বগুড়ায় বিএনপি নেতার বাড়ি থেকে ১৩ চোরাই গরু উদ্ধার
Published: 23rd, March 2025 GMT
বগুড়ার কাহালু উপজেলার কালাই ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল গফুর শাহর (৪০) বাড়ি থেকে ১৩টি চোরাই গরু উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে উপজেলার কালাই ইউনিয়নের পীলকুঞ্জ ফকিরপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে গরুগুলো উদ্ধার করে নওগাঁ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও আত্রাই থানা–পুলিশ।
উদ্ধার হওয়া গরুগুলোর মধ্যে পাঁচটি গরু আত্রাই উপজেলার নৈদিঘী গ্রামের মোরশেদ আলী শেখের বাড়ি থেকে চুরি করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। নওগাঁ জেলা পুলিশ ও কাহালু থানা–পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৪ মার্চ রাতে আত্রাই উপজেলার নৈদিঘী গ্রামের মোরশেদ আলী শেখের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে আটটি গরু চুরি হয়। এ ঘটনায় আত্রাই থানায় গরু চুরির মামলা হয়।
স্থানীয় একটি সূত্রে জানা যায়, বিএনপির নেতা আবদুল গফুর শাহ রাজনীতির আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে আন্তজেলা গরু চুরি চক্রের সক্রিয় সদস্য।
নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) গাজিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আত্রাই থানায় গরু চুরির ওই মামলায় শনিবার ছোটন প্রামাণিক (২৭ ) নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে আত্রাই থানা-পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছোটন গরু চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিএনপির নেতা আবদুল গফুর শাহর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি পালিয়ে যান। পরে তাঁর বাড়ি থেকে ১৩টি চোরাই গরু উদ্ধার করা হয়েছে। আত্রাইয়ের গরুর মালিক পাঁচটি গরু তাঁর বলে শনাক্ত করেছেন। উদ্ধার হওয়া গরুগুলো নওগাঁ জেলা পুলিশের হেফাজতে আছে। এ ঘটনায় জড়িত আবদুল গফুর শাহকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
অভিযুক্ত বিএনপির নেতা আবদুল গফুর শাহ পলাতক থাকায় এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কাহালু উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক আ খ ম তোফাজ্জল হোসেন অভিযুক্ত আবদুল গফুর শাহর দলীয় পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। তাঁরা বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুস্পষ্ট অভিযোগে কালাই ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল গফুর শাহকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রোববার কাহালু উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলি অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন দিয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ