৭০ বছরের মধ্যে পাকিস্তানের সবচেয়ে ‘বুড়ো’ ক্রিকেটারের টেস্ট অভিষেক হলো আজ
Published: 20th, October 2025 GMT
যে বয়সে বেশির ভাগ ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায়, আসিফ আফ্রিদির গল্পটা শুরু হলো ঠিক সেই বয়সে! শুরুটা যেমন অদ্ভুত, তেমনি ঐতিহাসিক। গত ৭০ বছরে পাকিস্তানের কোনো ক্রিকেটারের এত বেশি বয়সে টেস্টে অভিষেক হয়নি।
৩৮ বছর ২৯৯ দিন বয়সে এসে টেস্ট ক্যাপ হাতে নিলেন বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার আসিফ আফ্রিদি। লাহোরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে স্কোয়াডেও ছিলেন তিনি। তবে একাদশে জায়গা হয়নি। অবশেষে রাওয়ালপিন্ডিতে আজ শুরু হওয়া দ্বিতীয় টেস্টে স্বপ্নটা পূরণ হলো।
পাকিস্তানের ২৬০তম টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হলো আসিফ আফ্রিদির। আর সেই ঐতিহাসিক টেস্ট ক্যাপটি মাথায় পরিয়ে দেন ফাস্ট বোলার শাহিন শাহ আফ্রিদি।
পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে আসিফের চেয়ে বেশি বয়সে টেস্ট অভিষেক হয়েছে দুজনের—একজন অফ স্পিনার মিরান বখশ; আরেকজন আমির এলাহি, যিনি মিডিয়াম পেসের পাশাপাশি লেগ স্পিনও করতেন।
১৯৫৫ সালের জানুয়ারিতে ভারতের বিপক্ষে লাহোরে অভিষেক টেস্টে মাঠে নামার সময় মিরান বখশের বয়স ছিল ৪৭ বছর ২৮৪ দিন! আর ১৯৫২ সালে পাকিস্তানের হয়ে নিজের প্রথম টেস্ট খেলতে নামার সময় আমির এলাহির বয়স ছিল ৪৪ বছর ৪৫ দিন। তবে এলাহির টেস্ট অভিষেক আরও আগে, ১৯৪৭ সালে ভারতের জার্সিতে।
মিরান, এলাহি ও আসিফের পর চতুর্থ স্থানে আছেন পেসার তাবিশ খান। ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩৬ বছর ১৪৬ দিন বয়সে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল তাঁর।
তবে তাঁদের কারোরই টেস্ট ক্যারিয়ার বেশি দূর এগোয়নি।। মিরান বখশের ক্যারিয়ার থেমেছিল দুই টেস্টেই। এলাহি তাঁর ছয় টেস্টের পাঁচটি খেলেছেন পাকিস্তানের হয়ে। তাবিশের অভিষেক ম্যাচটিই হয়ে গিয়েছিল শেষ টেস্ট। আসিফ আফ্রিদির পথ কোথায় গিয়ে থামবে, সেটা সময়ই বলে দেবে। অভিজ্ঞতার ঝুলি তাঁর বড়। দেখা যাক, সেটি তাঁকে কত দূর নিয়ে যায়।
পাকিস্তানের বাইরে এত বেশি বয়সে টেস্ট অভিষেকের নজিরও সাম্প্রতিক কালে খুব একটা নেই। সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল ২০১৮ সালে, আয়ারল্যান্ডের অভিষেক টেস্টে। সেবার মাঠে নামেন এড জয়েস—বয়স ছিল ৩৯ বছর ২৩১ দিন।
মজার ব্যাপার হলো, জয়েস একসময় ইংল্যান্ডের হয়েও খেলেছেন। ২০০৬ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ১৭ ওয়ানডে খেলেছিলেন ইংলিশদের হয়ে। পরে ফিরে যান জন্মভূমি আয়ারল্যান্ডে। দেশ যখন টেস্ট মর্যাদা পেল, তখনই পূরণ হলো তাঁর টেস্ট খেলার স্বপ্ন।
সবচেয়ে বেশি বয়সে টেস্ট অভিষেকের রেকর্ডটা সম্ভবত চিরকালই অক্ষত থাকবে। ১৮৭৭ সালে ইতিহাসের প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের জেমস সাউদারটন খেলেছিলেন ৪৯ বছর ১১৯ দিন বয়সে। এই রেকর্ড ভাঙা এখনকার দিনে প্রায় অসম্ভব।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে সামরিক শক্তি বাড়ানোর ঘোষণা ট্রাম্পের
তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে চীনের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাঁর মিত্রদের সামরিক শক্তি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর প্রশাসনের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলপত্রে এ বিষয়টি উঠে এসেছে।
বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে সংবেদনশীল কূটনৈতিক ইস্যুগুলোর একটি তাইওয়ান। শুক্রবার প্রকাশিত ট্রাম্প প্রশাসনের ওই নথিতে এ ইস্যু নিয়ে ওয়াশিংটন তাদের অবস্থান স্পষ্ট করল।
এমন সময় নথিটি প্রকাশ করা হলো, যখন পূর্ব এশিয়ার জলসীমায় নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামুদ্রিক শক্তি প্রদর্শন করেছে চীন। এর মধ্য দিয়ে দেশটি মূলত গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত তাইওয়ান ও জাপানের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।
নথিতে বলা হয়েছে, ‘সামরিক প্রাধান্য বজায় রেখে তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট যেকোনো সম্ভাব্য সংঘাত এড়ানোই আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার।’
চীন তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে। দ্বীপটিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়োজনে শক্তি ব্যবহার করার কথা কখনোই অস্বীকার করেনি দেশটি। দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় পুরো এলাকা নিজেদের বলে দাবি করে আসছে চীন। এ নিয়ে আশপাশের ছোট ছোট দেশগুলোর সঙ্গে তাদের বিরোধ দীর্ঘদিনের।
ওয়াশিংটনের সঙ্গে তাইওয়ানের আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্রই দ্বীপটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সমর্থক। মার্কিন আইনে তাইওয়ানকে আত্মরক্ষায় সহায়তা দেওয়ার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। এ ইস্যুই বহু বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের একটি বড় অস্বস্তির জায়গা।
চীন তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে। দ্বীপটিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়োজনে শক্তি ব্যবহার করার কথা কখনোই অস্বীকার করেনি দেশটি।ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে প্রণীত ২০১৭ সালের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলপত্রের একটি বাক্যে তাইওয়ানের কথা তিনবার উল্লেখ করা হয়েছিল। আর নতুন কৌশলপত্রে তিনটি অনুচ্ছেদজুড়ে আটবার তাইওয়ানের উল্লেখ আছে। নথিতে বলা হয়েছে, ‘তাইওয়ানকে ঘিরে এত মনোযোগ থাকা স্বাভাবিক।’ বাণিজ্যসমৃদ্ধ জলপথে এর কৌশলগত অবস্থান এবং বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে দ্বীপটির আধিপত্যই এই মনোযোগের প্রধান কারণ।
নথিতে আরও বলা হয়েছে, জাপান থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া পর্যন্ত দ্বীপমালায় যুক্তরাষ্ট্র এমন সামরিক সক্ষমতা গড়ে তুলবে, যা যেকোনো আগ্রাসন প্রতিরোধ করতে পারবে। তবে এককভাবে সবকিছু করা সম্ভব নয়। এ জন্য মিত্রদের এগিয়ে আসতে হবে, ব্যয় বাড়াতে হবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো— সমষ্টিগত প্রতিরক্ষার জন্য আরও বেশি পদক্ষেপ নিতে হবে।
তাইওয়ান নিয়ে উত্তেজনা বাড়লে ট্রাম্প কীভাবে এর প্রতিক্রিয়া জানাবেন, সে বিষয়ে তিনি এখনো পর্যন্ত কিছুই বলেননি। অবশ্য তাঁর আগের মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বারবার বলেছেন, চীন আক্রমণ করলে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে রক্ষা করবে।
আগামী বছরের এপ্রিলে ট্রাম্প বেইজিং সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। সেখানে দুই দেশের নেতারা তাদের মধ্যকার বাণিজ্যিক লড়াই প্রশমিত করার ব্যাপারে আলোচনা করবেন।চুক্তি করার প্রবণতা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার চেষ্টা— এসব কারণে টোকিও থেকে ম্যানিলা পর্যন্ত অনেক দেশে শঙ্কা বাড়ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো তাইওয়ান ও আঞ্চলিক মিত্রদের প্রতি সমর্থন কমাবে।
আগামী বছরের এপ্রিলে ট্রাম্প বেইজিং সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। সেখানে দুই দেশের নেতারা তাদের মধ্যকার বাণিজ্যিক লড়াই প্রশমিত করার ব্যাপারে আলোচনা করবেন।
গত মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি পার্লামেন্টে বলেন, তাইওয়ানে চীনের কোনো হামলা যদি জাপানের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে, তবে জাপান সামরিক প্রতিক্রিয়া জানাবে। এতে বেইজিং তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে।