রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (এআরএসএ বা আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ ওরফে আবু আম্মার জুনুনীসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করার খবরে কক্সবাজারে আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। ওই খবর শোনার পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাঁরা উল্লাস প্রকাশ করেন। তারাবিহর নামাজ শেষে আশ্রয়শিবিরের বিভিন্ন মসজিদে রোহিঙ্গারা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন।

নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করতে গোপন বৈঠকের সময় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ময়মনসিংহে পৃথক অভিযান চালিয়ে আরসার ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাঁদের মধ্যে ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পৃথক দুই মামলায় ৫ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন নারায়ণগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

রোহিঙ্গারা নেতারা জানান, গ্রেপ্তার আতাউল্লাহকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আশ্রয়শিবিরে মজুত রাখা বিপুল ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদের সন্ধান মিলবে। শনাক্ত হবে অস্ত্র ও অর্থের জোগানদাতা। আতাউল্লাহকে গ্রেপ্তারের খবরে আশ্রয়শিবিরে লুকিয়ে থাকা আরসার কয়েক শ সদস্য আত্মগোপনে চলে গেছেন। আরসাকে ঠেকাতে এত দিন মিয়ানমারের আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারেটি অর্গানাইজেশনসহ (আরআরএসও) ১০টির বেশি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনী একাট্টা ছিল। এখন তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে। আশ্রয়শিবিরে খুনখারাবি বেড়ে যেতে পারে। আশ্রয়শিবির থেকে সন্ত্রাসীরা যেন পালাতে না পারেন, সে জন্য তল্লাশিচৌকিতে তৎপরতা বাড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, দুই বছর আগেও আরসাপ্রধান আতাউল্লাহর অবস্থান ছিল পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্যরেখায়। সেখান থেকে মাঝেমধ্যে উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে এসে খুনখারাবিতে লিপ্ত থাকতেন। এক বছর আগে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সংঘাত-লড়াই শুরু হলে তিনি দলবল নিয়ে রাখাইন রাজ্যে গিয়ে আস্তানা গাড়েন। সরকারি বাহিনীর সঙ্গে জোট বেঁধে আরসার সদস্যরা আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়তে থাকেন। দীর্ঘ ১১ মাসের লড়াই সংঘাতের পর ২০২৪ সালের ৭ ডিসেম্বর রাখাইন রাজ্যে মংডু টাউনশিপসহ ৮০ শতাংশ এলাকা (২৭০ কিলোমিটার) দখলে নেয় আরাকান আর্মি। কিন্তু আরসার সঙ্গে আরাকান আর্মির লড়াই বন্ধ হয়নি। মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা বিদ্রোহী গোষ্ঠী ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য আরাকান আর্মি। গত বছরের নভেম্বর থেকে হামলা চালিয়ে রাখাইনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৪টির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে আরাকান আর্মি।

আরও পড়ুনরোহিঙ্গাদের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসার প্রধানসহ ১০ জন নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার১৪ ঘণ্টা আগে

রোহিঙ্গা নেতারা জানান, ২০১৮ সালের দিকে পুরো আশ্রয়শিবিরের নিয়ন্ত্রণ ছিল আরসার হাতে। সাধারণ রোহিঙ্গারাও আরসাকে নানাভাবে সহযোগিতা দিত। কিন্তু রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে বিপাকে পড়ে আরসা। এর ফলে সাধারণ রোহিঙ্গাদের সমর্থন হারাতে থাকে তারা। এখন আরসা আশ্রয়শিবিরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে নানাভাবে চেষ্টা চালাচ্ছিল। আতাউল্লাহসহ আরসার কয়েকজন শীর্ষনেতা গ্রেপ্তারের খবরে আশ্রয়শিবিরে থাকা আরসা সন্ত্রাসীদের মনোবল ভেঙে পড়েছে। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁরা পালানোর চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে আরএসওসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীরা আরসার সন্ত্রাসীদের পালানো ঠেকাতে তৎপরতা চালাচ্ছেন। তাতে আশ্রয়শিবিরে নতুন করে সংঘাত-হানাহানি দেখা দিতে পারে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আতাউল্লাহসহ আরসার ছয়জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরে কক্সবাজারে করা মামলায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনআরসার প্রধান কমান্ডারসহ ৪৯ জনের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা০৫ ডিসেম্বর ২০২৩কক্সবাজারের টেকনাফের বিপরীতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আগুনের কুন্ডলী। গতকাল মঙ্গলবার রাতে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র খ ইন র জ য আর ক ন আর ম ন আর ম র সশস ত র র র খবর সব জ র সদস য আরস র

এছাড়াও পড়ুন:

সুজন নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যকরী কমিটির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত 

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যকরী কমিটির   ২০২৪ -২০২৬  প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার বিকালে সংগঠনের সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েলে’র  সভাপতিত্বে এবং  সাধারণ সম্পাদক আশু আশরাফুলের সঞ্চালনায় আলী আহমদ চুনকা নগর পাঠাগারে প্রানবন্ত এবং আনন্দমুখর পরিবেশে  এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত আলোচনা সভায় উক্ত কমিটির ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের বিভিন্ন বিষয়ে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। আলোচ্য বিষয়সমূহের মধ্যে যে সকল সিন্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো জেলা কমিটির সদস্য সংগ্রহ,উপজেলা কমিটি গঠন,আঞ্চলিক সমস্যার মধ্যে যানজট নিরসন, জলাবদ্ধতা নিরসন,শব্দ দূষণ,  বায়ু দূষণ ও নদী দূষণ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে  বিশেষ ভূমিকা পালন করা সহ আরো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। 

সুজন এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সভাপতির নেতৃত্বে ১২ নভেম্বর সুজনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী যথাযথভাবে ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে  পালন করা হবে।  সকাল ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হতে শোভাযাত্রা এবং  র‌্যালী অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তীতে কেক কাটার মধ্যে দিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হবে। এই সময় সুজনের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহিদুল ইসলাম টিটু, সহ-সভাপতি এম আর হায়দার রানা, অর্থ সম্পাদক রাজলক্ষ্মী, সদস্য এস এম জহিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, সহ কমিটির আরো নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। ‘

আলোচনা শেষে সভাপতি, সকলের সু স্বাস্থ্য কামনা করে অনুষ্ঠান সমাপ্তি  ঘোষনা করেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সোনারগাঁয়ের কাইকারটেক হাটে নির্বাচনী প্রচারণায় মামুন মাহমুদ 
  • রূপগঞ্জে ইসলামী আন্দোলনের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
  • তারুণ্যের চোখে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার
  • বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন না’গঞ্জ জেলা আঞ্চলিক কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত
  • নির্বাচন আসলেই ধর্মকে ব্যবহারের চেষ্টা দেখা যায় : সালাহউদ্দিন আহমেদ
  • ফতুল্লায় গভীর রাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মশাল মিছিল, আটক ৫
  • নারীর মর্যাদা সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নে সিদ্ধিরগঞ্জে মহিলাদলের উঠান বৈঠক
  • সাংবাদিক শাওনের মায়ের মৃত্যুতে বন্দর পেশাদার সাংবাদিক ফোরামের শোক
  • আজাদের নির্দেশে বিশনন্দী ইউনিয়নে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ
  • সুজন নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যকরী কমিটির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত