মানিকগঞ্জে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করায় যুবদল কর্মী কারাগারে
Published: 17th, March 2025 GMT
মানিকগঞ্জ শহরে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্যের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে ফজলুল করিম নামে যুবদলের এক কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর আজ সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার এজাহার এবং স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহরের যানজট নিরসনে শহীদ রফিক সড়কে একদিকে (ওয়ানওয়ে) যানবাহন চলাচলের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ওই সড়কের উত্তরা ব্যাংকের কাছে রিকশাচালককে উল্টো পথে যেতে বলেন শামীম। এ সময় সেখানে দায়িত্বরত ট্রাফিক কনস্টেবল শাহিন আলম বাধা দেন। এ নিয়ে শাহিন আলম ও শামীমের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শামীম ট্রাফিক পুলিশ শাহীনকে মারধরের হুমকি দেন। পরে ট্রাফিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে শামীমকে আটক করে থানা-পুলিশে সোপর্দ করেন।
এ ঘটনায় গতকাল রাতে ট্রাফিক কনস্টেবল শাহীন আলম বাদী হয়ে মারধর, সরকারি কাজে বাধা ও হুমকির অভিযোগে যুবদল কর্মী শামীমকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন।
জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) আবদুল হামিদ খান বলেন, শামীম নামের এক যুবক দায়িত্বরত ট্রাফিক কনস্টেবলকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও মারধরের হুমকি দেন। এ ঘটনায় ওই যুবককে আটক করে সদর থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।
জেলা যুবদলের সদস্যসচিব তুহিনুর রহমান বলেন, শামীম ফ্রান্স শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতন আন্দোলনে শামীম সক্রিয়ভাবে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। যুবদলে তাঁর পদ না থাকলেও তিনি যুবদলের সক্রিয় কর্মী। তুহিনুর আরও বলেন, ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসায় ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করে রিকশায় চড়ে শামীম দ্রুত বাসায় যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ট্রাফিক কনস্টেবল বাধা দিলে কথা–কাটাকাটি হয়। ভুল–বোঝাবুঝি থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনা ঘটেছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ্ বলেন, দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ, মারধরের হুমকি ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে শামীম নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন এক ট্রাফিক কনস্টেবল। আসামি শামীমকে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ য় ত বরত ট র ফ ক ম রধর য বদল
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।