লেডি বাইকার এশার টার্গেট ছিল বিত্তশালীর স্ত্রী-মেয়ে: পুলিশ
Published: 24th, March 2025 GMT
আলোচিত লেডি বাইকার এশা। যার পুরো নাম ইরিন জাহান এশা। তিনি ও তার চক্রের প্রধান টার্গেট ছিল বিত্তবান ও প্রভাবশালী পরিবারের মেয়ে বা স্ত্রী। তাদের মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে নিজ আয়ত্বে এনে পরিবারের কাছ থেকে বড় অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করতেন এই চক্রের সদস্যরা। পুলিশের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
এক তরুণীকে নির্যাতনের অভিযোগে রবিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে গ্রেপ্তার লেডি বাইকার এশাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। লেডি বাইকার এশা ছাড়াও তার ভাই মো.
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমান বলেন, “বাইকার এশা একটি মেয়েকে বিভিন্ন সময়ে মাদক সেবন করাতেন। গত শনিবার দিবাগত রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই মেয়ের পরিবার তাকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় এশাসহ কয়েকজন অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে মেয়েটিকে টানাহেঁচড়া করেন। একপর্যায়ে ওই মেয়েটি আঘাত পান। পরে শিববাড়ি মোড় এলাকায় ছাত্র-জনতা এবং নৌবাহিনীর দায়িত্বরত একটি টিম তাদের উদ্ধার করে এবং এশাকে আটক করে। সাহরির সময় এশাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রবিবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
আরো পড়ুন:
হিলিতে তেলের লরি খাদে পড়ে নিহত ২
চট্টগ্রামে কোটি টাকার বিদেশি সিগারেট জব্দ, আটক ২
তিনি আরো বলেন, “প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে জানা গেছে, এশাসহ তার চক্রের সদস্যরা প্রফেশনালভাবে প্রভাবশালীর মেয়ে বা স্ত্রীকে টার্গেট করে। তাদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে তাদের মাদক সেবনসহ অনৈতিক কাজে লিপ্ত করে এবং ভুক্তভোগীদের নিজ আয়ত্বে এনে পরিবারের কাছে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করে।”
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ওই তরুণীর বাবা ফ্রান্স প্রবাসী। ১০ বছর ফ্রান্সে থাকাকালীন এশা মামলার বাদীর মেয়ের (১৭) সঙ্গে বান্ধবী সুলভ আচরণ করে দীর্ঘদিন ধরে নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়ে নেশায় আসক্ত করে ফেলে। তিনি বিভিন্ন সময় তার বাসায় ওই তরুণীকে ডেকে নিয়ে মাদকদ্রব্য সেবন করাতেন। তরুণীর বাবা এশাকে একাধিকবার নিষেধ করা সত্ত্বেও তিনি নিষেধ অমান্য করে ওই তরুণীকে ডেকে নিয়ে যেতেন। বাদীর মেয়ে অতিরিক্ত নেশাদ্রব্য সেবন করে তাদের সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ করতেন। এমনকি মাদক সেবন করতে না পারলে বিভিন্ন সময় তিনি বাসার জিনিসপত্র ভাঙচুর করতেন। এ কারণে পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি হতো।
বাদী নিরুপায় হয়ে গত শনিবার (২২ মার্চ) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে আত্মীয়-স্বজনের সহায়তায় মেয়েকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছিলেন। লেডি বাইকার এশাসহ অন্যান্য আসামিরা বাড়ির সামনে থেকে মোটরসাইকেলে তাদের অনুসরণ করতে থাকেন। রাত সোয়া ১২টার দিকে বাংলাদেশ বেতার ভবনের সামনে পৌঁছালে আসামিরা অ্যাম্বুলেন্সের গতিরোধ করেন। এসময় তারা জোর করে অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে প্রবেশ করে বাদীর মেয়ের হাত ও কাপড় ধরে টানাহেঁচড়া করে তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
অ্যাম্বুলেন্সের চালক গাড়িটি চালিয়ে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে পৌঁছান। এসময় গাড়ির ভেতরেই ছিলেন এশা ও তার ভাই। সেখানে বাদীর চিৎকার শুনে নৌ-বাহিনীর সদস্যরা এগিয়ে এসে আসামিদের ও বাদী এবং তার মেয়েকে হেফাজতে নেয়। এরপর নৌ-বাহিনীর সদস্যরা ঘটনার বিষয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানাকে অবগত করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। নৌ-বাহিনীর সদস্যরা আসামিদের পুলিশের কাছে হস্তাস্তর করে এবং মেয়েকে বাদীর কাছে বুঝিয়ে দেন।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার উত্তমপুর গুচ্ছগ্রাম এলাকায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে আদর্শগ্রাম নূরানী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেনের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকালে মাদ্রাসায় কোচিংয়ে পড়তে গেলে শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন ওই শিক্ষার্থীর উপর যৌন নির্যাতন চালান বলে জানিয়েছেন শিশুটির মা।
শিশুটির পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে বৃষ্টি হওয়ায় মাদ্রাসার কোচিংয়ে মাত্র চারজন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়। তাদের মধ্যে দুইজনকে ছুটি দিয়ে দুইজনকে মাদ্রাসায় রেখে দেন শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন। তাদের মধ্যে একজন ছেলে ও ভুক্তভোগী ছিল মেয়ে। শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন ছেলেটিকে কৌশলে মাদ্রাসার রুম ঝাড়ু দিতে পাঠিয়ে দেন। মেয়েটিকে তার কোলের উপর বসিয়ে অশালীন আচরণ করেন। মাদ্রাসার পাশের ভবনের কক্ষ থেকে একটি মেয়ে সেই দৃশ্য দেখে ফেলেন।
আরো পড়ুন:
অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা
বানরের সহযোগিতায় ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচলো শিশু
পরে শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন ওই শিশুকে মাদ্রাসায় তার বিশ্রাম কক্ষে নিয়ে যৌন নির্যাচন চালান। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে তাকে ট্যাবলেট খাইয়ে দিয়ে মুখের ভিতরে কাপড় ঢুকিয়ে আবারো যৌন নির্যাচন চালান। এরপর কক্ষটি তালা দিয়ে অন্যত্র চলে যান। শিশুটি চিৎকার করলে অপর শিক্ষার্থী তালা খুলে তাকে বাইরে বের করে আনে।
এ ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে মাদ্রাসায় ভাঙচুর চালায়। এর আগেও শাহাদাৎ হোসেন কয়েকবার শিশু শিক্ষার্থীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন বলে স্থানীয়রা জানান।
শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পূর্বশত্রুতার জের ধরে তাকে ফাঁসাতে এবং প্রতিষ্ঠানটি শেষ করে দেয়ার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঢাকা/অলোক/বকুল