শেরপুরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা, অভিযোগ শ্রমিক লীগ নেতার বিরুদ্ধে
Published: 23rd, March 2025 GMT
বগুড়ার শেরপুরে আকবর আলী (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের ধড়মোকাম উত্তরপাড়া গ্রামের চারমাথা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আকবর আলীর বাড়ি ধড়মোকাম দক্ষিণপাড়া গ্রামে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ হত্যার সঙ্গে আবদুল লতিফ (২৮) নামের এক যুবক জড়িত। তাঁর বাড়ি ধড়মোকাম উত্তরপাড়া গ্রামে। তিনি শাহবন্দেগী ইউনিয়নের শ্রমিক লীগের সহসভাপতি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে আবদুল লতিফের সঙ্গে আকবর আলীকে একটি চায়ের দোকানে দেখা যায়। রাত ১১টার দিকে ধড়মোকাম সড়কের চারমাথায় দুজনকে ধস্তাধস্তি করতে দেখেন এলাকার কিছু লোক। তাঁরা এগিয়ে এলে লতিফ পালিয়ে যান। এ সময় আকবর আলী রক্তাক্ত অবস্থায় সড়কের ওপরে পড়ে ছিলেন। খরব পেয়ে পরিবারের লোকজন তাঁকে শেরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। হাসপাতালের চিকিৎসক আকবর আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি ধারালো দা, চাদর ও মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির ছেলে মো.
এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশের হেফজতে নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ আজ রোববার বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে একটি দা, চাদর ও মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে। এই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
থমথমে পরিস্থিতিতে এক পক্ষের বিক্ষোভের ডাক
চট্টগ্রামের রাউজানে গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ-গোলাগুলিতে অর্ধশত নেতা-কর্মী আহত হওয়ার ২২ ঘণ্টা পরও মামলা করেনি কোনো পক্ষ। ঘটনার পর থেকে পুরো উপজেলায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ অবস্থায় বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। আজ বুধবার বিকেল চারটায় উপজেলা সদরের মুন্সির ঘাটায় এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে রাউজানের সত্তারঘাট এলাকায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার ও বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান (পদ স্থগিত) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ছররা গুলিতে আহত হন গোলাম আকবর খন্দকার নিজেও। তিনি দাবি করেন, তাঁর গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে গিয়াস উদ্দিন কাদেরের নির্দেশে। এতে দুই পক্ষের অর্ধশত নেতা-কর্মী আহত হন।
সংঘর্ষের পর গতকাল রাতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল রাত আটটার দিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক চিঠিতে কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দেওয়া হয়। জানতে চাইলে বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন উত্তর জেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বেলায়েত হোসেন। এ ছাড়া আরেকটি চিঠিতে স্থগিত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর পদও।
এ ঘটনার পর গোলাম আকবর খোন্দকার পক্ষের লোকজন মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে। দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত থাকায় নতুন করে সহিংসতার আশঙ্কা করছেন উপজেলার বাসিন্দারা।
গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী রাউজান উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি নিজেও আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁর পা ভেঙে দিয়েছেন গিয়াস কাদেরের লোকজন। গোলাম আকবরকেও তাঁরা গুলি করেছেন। তিনি বলেন, তাঁরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আজকের মধ্যে মামলার এজাহার দেওয়া হবে। পাশাপাশি সংবাদ সম্মেলন করে হামলার বিস্তারিত তুলে ধরবেন।
গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী এবং উপজেলা বিএনপির প্রচার বিভাগের আহ্বায়ক কাজী সরোয়ার খান প্রথম আলোকে বলেন, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় আজ বিকেলে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল করবেন। সেখান থেকে অপপ্রচারের জবাব দেওয়া হবে।
ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পক্ষ অপর পক্ষকে দোষারোপ করে স্ট্যাটাস, ছবি ও ভিডিও শেয়ার করছেন বিএনপির দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা। এতে পাল্টা উত্তেজনা ও পুনরায় সহিংস ঘটনা ঘটার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির তৃণমূলের নেতা–কর্মীরা।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া আজ বেলা একটায় প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির দুই পক্ষের হামলা সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো পক্ষ মামলা করেনি। কাউকে গ্রেপ্তারও করা যায়নি। মামলা করলে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।
উল্লেখ্য, রাউজানে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত সহিংসতায় মোট ১৩টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১০টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয় অন্তত শতাধিকবার। তিন শতাধিক মানুষ এসব ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন।