ইফতারের সময় রাজধানীসহ সারা দেশে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। রোজা শেষে কেউ বাসায়, কেউ বা রাস্তায় ইফতার করেন। দরিদ্র, স্বল্প আয়ের ও গৃহহীন মানুষগুলোর ইফতারে জন্য ছোটাছুটি করেন। এদের অনেকেই রোজা থাকেন কিন্তু সবসময় ইফতারের খাবার কপালে জোটে না। তাদের কথা চিন্তা করেই সসকাল সুহৃদ সমাবেশ মহাখালী ইউনিট আয়োজন করেছে ‘পাঁচ টাকায় ইফতার’ কর্মসূচি।
মহাখালী ওয়ারলেস গেট এলাকায় দুস্থ ও পথচারিদের মধ্যে ইফতার বিক্রয় কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সমকাল সুহৃদ সমাবেশ মহাকালী শাখার সভাপতি ও প্রধান সমন্বয়ক আব্দুস সাত্তার, উপদেষ্টা জনাব মকবুল হোসেন, লুৎফুর রহমান, সদস্য আল আমিন বিল্লাল হোসেন নাসির উদ্দিন টিটু প্রমুখ।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকার কয়েকটি ইউনিটের সুহৃদদের মধ্যে তাইম শেখ, ইয়াসিন, আশিকা নিগার, মুহিতুল ইসলাম মুন্না, প্রমুখ কর্মসূচিতে যোগ দেন। আয়োজনের সার্বিক সহযোগিতায় ছিল প্রগ্রেসিভ সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন নামের একটি সামাজিক সংগঠন।
মহাখালীর সুহৃদরা জানান, যাদের জীবন পথেই, পথ চলতে চলতে ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসে, যারা নানা কারণে বাড়ি পৌঁছাতে পারেন না, কিংবা যাদের যাওয়ার কোনো জায়গাই নেই, আবার যারা রোজা রেখেও আর্থিক কারণে ভালো ইফতার করতে পারেন না এমন মানুষদের জন্য এই আয়োজন। এই মানবিক কার্যক্রম প্রতিবছর শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক নয় বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দেয়া উচিত যাতে দুস্থ মানুষ ও পথচারীরা নামমাত্র মূল্যে ইফতার করতে পারেন। এমন আয়োজনে সমাজের বিত্তবান জনগোষ্ঠীর সহযোগিতার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন এবং প্রতিবছর নিয়মিতভাবে করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সুহৃদরা।
রিকশা চাল মোহাম্মদ জামাল বলেন, 'সারাদিন রোজা রেখে রিকশা চালিয়ে যে আয় হয়, তাতে ভালো ইফতারি কেনা সম্ভব হয় না। এখানে মাত্র পাঁচ টাকায় ইফতারির প্যাকেট পেয়ে অনেক ভালো লাগছে।'
আব্দুর রহমান নামে এক শ্রমিক ইফতারের ঠিক আগে বাড়ি ফিরছিলেন। ভাবছিল রাস্তায় কিছুই পাবে না। তিনি জানান হঠাৎ আপনাদের দেখি রোজাদারদের ডাকছেন প্যাকেট হাতে নিয়ে। সামান্য টাকায় ইফতারি প্যাকেট পেয়ে মন ভালো হয়ে গেল।'
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইফত র ব তরণ ত র ণ ব তরণ য় ইফত র ইফত র র
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি।
৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে।
আরো পড়ুন:
দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে
সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।
উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।”
চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।
মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত