মহাকাশ থেকে ফেরার পর যেসব কারণে হাঁটতে পারেননি সুনিতা ও বুচ
Published: 21st, March 2025 GMT
আট দিনের জন্য মহাকাশে গিয়ে যাত্রিক ত্রুটির জন্য মহাকাশে ৯ মাস আটকা পড়েছিলেন নাসার দুই নভোচারী। তাদের পৃথিবীতে ফেরার পরে যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, ক্যাপসুল থেকে বের হয়ে এসে স্ট্রেচারে ওঠার মতো কাজও নভোচারীরা একা একা করতে পারছেন না। তাদের অন্যের সহযোগিতা নিতে হয়েছে। সুনিতা ও বুচ তাদের শারীরিক ক্ষমতা অনেক খানি হারিয়ে ফেলেছেন। হারানো ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার জন্য তাদের অনেক শরীরচর্চাসহ নানাবিধ নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে।
মহাকাশে ৯ মাস থেকে পৃথিবীতে ফিরেছেন সুনিতা
আরো পড়ুন:
ঈদের আগে ত্বকের যত্নে এই তিন ঘরোয়া প্যাক ব্যবহার করতে পারেন
ঈদে শিশুকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি, যে বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখবেন
গবেষকরা বলছেন, মানুষের শরীর সাধারণত পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তিতে কাজ করে অভ্যস্ত। কিন্তু নভোচারীদের মহাকাশে ভরহীন অবস্থায় সময় কাটাতে হয়। ফলে পৃথিবীতে ফেরার পরে শরীর খাপ খাওয়াতে অনেক সময় লেগে যায়। শুরুতে তারা ঝিমুনি ভাব অনুভব করতে পারেন। এ ছাড়া শরীরের ভারসাম্য আনা এবং স্বাভাবিকভাবে হাঁটার শক্তি ফিরে পাওয়ার জন্য বেশ কয়েকদিন লেগে যেতে পারে।
সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবদেহ গবেষক অধ্যাপক ডামিয়ান বেইলি বলেন, ‘‘মহাকাশে প্রবেশ করলে মানুষের শরীরে পরিবর্তন আসে। প্রাথমিকভাবে সে অনুভূতিকে অসাধারণ মনে হয়।’’
২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে গিয়েছিলেন নভোচারী টিম পিক। তিনি বলেন, ‘‘মহাকাশে হৃৎপিণ্ডকে ঢিলেঢালাভাবে কাজ করলেই হয়। আবার পেশি ও হাড়গুলোকে বেশি সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হয় না। অসাধারণ শূন্য-মাধ্যাকর্ষণের পরিবেশে মহাকাশকেন্দ্রের চারপাশে মানুষ ভেসে বেড়াতে পারে।’’
মহাকাশে মানুষের হৃৎপিণ্ড ও রক্তনালিগুলোর তেমন কাজ থাকে না। ফলে এই অঙ্গগুলো অলস হয়ে পড়ে। কিন্তু পুরোনো হাড় ভেঙে নতুন হাড় গঠনে ভূমিকা রাখা কোষগুলোর মধ্যে ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। পৃথিবীতে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীতে কাজ করতে গিয়ে এগুলোর ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটে। হাড়গুলো দুর্বল ও বেশি ভঙ্গুর হয়ে যায়।শুধু পেশি আর হাড়ই নয়, মহাকাশে পুরো শরীরেই বদল আসতে পারে।
মহাকাশে থাকাকালে মানুষের শরীরে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়ার ধরন বদলে যায়। শরীরের তরল পদার্থগুলোতে পরিবর্তন আসে। মহাকাশে তরল পদার্থ বুক ও মুখের দিকে ওপরে উঠে যায়। এসব কারণে মহাকাশ থেকে ফেরার পর মানুষের শরীরে প্রথম যে পরিবর্তনটি চোখে পড়ে তা হলো, মুখ ফুলে যাওয়া। মহাকাশে থাকাকালে মস্তিষ্কেও পরিবর্তন আসতে পারে। অপটিক নার্ভ, রেটিনাসহ চোখে বিভিন্ন রকমের পরিবর্তন আসতে পারে। এমনকি চোখের আকারও বদলে যেতে পারে।
শরীরে নানা পরিবর্তনের কারণে মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফেরার পর সহজে শারীরিক ভারসাম্য পান না নভোচারীরা।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ র র পর র জন য ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
৮ বছরেও শুরু হয়নি কুবির ২ বিভাগের কার্যক্রম
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দীর্ঘ ৮ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুটি বিভাগ এখনো চালু হয়নি। অনুমোদন সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিভাগ দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিভাগ দুটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের পরে বিভাগ দুটি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি।
আরো পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কুবি প্রক্টরের জরুরি নির্দেশনা
সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
এছাড়া, তৎকালীন অর্গানোগ্রামে ৩১টি বিভাগের মধ্যে এই দুইটি বিভাগ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা পরবর্তীতে চালু করা নিয়ে জটিলতা তৈরি করে।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করে। ইউজিসি নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অর্গানোগ্রামে বিভাগের অন্তর্ভুক্তি ও নতুন বিভাগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
সে অনুযায়ি ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কুবির ৮৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে পূর্বের ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ এর পরিবর্তে ‘লজিস্টিক্স ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ’ এবং ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’-এর পরিবর্তে ‘পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ নামে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও অর্গানোগ্রামে নতুন আরও ১৮টি বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
তৎকালীন বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তাবক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “২০১৭ সালে অনুমোদন থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রশাসন পাল্টালেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।”
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্তি মানে এখনই চালু হবে না। অনুমোদন থাকলেও তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন ইউজিসি নির্দেশনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তৎকালীন প্রশাসন বলতে পারবে কেন বিভাগ চালু হয়নি। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে আশা করি বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে, তখন নতুন ক্যাম্পাসও প্রস্তুত থাকবে।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী