প্রায় দেড় যুগ আগে দুদকের করা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাসের রায় দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারি সোহানুর রহমান জানান, এদিন মামলাটি যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ধার্য ছিলো। দুদক এবং আসামিপক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। পরে আদালত রায় ঘোষণা করেন। আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাকে খালাস দেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, এদিন দুদকের পক্ষে মীর আহাম্মদ আলী সালাম যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন। অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে মর্মে তিনি আসামির সর্বোচ্চ সাজা প্রার্থণা করেন। বরকত উল্লাহ বুলুর পক্ষে আমিনুল ইসলাম যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন। অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি মর্মে তিনি বরকত উল্লাহ বুলুর খালাস দাবি করেন। পরে আদালত তাকে খালাসের রায় দেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ৭ জানুয়ারি জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বরকত উল্লাহ, স্ত্রী মিসেস শামীমা আক্তার এবং ছেলে ওমর শরীফ মো.

ইমরান (সানিয়াত) এর বিরুদ্ধে দুদকের তৎকালীন সহকারি পরিচালক মনজুর আলম রমনা মডেল থানায় মামলা করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে অসাধুপায়ে জ্ঞাত আয় বর্হিভূত চার কোটি ৮৯ লাখ ৬১ হাজার ২১১ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জ করেন। দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তিন কোটি ৩৭ লাখ ১৪ হাজার ১১৭ টাকার সম্পদের মিথ্যা তথ্য প্রদান করেন। মামলাটি তদন্ত করে একই বছরের ২০ আগস্ট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা মনজুর আলম।

পরে উচ্চ আদালত বরকত উল্লাহ বুলুর স্ত্রী ও ছেলের মামলা বাতিল করেন। বরকত উল্লাহ বুলুর বিরুদ্ধে আনা ৫৮ লাখ ৪৬ হাজার ৫৬৩ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলার বিচার চলে। ২০১৮ সালের ১৩ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু হয়। বিচার চলাকালে আদালত চার্জশিটভূক্ত ৬৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

বরকত উল্লাহ বুলুর স্ত্রীর বিরুদ্ধে এক কোটি ৯৪ লাখ ৭ হাজার ৮৫৮ টাকা এবং ছেলের বিরুদ্ধে ৮৪ লাখ ৫৯ হাজার ৬৯৬ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ছিল।

ঢাকা/মামুন/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।

‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।

সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।

এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ