Samakal:
2025-11-03@12:44:21 GMT

বিশ্বরেকর্ডের পথে শাকিল

Published: 14th, March 2025 GMT

বিশ্বরেকর্ডের পথে শাকিল

বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট জয়ের লক্ষ্যে অভিযান শুরু করেছেন পর্বতারোহী ইকরামুল হাসান শাকিল। ২৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্রসৈকত থেকে হাঁটা শুরু করেছেন। এভারেস্টে আরোহণের পথে তিনি বেশ কয়েকটি রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন। সফল হলে এটি হবে পদযাত্রা করে সবচেয়ে বেশি পথ পাড়ি দিয়ে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে সবচেয়ে কম সময়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এভারেস্ট জয়ের বিশ্বরেকর্ড।
এর আগে ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়ার পর্বতারোহী টিম ম্যাকার্টনি-স্নেপ ভারতের গঙ্গাসাগর থেকে ৯৬ দিনে প্রায় ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পা রাখেন পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গে। ৩৫ বছর আগের ম্যাকার্টনির সেই কৃতিত্ব বেশ অনুপ্রাণিত করেছে বাংলাদেশের পর্বতারোহী ইকরামুল হাসান শাকিলকে। এই তরুণও তাঁর অভিযানের নাম দিয়েছেন ‘সি টু সামিট’। 
কক্সবাজার থেকে হেঁটে হেঁটে চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা ও মুন্সীগঞ্জ হয়ে ১২ দিন পর ঢাকায় পৌঁছান শাকিল। এভাবে ৯০ দিনে প্রায় ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এভারেস্টের ২৯,০৩১ ফুট উঁচু শিখরে আরোহণ করবেন। এ অভিযানে তাঁর সঙ্গে আছে বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাব। অভিযানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক বা টাইটেল স্পনসর হিসেবে আছে প্রাণ গ্রুপ। স্ন্যাক্স পার্টনার হিসেবে আছে মিস্টার নুডলস। গিয়ার পার্টনার হিসেবে আছে মাকলু-ই-ট্রেডার্স নেপাল। হেলথ পার্টনার হিসেবে আছে সিস্টেমা টুথব্রাশ এবং অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় বেশ কিছু মানুষ, যা সফল হলে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে।
এ অভিযানের সঙ্গে পরিবেশ সচেতনতার বিষয়ও যুক্ত রয়েছে। শাকিল সম্প্রতি প্লাস্টিকদূষণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশ রক্ষায় টেকসই সমাধান প্রচারের জন্য জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) ইয়ুথ অ্যাডভোকেট হয়েছেন। তাঁর লক্ষ্য– দুর্গম অভিযানও পরিবেশের ক্ষতি না করে অভিযান সম্পন্ন করা সম্ভব। এভারেস্ট চূড়ায় আরোহণের এ অভিযানে পথে যেতে যেতে পরিবেশ সচেতনতার বার্তাও ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এর মধ্যে আছে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জন এবং কার্বন নিঃসরণ কমানোর কথা। এ প্রসঙ্গে শাকিল বলেন, ‘এ অভিযান শুধু একটি রেকর্ড গড়ার প্রচেষ্টা নয়, এটি প্লাস্টিকদূষণের বিরুদ্ধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান। বঙ্গোপসাগর থেকে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ পর্যন্ত ভ্রমণের মাধ্যমে আমি মানুষকে প্লাস্টিক ব্যবহারের বিষয়ে নতুন করে ভাবাতে এবং সবাইকে পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসতে অনুপ্রাণিত করতে চাই।’
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার প্লাস্টিকদূষণের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘প্লাস্টিকদূষণ আমাদের সময়ের অন্যতম বড় পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ, যা জীববৈচিত্র্যকে বিপন্ন করছে, সাগরকে দূষিত করছে এবং লাখো মানুষের জীবিকা প্রভাবিত করছে। এই সংকট মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ ও ব্যাপক সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি আশা করি, শাকিলের অভিযান মানুষকে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো এবং টেকসই জীবনধারা গ্রহণের জন্য অনুপ্রাণিত করবে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস গড়ার এই প্রচেষ্টায় তাঁর সফলতা কামনা করি।’
বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাবের (বিএমটিসি) প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক বলেন, ‘শৃঙ্গজয়ে শাকিলের যে সামর্থ্য আছে, আমরা তাঁর গ্রেট হিমালয়া ট্রেইল অভিযান দেখেই বুঝেছিলাম। তবে পাহাড়ের সাফল্য নিজের সক্ষমতা ছাড়া আরও অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। ভালো আবহাওয়া তার মধ্যে অন্যতম। তাই শাকিল যত দক্ষই হোন না কেন, শিখর জয় নিশ্চিত নয়।’
অভিযানের সম্পূর্ণ খরচও জোগাড় করতে পারেননি শাকিল। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি ব্যয়বহুল অভিযান। সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে যা সহযোগিতা পেয়েছি, তা পর্যাপ্ত নয়। আরও ২০ লাখ টাকা লাগবে। বিভিন্নভাবে বাকি টাকা সংগ্রহের চেষ্টা করছি।’
শাকিল হিমালয়ের ‘কেয়াজো-রি’, ‘দ্রৌপদী-কা-ডান্ডা-২’, ‘ডোলমা খাং’, ‘হিমলুং হিমাল’ ও ‘দ্য গ্রেট হিমালয়ান ট্রেইল’-এর সাফল্যের পর এখন এভারেস্ট জয়ের পথে। বাংলাদেশ থেকে এভারেস্ট একাধিকবার জয় করা হয়ে গেছে, তারপরও কেন এভারেস্ট জয় করার স্বপ্ন– এমন প্রশ্নের জবাবে ইকরামুল হাসান শাকিল বলেন, ‘আমার কাছে এভারেস্ট ওয়ার্ল্ড কাপের মতো, যা বারবার জয় করা যায়।’
গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বাগচালা গ্রামে শাকিলের জন্ম। ২০১৯ সালে বাবা মো.

খবির উদ্দিনের মৃত্যুর পর সংসারের ভার এসে পড়ে শাকিলের ওপর। সংসার ও পড়াশোনার খরচ চালাতে সুপারশপে বিক্রয়কর্মী হিসেবেও কাজ করেছেন। এই জীবনসংগ্রামের মধ্যেও সৃজনশীল কাজ চালিয়ে গেছেন তিনি। খেলাধুলায় ভালো ছিলেন।
ছোটবেলা থেকেই ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা ছিল শাকিলের। জানান, ‘আমি চাইতাম পত্রিকায় আমার নাম ও ছবি ছাপা হোক। আমি আর দশজন থেকে আলাদা হতে চাইতাম।’ গাজীপুরে ধূমপানের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে কাজ করেছেন তিনি। সেখান থেকেই শুরু। তারপর ২০১০ সালে যোগ দেন পদাতিক নাট্য সংসদ বাংলাদেশে। এই নাট্যদলের হাত ধরেই তাঁর প্রথম ভারতে যাওয়া। ‘নুরু মিয়ার কিচ্ছা’ নামে একটি নাটক লিখেছেন তিনি, তা এখন মঞ্চস্থ করছে পদাতিক।
ক্যামেরার পেছনেও কাজ করছেন তিনি। অনেক টিভি অনুষ্ঠান ও নাটকে সহকারী নির্দেশক হিসেবে কাজ করছেন। আর নিজে এ পর্যন্ত তৈরি করেছেন পাঁচটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। নিজের অভিযানগুলোর অভিজ্ঞতা পাঠককে শোনাতে কলমও ধরেছেন শাকিল। অভিযান নিয়ে তাঁর লেখা বইগুলো হলো, ‘মাউন্ট কেয়াজো-রি শিখরে বাংলাদেশ’, ‘পদচিহ্ন এঁকে যাই’, ‘পর্বতাভিযানে শ্বাসরুদ্ধকর পনেরো ঘণ্টা’, ‘হিমলুং শিখরে’, ‘দোগারি’, ‘গোমতী থেকে হিমালয়’ এবং ‘হেয়ালী ফেরা’ ও ‘দেবী’। সময় পেলে বিভিন্ন আলোচনা সভায় নিজের এগিয়ে যাওয়ার গল্প শোনান শাকিল।
পাহাড় জয়ের আগে শাকিল আলোচনায় আসেন কলকাতা থেকে ঢাকামুখী পদযাত্রা করে। ২০১৩ সালে তিনি কলকাতা থেকে হেঁটে ১১ দিনে ঢাকায় পৌঁছান। তখনই যোগ দেন বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাবে। পর্বতারোহণের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেন ভারত থেকে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো ২০ হাজার ২৯০ ফুট উচ্চতার কেয়াজো-রি পর্বতশৃঙ্গ জয় করতে যান এম এ মুহিতের নেতৃত্বে সাত পর্বতারোহী। তাদের একজন শাকিল। শেষ পর্যন্ত মুহিত, শাকিল ও কাজী বাহলুল শৃঙ্গটি জয় করেন। ২০১৭ সালে লারকে পিক জয়ের অভিযানেও ছিলেন তিনি। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে খুব কাছাকাছি গিয়ে তা জয় করা হয়নি। পরের বছর ভারতের নেহরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেইনিয়ারিং থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণের সময়েই তিনি জয় করেন ‘দ্রৌপদী-কা-ডান্ডা-২’ শৃঙ্গ। ২০১৯ সালে বাংলাদেশসহ পাঁচ দেশের আট পর্বতারোহী ‘হিমলুং’ জয়ের অভিযানে নামেন। সেই দলে অংশ নিয়ে তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হিমলুং-এর চূড়ায় পা রাখেন।
বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাবের সভাপতি এভারেস্টজয়ী এম এ মুহিত বলেন, ‘আমি শাকিলকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। আমাদের প্রতিশ্রুতিশীল পর্বতারোহীদের মধ্য সে সেরা। ও একদিন আমাদেরও ছাড়িয়ে যাবে। আমাদের সবার উচিত শাকিলের পাশে থাকা এবং তাকে উৎসাহ দেওয়া।’
তবে শাকিলের চোখে এখন শুধুই এভারেস্টের হাতছানি। তিনি বলেন, ‘এভারেস্ট আরোহণ আমার স্বপ্ন। এখন শুধু সেই মুহূর্তটির জন্য অপেক্ষা করছি।’ v
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবহ র র টন র কর ছ ন র কর ড ক জ কর আম দ র পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই বিরোধিতা: ৩০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার ‘শাস্তি’

জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিরোধী তালিকায় থাকা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৩০ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত এবং একই অভিযোগে ৩৩ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার বা সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আরো পড়ুন:

আ.লীগে যোগ দেওয়া মুবিনকে আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কার 

ববির ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

সিন্ডিকেট সভা সূত্রে জানা গেছে, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বিরুদ্ধে ভূমিকায় থাকা ইবির ১৯ জন শিক্ষক, ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ‘শাস্তি নির্ধারণ কমিটি’ করবেন উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।

এদিকে একই অপরাধে জড়িত থাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট। যাদের পড়াশোনা শেষ হয়েছে, সেই শিক্ষার্থীদের সনদ বাতিল করা হবে। আর যারা অধ্যয়নরত, তাদের বহিষ্কার করা হবে।

এর আগে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বিরুদ্ধে ভূমিকায় অবতীর্ণ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের চিহ্নিতকরণে গত ১৫ মার্চ আল-হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আকতার হোসেনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে প্রশাসন। 

এই কমিটি প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ, বিভিন্ন তথ্যচিত্র, ভিডিও এবং পত্রিকার খবর পর্যালোচনা করে তালিকায় থাকা শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানবিরোধী এবং নিবর্তনমূলক কার্যকলাপের সংশ্লিষ্টতা পায়।

কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। সর্বশেষ কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট সভায় তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সাময়িক বরখাস্তের তালিকায় থাকা শিক্ষকরা হলেন: ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ ও অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন ও অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. এইচ. এম আক্তারুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. মিয়া রাশিদুজ্জামান।

ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিনসহ আরো রয়েছেন, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহজাহান মণ্ডল ও অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাজেদুল হক, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আফরোজা বানু, আল-ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন।

সাসপেন্ড হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তালিকায় রয়েছেন প্রশাসন ও সংস্থাপন শাখার উপ-রেজিস্ট্রার আলমগীর হোসেন খান ও আব্দুল হান্নান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরের সহকারী রেজিস্ট্রার ও কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুট, একই দফতরের উপ-রেজিস্ট্রার আব্দুস সালাম সেলিম, প্রশাসন ও সংস্থাপন শাখার উপ-রেজিস্ট্রার ড. ইব্রাহীম হোসেন সোনা। 

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শাখা কর্মকর্তা উকীল উদ্দিনসহ তালিকায় নাম রয়েছে ফার্মেসি বিভাগের জাহাঙ্গীর আলম (শিমুল), আইসিটি সেলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জে এম ইলিয়াস, অর্থ ও হিসাব বিভাগের শাখা কর্মকর্তা তোফাজ্জেল হোসেন, তথ্য, প্রকাশনা ও জনসংযোগ দপ্তরের উপ-রেজিস্ট্রার (ফটোগ্রাফি) শেখ আবু সিদ্দিক রোকন এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরের সহকারী রেজিস্ট্রার মাসুদুর রহমানের।

বহিষ্কার ও সদন বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন: ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৩-১৪ বর্ষের বিপুল খান, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৪-১৫ বর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ বর্ষের মেহেদী হাসান হাফিজ ও শাহীন আলম, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের রতন রায়। 

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৪-১৫ বর্ষের মুন্সি কামরুল হাসান অনিকসহ তালিকায় রয়েছেন, মার্কেটিং বিভাগের ২০১৫-১৬ বর্ষের হুসাইন মজুমদার, বাংলা বিভাগের ২০১৬-১৭ বর্ষের তরিকুল ইসলাম।

ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের মৃদুল রাব্বী, ইংরেজি বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের ফজলে রাব্বী, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের শাকিল, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিমুল খান, আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের কামাল হোসেন, ইংরেজি বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের মাসুদ রানা, আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের মেজবাহুল ইসলাম বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের তালিকায় রয়েছেন। 

সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের অনিক কুমার, বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের আব্দুল আলিম, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের বিজন রায়, শেখ সোহাগ ও শাওনও এই শাস্তি পেয়েছেন। 

জুলাই অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করায় শাস্তি পেয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের তানভীর ও শেখ সাদি, সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের মাজহারুল ইসলাম, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের মনিরুল ইসলাম আসিফ, সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের মারুফ ইসলাম, চারুকলা বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের পিয়াস, বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের ফারহান লাবিব ধ্রুব, আল-ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের প্রাঞ্জল, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের নাবিল আহমেদ ইমন।

ফিনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের রাফিদ, লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের আদনান আলি পাটোয়ারি, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের লিয়াফত ইসলাম রাকিব এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের ইমামুল মুক্তাকী শিমুলও শাস্তির তালিকায় রয়েছেন। 

এদিকে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে প্রকাশ্যে বিরোধিতাকারী হিসেবে এই ৬৩ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিলেও তাদের উস্কানিদাতা এবং পেছন থেকে আন্দোলন দমনকারী অনেকেই ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। একই অভিযোগ অভিযুক্তদেরও। তবে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলমান রয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

ঢাকা/তানিম/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই বিরোধিতা: ৩০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার ‘শাস্তি’