এক সময় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ‘এক সন্তান নীতি’ কঠোরভাবে অনুশীলন করত চীন। সেই চীন এখন জনসংখ্যা জনসংখ্যা বাড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে নানা ধরনের আর্থিক অনুদান চালু করে বিয়ে ও সন্তান উৎপাদনে উৎসাহ দিচ্ছে বেইজিং। এবার বিয়ের আইনও শিথিল করল শি জিনপিংয়ের প্রশাসন।

পিপলস ডেইলি জানিয়েছে, চীনের বেসামরিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় হুকু-ভিত্তিক (স্থায়ী ঠিকানায়) বিয়ে নিবন্ধনের বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। নতুন আইনের অধীনে, দম্পতিদের আর তাদের হুকু-এর স্থানে বিয়ে নিবন্ধন করতে হবে না। এখন অস্থায়ী ঠিকানাতেও বিয়ে নিবন্ধন করা যাবে।

আরো পড়ুন:

কাদাপানিতেও নিখুঁত কাজ করবে চীনের বুদ্ধিমান ক্যাসন রোবট

চীনের অধরা সংস্কৃতির পুনরুদ্ধারে অদম্য ইয়াং

চীনে এতদিন বিয়ে সরকারিভাবে নিবন্ধন করার জন্য পাত্র ও পাত্রীকে তাদের স্থায়ী ঠিকানায় আইনি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হতো। অর্থাৎ, কারো যদি বাড়ি গ্রামে হয় এবং তিনি চাকরিসূত্রে বেইজিংয়ে থাকেন, তাহলে এতদিন তিনি বেইজিংয়ে বিয়ে নিবন্ধন করতে পারতেন না। তাকে যেতে হতো গ্রামের বাড়িতে। তাতে এক দিকে যেমন সময় যেত, তেমনই যাতায়াতের ভাড়াও গুনতে হতো।

এখন থেকে পাত্র-পাত্রী অস্থায়ী ঠিকানা অর্থাৎ চাকরিসূত্রে কিংবা অন্য কোনো কারণে অস্থায়ীভাবে যেখাবে বসবাস করছেন, সেখানেই আইনি প্রক্রিয়ায় বিয়ে করতে পারবেন।

চীন সরকার মনে করছে, নতুন এই আইনের ফলে সময়, যাতায়াত খরচ ও অন্যান্য বিড়ম্বনা কমবে। এতে চীনা তরুণ–তরুণীরা বিয়েতে আরো আগ্রহী হয়ে উঠবে।

গত এক দশক ধরেই চীনের জনসংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমছে। এর পেছনে রয়েছে বিয়ের সংখ্যা কমে যাওয়া এবং শিশু জন্মহার কমে যাওয়া। চীন সরকারের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে বিয়ের হার কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। শিশু জন্মের হারও ঠেকেছে তলানীতে। এ অবস্থায় জনসংখ্যা বাড়াতে বিয়ে ও সন্তান উৎপাদনে নানাভাবে প্রণোদনা দিচ্ছে চীন সরকার।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জনস খ য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’

নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি। 

৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে। 

আরো পড়ুন:

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা। 

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী। 

উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” 

চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।” 

চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়। 

মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ