গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, পোস্টমাস্টারসহ সাতজনের নামে মামলা
Published: 25th, March 2025 GMT
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় প্রতারণা করে সাত নারী গ্রাহকের ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় পোস্টমাস্টার জসিম উদ্দিনসহ সাতজনের নামে মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (রামগঞ্জ) আদালতে ভুক্তভোগী ফেরদৌসী আক্তার এ মামলা করেন।
বাদীর আইনজীবী আনোয়ার হোসেন মৃধা বলেন, আদালতে বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল ঘটনাটি আমলে নিয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা নেওয়ার জন্য রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ভুক্তভোগী অপর ছয়জন মামলার সাক্ষী।
অভিযুক্ত জসিম রামগঞ্জ উপজেলা ডাকঘরের সাবেক পোস্টমাস্টার। বর্তমানে তিনি নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা ডাকঘরের মাস্টার পদে কর্মরত।
মামলার বাদী ফেরদৌসী আক্তার বিউটি জানান, তিনিসহ সাতজন নারী গ্রাহক ডাকঘরে সঞ্চয়পত্র কিনতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন পোস্টমাস্টার জসিম উদ্দিন ও তাঁর সহযোগী আব্দুর রহিম তাঁদের সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য ব্যাংক এশিয়ায় হিসাব খুলতে বলেন। তাঁদের কথামতো ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি থেকে ভুক্তভোগীরা ব্যাংক এশিয়ায় এজেন্ট উদ্যোক্তা আনোয়ার হোসেনের কাছে মোট ৩৪ লাখ টাকা জমা দেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রথম কয়েক মাস তাঁরা লভ্যাংশ পেলেও পরবর্তী সময়ে তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তাঁরা বিষয়টি জানতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে বুঝতে পারেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন ব্যাংক এশিয়ার চ্যানেল ব্যাংকিং ডিভিশনের জেলা ব্যবস্থাপক নেয়ামত উল্যা, ব্যবসায়িক কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন, রামগঞ্জ উপজেলা ডাকঘরের সাবেক কর্মচারী আব্দুর রহিম, এজেন্ট ব্যাংকের উদ্যোক্তা আনোয়ার হোসেন, তাঁর মেয়ে রুকাইয়া হোসেন ও আত্মীয় মনির হোসেন। এঁদের মধ্যে আনোয়ার হোসেন বর্তমানে একটি চেক জালিয়াতির মামলায় কারাগারে রয়েছেন।
জসিম উদ্দিন বলেন, কাউকে আমি ব্যাংকে তাঁর মাধ্যমে হিসাব খুলতে বলিনি। আনোয়ারকে সমর্থন না করায় তখন তিনি আমার নামে স্থানীয় এমপির কাছে অভিযোগ দেন। এ ছাড়া আমি তাঁর এজেন্ট ব্যাংকের চেক গ্রহণ করতাম না। আমি সরাসরি ব্যাংকের চেক দিতে বললে তিনি দিতেন না। পরে আমি ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের তখনকার রামগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপককেও বিষয়টি জানিয়েছি। আমার ধারণা ছিল আনোয়ার প্রতারণা করবে।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার বলেন, এখন পর্যন্ত আদালতের কোনো নির্দেশনা আমাদের কাছে আসেনি। কপি পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প স টম স ট র র মগঞ জ ব যবস উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
না’গঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের আড়াই কোটি টাকার অনুদান ও সঞ্চয়পত্র প্রদান
জুলাই গণঅভ্যত্থানে আহত ‘সি’ ক্যাটাগরির ২১২ জন জুলাই যোদ্ধাদের মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় প্রদত্ত আর্থিক অনুদানের চেক ও তিন শহীদ পরিবারের সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ আর্থিক অনুদানের চেক ও সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মানিত কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, আহত জুলাই যোদ্ধা ও তাঁদের পরিবার, শহিদ পরিবারের সদস্যগণ, ছাত্র প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমকর্মীরা।
এ সময় ৪ জন শহিদ পরিবারের সদস্যের প্রত্যেককে ১০ লক্ষ টাকা মূল্যমানের সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়। পাশাপাশি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ‘সি’ ক্যাটাগরির ২১২ জন যোদ্ধাকে এককালীন ১ লাখ টাকা করে অনুদানের চেক প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বীর সন্তানরা আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়। তাঁদের সাহসিকতা, আত্মত্যাগ ও অদম্য চেতনা আমাদের জাতি পুনর্গঠনের অনুপ্রেরণা। আমরা বিশ্বাস করি, এই যোদ্ধাদের সাহসিকতা দিয়েই গড়ে উঠবে একটি নতুন, উদ্ভাসিত বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন-অগ্রগতির যাত্রায় আমরা তরুণ সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মী ও সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ কামনা করি। সম্মিলিত প্রচেষ্টাই গড়ে তুলবে একটি সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল নারায়ণগঞ্জ।
এদিকে এ অনুষ্ঠানটি শুধু অনুদান বিতরণ নয়, বরং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মান জানানোর এক অনবদ্য প্রয়াস হয়ে উঠেছিল।