বরগুনায় প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার সোহান নামের এক আসামিকে থানা থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে উপজেলা মহিলা দলের সভানেত্রীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

পরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। আজ বিকেলে আদালত তাদের জামিন দেন।   

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার মহিলা দলের সভানেত্রী ইসরাত জাহান শিরীন (৪০) ও তার মেয়ে সারজিনা মিম (২৩)। 

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে বরগুনা পৌরশহরের সদর রোড এলাকার মিজান টাওয়ার নামের একটি মার্কেটের সামনে থেকে সোহান নামের প্রতারণা মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে তল্লাশির জন্য থানায় আনা হয়। এর কিছুক্ষণ পরই ইসরাত জাহান শিরিন ও তার মেয়ে সারজিনা মিম থানার অফিস কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় ইসরাত জাহান শিরিন নিজেকে পাথরঘাটা উপজেলা মহিলা দলের সভানেত্রী পরিচয় দিয়ে সোহানকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিশকে হুমকি দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা থানার ভেতরে প্রবেশ করেন। এছাড়াও গ্রেপ্তার সোহানকে থানার হাজতখানায় নিতে নিষেধ করেন তারা। তবে পুলিশ আসামিকে হাজতখানায় নিতে চাইলে, তারা পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে ইসরাত জাহান শিরিন ও তার মেয়ে সারজিনা মিম থানার বারান্দায় দাঁড়িয়ে লোকজন জড়ো করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদেরকে আটক করে পুলিশ।

এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, গতকাল রাতে একটি প্রতারণা মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এ সময় উপজেলা মহিলা দলের সভানেত্রী দাবি করে এক নারী ও তার মেয়ে থানায় প্রবেশ করে। পরে তারা ওই গ্রেপ্তার আসামিকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও জোর জবরদস্তি করে। এ ঘটনায় তাদেরকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী এবং বরগুনার নারী ও শিশু পিপি রঞ্জুআরা শিপু বলেন, থানায় আসামি ছিনিয়ে আনার কোনো ঘটনা ঘটেনি। একটু উচ্চবাচ্য হয়েছে মাত্র। আদালত তাদের জামিন দিয়েছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বরগ ন ইসর ত জ হ ন শ র ন উপজ ল বরগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ 

রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডোরের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় সমকালকে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।

জাতিসংঘ অন্য অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরদার করবে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে যে কোনো মানবিক সহায়তা বা সরবরাহের জন্য প্রথমে দুই সরকারের মধ্যে সম্মতি প্রয়োজন। সীমান্ত অতিক্রম করে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমতি নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা সীমিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রোববার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের ব্যাপারে সম্মত। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’ 

এ খবর চাউর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

তথাকথিত মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কারও সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। রাখাইনের পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, আয়ের কোনো উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্থিতি, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা করছে জাতিসংঘ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ