সাভারে চলন্তবাসে ছিনতাইয়ের অভিযোগ, আটক ৩
Published: 25th, March 2025 GMT
ঢাকার সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলন্তবাসে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করে আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (২৪ মার্চ) রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল ফটক এবং সিএন্ডবি এলাকার মাঝামাঝি জায়গায় ঘটনাটি ঘটে। এসময় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত একজন চিকিৎসা নিয়েছেন।
আটককৃতরা হলেন- শুভযাত্রা বাসের চালক আলী হোসেন, সহকারী মো.
আরো পড়ুন:
ওসমানী মেডিকেল
সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়া নিয়ে ‘কিশোর গ্যাংয়ের’ হামলা, আহত ৩
মুক্তিপণসহ আটক আরএমপির ৫ পুলিশ বরখাস্ত
যাত্রীরা জানান, সাভারের সিটি সেন্টার এলাকা থেকে চার ব্যক্তি বাসটিতে ওঠেন। বাসটি সিএন্ডবি এলাকায় পৌঁছালে ওই ব্যক্তিরা বাসের লাইট বন্ধ করে দিয়ে যাত্রী রবিউল হায়দারকে ছুরি দেখান এবং কাছে যতটাকা আছে তা দিতে বলেন। রবিউল টাকা বের করলে তারা সব টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং রবিউলের হাতে ছুরিকাঘাত করে। পরে ওই ব্যক্তিরা আরো কয়েকজনের কাছ থেকে মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে বাস থেকে নেমে যান।
ঘটনার পর বাসটি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে পৌঁছালে বাসে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থী ও যাত্রীরা বাসটি আটক করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাসের চালক ও সহকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আশুলিয়া থানা পুলিশে সোপর্দ করেন।
ভুক্তভোগী রবিউল হায়দার বলেন, “আমি সাভারের গেণ্ডা এলাকা থেকে বাসে উঠি। ছিনতাইকারীরা বাসে উঠে সরাসরি আমার কাছে এসে ছুরি দেখায় এবং বলে যা টাকা আছে দে। আমি টাকা বের করতে করতে তারা আমার পকেটে হাত দিয়ে ১৪ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং আমার হাতের বাহুতে ছুরিকাঘাত করে। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়েছি।”
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, “ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে একটি বাসে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ছিনতাইকারীরা যাত্রীদের টাকা এবং মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানা পুলিশ বাসের হেলপার ও চালকসহ তিনজনকে আটক করেছে। একইসঙ্গে ছুরিকাঘাতে আহত এক ভুক্তভোগীর জবানবন্দি নিয়েছে। আশা করি, তদন্ত করে দ্রুত ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।”
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন বলেন, “ঘটনাটি সাভার মডেল থানা এলাকার। এ কারণে বাসটি সাভার মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশের কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ নত ই আটক অভ য গ
এছাড়াও পড়ুন:
আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী
রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।
৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।
আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগেতবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।