাগচালা গ্রামে শাকিলের জন্ম। ২০১৯ সালে বাবা মো.
ছোটবেলা থেকেই ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা ছিল শাকিলের। জানান, ‘আমি চাইতাম পত্রিকায় আমার নাম ও ছবি ছাপা হোক। আমি আর দশজন থেকে আলাদা হতে চাইতাম।’ গাজীপুরে ধূমপানের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে কাজ করেছেন তিনি। সেখান থেকেই শুরু। তারপর ২০১০ সালে যোগ দেন পদাতিক নাট্য সংসদ বাংলাদেশে। এই নাট্যদলের হাত ধরেই তাঁর প্রথম ভারতে যাওয়া। ‘নুরু মিয়ার কিচ্ছা’ নামে একটি নাটক লিখেছেন তিনি, তা এখন মঞ্চস্থ করছে পদাতিক।
ক্যামেরার পেছনেও কাজ করছেন তিনি। অনেক টিভি অনুষ্ঠান ও নাটকে সহকারী নির্দেশক হিসেবে কাজ করছেন। আর নিজে এ পর্যন্ত তৈরি করেছেন পাঁচটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। নিজের অভিযানগুলোর অভিজ্ঞতা পাঠককে শোনাতে কলমও ধরেছেন শাকিল। অভিযান নিয়ে তাঁর লেখা বইগুলো হলো, ‘মাউন্ট কেয়াজো-রি শিখরে বাংলাদেশ’, ‘পদচিহ্ন এঁকে যাই’, ‘পর্বতাভিযানে শ্বাসরুদ্ধকর পনেরো ঘণ্টা’, ‘হিমলুং শিখরে’, ‘দোগারি’, ‘গোমতী থেকে হিমালয়’ এবং ‘হেয়ালী ফেরা’ ও ‘দেবী’। সময় পেলে বিভিন্ন আলোচনা সভায় নিজের এগিয়ে যাওয়ার গল্প শোনান শাকিল।
পাহাড় জয়ের আগে শাকিল আলোচনায় আসেন কলকাতা থেকে ঢাকামুখী পদযাত্রা করে। ২০১৩ সালে তিনি কলকাতা থেকে হেঁটে ১১ দিনে ঢাকায় পৌঁছান। তখনই যোগ দেন বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাবে। পর্বতারোহণের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেন ভারত থেকে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো ২০ হাজার ২৯০ ফুট উচ্চতার কেয়াজো-রি পর্বতশৃঙ্গ জয় করতে যান এম এ মুহিতের নেতৃত্বে সাত পর্বতারোহী। তাদের একজন শাকিল। শেষ পর্যন্ত মুহিত, শাকিল ও কাজী বাহলুল শৃঙ্গটি জয় করেন। ২০১৭ সালে লারকে পিক জয়ের অভিযানেও ছিলেন তিনি। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে খুব কাছাকাছি গিয়ে তা জয় করা হয়নি। পরের বছর ভারতের নেহরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেইনিয়ারিং থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণের সময়েই তিনি জয় করেন ‘দ্রৌপদী-কা-ডান্ডা-২’ শৃঙ্গ। ২০১৯ সালে বাংলাদেশসহ পাঁচ দেশের আট পর্বতারোহী ‘হিমলুং’ জয়ের অভিযানে নামেন। সেই দলে অংশ নিয়ে তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হিমলুং-এর চূড়ায় পা রাখেন।
বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাবের সভাপতি এভারেস্টজয়ী এম এ মুহিত বলেন, ‘আমি শাকিলকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। আমাদের প্রতিশ্রুতিশীল পর্বতারোহীদের মধ্য সে সেরা। ও একদিন আমাদেরও ছাড়িয়ে যাবে। আমাদের সবার উচিত শাকিলের পাশে থাকা এবং তাকে উৎসাহ দেওয়া।’
তবে শাকিলের চোখে এখন শুধুই এভারেস্টের হাতছানি। তিনি বলেন, ‘এভারেস্ট আরোহণ আমার স্বপ্ন। এখন শুধু সেই মুহূর্তটির জন্য অপেক্ষা করছি।’ v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবহ র র টন র কর ছ ন র কর ড ক জ কর আম দ র পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষার্থীর গবেষণাপত্রের অংশ অনুমতি না নিয়ে প্রকাশের অভিযোগ, শিক্ষক বলছেন ‘ভিত্তিহীন’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইসরাত জাহানের বিরুদ্ধে তাঁর আগের কর্মস্থলের এক শিক্ষার্থীর তৈরি করা গবেষণাপত্রের অংশ নিজের নামে প্রকাশ করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
লিখিত অভিযোগ দেওয়া ওই সাবেক শিক্ষার্থীর নাম রিফাত সুলতানা। তিনি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমানে তিনি ফেনী শহরের বাসিন্দা এবং সেখানে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ২০১৯ সালে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন ইসরাত জাহান। ওই সময়ের শিক্ষার্থী রিফাত সুলতানার থিসিসের সুপারভাইজার ছিলেন তিনি। প্রায় আড়াই বছর আগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছেন ইসরাত জাহান।
জানতে চাইলে ইসরাত জাহান মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেই শিক্ষার্থী আমাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলবে, কখনো ভাবিনি। আমার সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক এবং সে নিজেই একাধিকবার আমার সঙ্গে যৌথভাবে জার্নাল প্রকাশের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমি দীর্ঘদিন তাকে পড়িয়েছি, আমিই তাকে সব সময় উৎসাহিত করেছি থিসিসে। কিন্তু অভিযোগে এবং গণমাধ্যমে সে যেসব কথা বলেছে, তার সবই ভিত্তিহীন। আমি তার সঙ্গে অসংখ্যবার আলোচনা করেই জার্নালে প্রবন্ধ জমা দিয়েছি। আমার কাছে সব প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু কেন সে অভিযোগ করল, এটাই বুঝতে পারছি না।’
২০১৯ সালে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ইসরাত জাহানের অধীন রিফাত সুলতানা একটি থিসিস করেন। যার শিরোনাম ‘সাবজুগেশন, মার্জিনালাইজেশন অ্যান্ড ডাবল কলোনিজেশন: আ রিডিং অব দ্য অবরোধবাসিনী, দ্য ডার্ক হোল্ডস নো টেররস অ্যান্ড দ্য গড অব স্মল থিংস’। ওই থিসিসের বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে গত ৩১ ডিসেম্বর ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ইংলিশ লিটারেচার অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস’ জার্নালে ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স: আ কোয়েস্ট ফর সেলফ ইন শশী দেশপান্ডে’স দ্য ডার্ক হোল্ডস নো টেররস’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেন ইসরাত জাহান। এই প্রবন্ধে রিফাত সুলতানাকে দ্বিতীয় লেখক হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এরপর গত ১৩ মার্চ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর অভিযোগ পাঠান রিফাত সুলতানা। যার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রিফাত সুলতানা অভিযোগ করেন, ইসরাত জাহান তাঁর অনুমতি ছাড়া এমএ থিসিসের ৩ নম্বর অধ্যায় থেকে সরাসরি অনুলিপি করেছেন। এ ছাড়া থিসিসের অন্যান্য অংশও, যেমন ৬ জানুয়ারি ২০১৯ এবং ২৩ আগস্ট ২০১৯ তারিখে পাঠানো থিসিসের খসড়া নমুনা এবং থিসিস প্রেজেন্টেশন থেকেও তিনি উদ্ধৃতি এবং প্যারাফ্রেজিং ব্যবহার করেছেন। তা ছাড়া ইসরাত জাহান থিসিসের মৌলিক লেখকের নাম প্রকাশে তাঁর সম্মতি নেননি। গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ইসরাত জাহান তাঁর মুঠোফোনে কল করলেও তিনি ব্যস্ততার কারণে ধরতে পারেননি। এরপর তাঁর সঙ্গে শিক্ষকের আর কোনো যোগাযোগ হয়নি।
রিফাত সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গত ২২ এপ্রিল আমার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। তবে সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় তদন্ত কমিটি পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে এবং নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। তদন্ত চলাকালীন আমার অভিযোগের তদন্ত না করে আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছে তারা। তদন্ত কমিটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে মানসিকভাবে হেনস্তা করেছে।’
তদন্ত কমিটির সদস্যরা তাঁদের মত চাপিয়ে দিতে চেয়েছেন উল্লেখ করে রিফাত সুলতানা আরও বলেন, ‘তাঁরা মনে করেন, থিসিস থেকে শিক্ষার্থী এবং সুপারভাইজার দুজনেই নাকি একক লেখক হিসেবে গবেষণা আর্টিকেল প্রকাশ করতে পারেন এবং কোনো সুপারভাইজার চাইলেই শিক্ষার্থীর থিসিস থেকে প্রথম লেখক হিসেবে আর্টিকেল প্রকাশ করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে থিসিসকারী শিক্ষার্থী অনুমতি না নিয়ে আর্টিকেল প্রকাশ করাকে তাঁরা অন্যায় বলে মনে করেন না।’
জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির সদস্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এগুলো সব মিথ্যা ও বানোয়াট কথাবার্তা। ইসরাত জাহান এই গবেষণা দিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো প্রকার সুবিধা নেননি। এটি তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। কারণ, পূর্বের প্রতিষ্ঠানে এটি তাঁদের যৌথ কাজ ছিল। ইসরাত যে গবেষণা জার্নালে প্রকাশ করেছেন, সেখানে তিনি শিক্ষার্থীর নামও দিয়েছেন। এরপরও আমাদের কাছে অভিযোগ করায় আমরা এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি এবং অভিযোগকারীর কাছ থেকে বিস্তারিত জানান চেষ্টা করেছি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন সেগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।’