আওরঙ্গজেবের সমাধি মহারাষ্ট্রের সীমানার বাইরে ছুড়ে ফেলা হবে কি না, তা নিয়ে এখন আর কারও মাথাব্যথা নেই। মহারাষ্ট্রের রাজনীতি তিন–চার দিন ধরে ঘুরপাক খাচ্ছে কুনাল কামরাকে কেন্দ্র করে। ৩৬ বছর বয়সী এই মুম্বাইবাসী কৌতুকশিল্পীকে ছিঁড়েখুঁড়ে ছারখার করে দিতে কোমর কষে নেমেছে শিবসেনারা। কুনালের অপরাধ, তিনি রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডেকে ‘গাদ্দার’ বা বিশ্বাসঘাতক বলেছেন।

শুধু শিবসেনারাই নয়, কুনালের পেছনে নেমে পড়েছে পুলিশও। মুম্বাই পুলিশের একটা দল কৌতুকশিল্পীর খোঁজে গতকাল মঙ্গলবার অভিযান চালায় তাঁর বাড়িতে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অবিলম্বে তাঁকে থানায় হাজিরা দিতেও বলা হয়েছে। সে জন্য কুনাল এক সপ্তাহ সময় চেয়েছেন। বলেছেন, পুলিশের কাজে সব রকম সহায়তা করবেন। শিবসেনারা হুমকি দিয়েছেন যে তাঁকে দিয়ে জেলের ঘানি তাঁরা টানাবেনই।

রাজনীতিবিদদের নিয়ে নিছকই কৌতুক করেছিলেন দেশের জনপ্রিয় ও বিতর্কিত এই শিল্পী। মুম্বাইয়ে তাঁর সাম্প্রতিক হাস্যকৌতুক অনুষ্ঠানে দর্শক–শ্রোতাদের হাসাতে হাসাতে আচমকাই তিনি গেয়ে ওঠেন হিন্দি সিনেমার এক জনপ্রিয় গান। ১৯৯৭ সালে তৈরি শাহরুখ খান, মাধুরী দীক্ষিত, কারিশমা কাপুর, অক্ষয় কুমার অভিনীত ‘দিল তো পাগল হ্যায়’ সিনেমার গান ‘ভোলি সি সুরত’–এর সুর অবিকৃত রেখে তিনি কথা বদলে দেন।

একনাথ শিন্ডের নাম উল্লেখ না করলেও তিনি যে এলাকার নেতা সেই থানে, তাঁর দাড়িসর্বস্ব মুখ ও রাজনীতিতে আসার আগে তাঁর পেশা (অটোচালক) উল্লেখ করে গানের কথায় শিন্ডেকে তিনি ‘গাদ্দার’ বলে উল্লেখ করেন। বিপত্তি বাধে গোটা অনুষ্ঠানের ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করার পর।

পৌনে এক ঘণ্টার ওই ভিডিওতে নরেন্দ্র মোদি, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতো রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি শিল্পপতি আম্বানি, আনন্দ মাহিন্দ্রাদের নিয়ে ঠাট্টা–মশকরা করে ধর্মান্ধতা, পিতৃতান্ত্রিক সমাজের ভন্ডামির নিদর্শন টেনে কুনাল হঠাৎই ওই জনপ্রিয় গানের প্যারোডি গাইতে শুরু করেন। তাঁর কথায়, সেই গানে তিনি ‘বিকশিত’ ভারতের ছবি এঁকেছিলেন।

কুনাল অনুষ্ঠানের শেষে হাতে তুলে নিয়েছিলেন ভারতের সংবিধানের প্রতিলিপি। লাল ও কালো চামড়ায় বাঁধাই করা যে সংবিধান রাহুল গান্ধী বারবার দেখান, সে রকমই একটি সংবিধান হাতে তুলে কুনাল বলেন, দেশের মানুষকে বাকস্বাধীনতা দিয়েছে এই সংবিধান। এরপরই ভিডিওটি শেষ হয়। ব্যাকড্রপে তখন ফুটে ওঠে—লাইফ বিগিনস হয়্যার ফিয়ার এন্ডস।

তখনো কুনাল জানতেন না যে রাজ্যের শাসকেরা নতুন করে তাঁকে আবার ভয় দেখাতে শুরু করবেন।

অবশ্য নিছক ভয় দেখিয়েই শিন্ডেপন্থী শিবসেনারা ক্ষান্ত হয়নি। হোটেলের যে স্টুডিওতে কুনাল ওই অনুষ্ঠান করেছিলেন, শিবসেনারা সেখানে তাণ্ডব চালায়। ভাঙচুর করে। তছনছ করে দেয় সব। কুনালের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জমা পড়ে।

মহারাষ্ট্রের সরকার চালাচ্ছে বিজেপি, শিবসেনা (শিন্ডে) ও এনসিপি (অজিত পাওয়ার) জোট। মুম্বাই পৌরসভা, বৃহন্মুম্বাই পৌরনিগম বা বিএমসি নামে যা পরিচিত, খড়্গহস্ত হয় তারাও। গত সোমবার ওই স্টুডিও ভাঙতে শুরু করে পৌরসভা। তাদের দাবি, হোটেল কর্তৃপক্ষ বেআইনিভাবে ওই স্টুডিও তৈরি করেছে।

বিতর্কে জড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাডনবিশ ও উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ারও। কুনালকে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ফাডনবিশ বলেছেন, সরকার আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। আইনের ঊর্ধ্বে কেউই নন।

আর যাঁকে নিয়ে ওই প্যারোডি, সেই একনাথ শিন্ডে বলেছেন, ‘কৌতুক আমরাও বুঝি। বিদ্রূপও। কিন্তু সবকিছুর একটা সীমা আছে। সীমা অতিক্রমের সাজা ভুগতে হয়।’

এই বিতর্কে বিজেপি নিজেকে বিশেষ একটা জড়ায়নি। যদিও দলের নেতারা মনে করিয়ে দিয়েছেন, বাকস্বাধীনতার অর্থ এই নয় যে যাকে–তাকে যা খুশি তা–ই বলা যায়।

মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ও তাঁর দল অবশ্য কুনালের পাশে দাঁড়িয়েছে। উদ্ধবের দল ভেঙেই শিন্ডে বিজেপিতে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। সেই থেকে উদ্ধব ঠাকরের চোখে শিন্ডে ‘গাদ্দার’। কুনালের পাশে দাঁড়িয়ে উদ্ধব তাই বলেছেন, বিশ্বাসঘাতক সব সময় বিশ্বাসঘাতকই থাকে। গাদ্দারকে গাদ্দারই বলতে হয়। কুনাল ভুল কিছুই বলেননি।

কুনালও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন। পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন বলে ক্ষমা তিনি চাইবেন না। আদালত বললে চাইবেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরও জানিয়েছেন, ‘ভয়ে কুঁকড়ে থাকার পাত্র আমি নই।’

কুনাল ও বিতর্ক প্রায় সমার্থক। রাজনীতিবিদদের ব্যঙ্গ করেছিলেন বলে ২০১৮ সালে মুম্বাইয়ে তাঁকে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করেছিলেন তাঁর বাড়িওয়ালি। দুবছর পর ২০২০ সালে উড়োজাহাজে সাংবাদিক অর্ণব গোস্বামীকে দেখে তাঁকে তিনি বিতর্কে বসার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। অর্ণবের সাংবাদিকতার সমালোচনা করে তাঁকে তিনি ‘ভীতু’ বলেছিলেন। অর্ণবের ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের পর ইন্ডিগো এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ কুনালকে ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল।

ওই ঘটনার পরদিন ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী হরদীপ পুরীও জানান, এয়ার ইন্ডিয়াও কুনালকে নিষিদ্ধ করছে এবং একই পদক্ষেপ অন্যদেরও নেওয়া উচিত। সেইমতো অন্য দুই বিমান সংস্থা স্পাইসজেট ও গো–এয়ার কুনালকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছিলেন চিত্র পরিচালক অনুরাগ কশ্যপ। তিনি জানিয়েছিলেন যে এর প্রতিবাদে তিনি ইন্ডিগোর ফ্লাইটে চাপবেন না তিনি।

ইন্ডিগোর বিরুদ্ধে ২৫ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে মামলা করেছিলেন কুনাল।

কুনাল ভয় পাননি। শিন্ডে–মন্তব্য থেকে সরেও আসেননি। বরং স্টুডিও ভাঙচুরের ভিডিওর সঙ্গে তৈরি করেছেন আরও এক প্যারোডি। পিট সাইগারের গাওয়া বিখ্যাত ‘উই শ্যাল ওভারকাম’ গানের ভাব নিয়ে হিন্দিতে কবিতা লিখেছিলেন গিরিজা কুমার মাথুর, ‘হাম হোঙ্গে কামিয়াব’। ক্রমেই সেই গান যাবতীয় আন্দোলনের ‘থিম সং’ হয়ে যায়।

কুনাল সেই সুরের ওপর রচনা করেন তাঁর প্যারোডি, ‘হাম হোঙ্গে কাঙ্গাল’। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, স্টুডিওতে তাণ্ডব চালাচ্ছে শিবসেনারা। কুনালের ছবি পোড়াচ্ছে। চেয়ার ভাঙছে। নেপথ্যে বাজছে কুনালের কণ্ঠে সেই গান, ‘হাম হোঙ্গে কাঙ্গাল.

..’।

শাসকের নির্দেশে কুনাল কামরার প্রতিবাদী কণ্ঠ রুদ্ধ হয় কি না, সেই জল্পনার মধ্যে শুরু হয়েছে অন্য তদন্ত। ওই অনুষ্ঠানের পেছনে রাজনৈতিক চক্রান্ত ছিল কি না, আপাতত চলছে সেই অনুসন্ধান। একনাথ শিন্ডের সন্দেহ, তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্তের জন্য কোনো মহল কুনালকে টাকাপয়সা দিয়ে প্ররোচিত করে থাকতে পারে। কুনাল কি বৃহত্তর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অঙ্গ? মুম্বাই পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম খ যমন ত র একন থ শ ন ড কর ছ ল ন অন ষ ঠ ন র জন ত বল ছ ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সকালের সবচেয়ে বরকতময় সময় ব্যবহারের ৭ কৌশল

সকাল মানুষের জীবনের একটি মূল্যবান সময়, যা দিনের বাকি অংশের জন্য সুর নির্ধারণ করে। সকাল আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার, শরীর ও মনকে প্রস্তুত করার এবং দিনের লক্ষ্য অর্জনের একটি সুবর্ণ সুযোগ।

সামাজিক মাধ্যম, কাজের চাপ এবং পারিবারিক দায়িত্ব আমাদের অনেক সময় কেড়ে নেয়, তাই সকালকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে আমরা জীবনকে আরও উৎপাদনশীল করতে পারি।

১. আল্লাহর সঙ্গে দিনের শুরু

ফজরের নামাজের ১৫-২০ মিনিট আগে উঠে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া এবং দোয়া করা জীবনকে আমূল বদলে দিতে পারে। এই সময়টি শান্ত ও পবিত্র, যখন আল্লাহর সঙ্গে কোনো বাধা থাকে না।

কে আছে আমাকে ডাকার, আমি সাড়া দেব? কে আছে আমার কাছে চাওয়ার, আমি দান করব? কে আছে ক্ষমা প্রার্থনা করার, আমি ক্ষমা করব?সহিহ বুখারি, হাদিস: ১,১৪৫

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘প্রতি রাতে, যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ বাকি থাকে, তখন আমাদের রব নিকটতম আসমানে নেমে আসেন এবং বলেন, ‘কে আছে আমাকে ডাকার, আমি সাড়া দেব? কে আছে আমার কাছে চাওয়ার, আমি দান করব? কে আছে ক্ষমা প্রার্থনা করার, আমি ক্ষমা করব?”’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১,১৪৫)।

তাহাজ্জুদের সময় আপনার হৃদয়ের কথা আল্লাহর কাছে প্রকাশ করুন। এতে মানসিক শান্তি বাড়বে এবং দিনের জন্য ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। যদি আপনি নতুন হন, সপ্তাহে এক দিন থেকে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে এটি অভ্যাসে পরিণত করুন।

ফজরের আগে অবশিষ্ট সময়ে কোরআন তিলাওয়াত করুন, কারণ কোরআনে বলা হয়েছে, ‘ভোরে কোরআন পড়া (ফেরেশতাদের) দ্বারা প্রত্যক্ষ করা হয়।’ (সুরা ইসরা. আয়াত: ৭৮)।

আরও পড়ুনইশরাকের নামাজ: সকালের আলোয় আল্লাহর নৈকট্য ০৪ জুলাই ২০২৫২. ফজরের পর ঘুম থেকে দূরে থাকুন

ফজরের নামাজের পর ঘুমিয়ে পড়া অনেকের অভ্যাস, কিন্তু এটি সকালের বরকতময় সময় নষ্ট করে। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ আমার উম্মতের জন্য সকালের সময়কে বরকতময় করেছেন।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৬,৪৮১)।

এই সময়ে বড় বড় কাজ সহজে সম্পন্ন করা যায়, কারণ এতে আল্লাহর বিশেষ বরকত রয়েছে।

আল্লাহ আমার উম্মতের জন্য সকালের সময়কে বরকতময় করেছেন। মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৬,৪৮১

ফজরের পর ঘুমের প্রলোভন এড়াতে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। এই সময়ে পড়াশোনা, কোরআন মুখস্থ করা বা কোনো ব্যক্তিগত প্রকল্পে কাজ করা যায়। এটি দিনের বাকি সময়ে অবসরের জন্য সময় বাঁচায় এবং আগামী দিনে আরও তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তৈরি করে।

বিশ্বের সফল ব্যক্তিরাও ভোর চারটা বা পাঁচটায় উঠে কাজ শুরু করার কথা বলেন, যা তাদের সাফল্যের একটি রহস্য।

৩. করণীয় তালিকা তৈরি করুন

একটি করণীয় তালিকা তৈরি করা দিনের পরিকল্পনাকে সুসংগঠিত করে। আমরা প্রায়ই মনে মনে কাজের পরিকল্পনা করি, কিন্তু মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা সীমিত। একটি ডায়েরি বা ফোনের নোট অ্যাপে কাজের তালিকা লিখে রাখলে সময় ও শক্তি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়। সম্পন্ন হওয়া কাজগুলো তালিকা থেকে কেটে দেওয়ার একটা আলাদা আনন্দ আছে।

এই তালিকায় দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যও অন্তর্ভুক্ত করুন। যেমন কোরআনের একটি নির্দিষ্ট অংশ মুখস্থ করা বা একটি নতুন দক্ষতা শেখার পরিকল্পনা। এটি আপনাকে দিনের শুরুতে ফোকাসড রাখবে এবং উৎপাদনশীলতা বাড়াবে।

আরও পড়ুনযে ৪টি পরীক্ষা নবীজি (সা.)–এর জীবনকে দৃঢ়তা দিয়েছে২২ জুলাই ২০২৫বিশ্বের সফল ব্যক্তিরাও ভোর চারটা বা পাঁচটায় উঠে কাজ শুরু করার কথা বলেন, যা তাদের সাফল্যের একটি রহস্য।৪. সকালে স্ক্রিন থেকে দূরে থাকুন

সকালের মূল্যবান সময় সামাজিক মাধ্যমে বা ফোনে অযথা স্ক্রল করে নষ্ট করা উচিত নয়। অনেকে সকালে ফোন হাতে নিয়ে ‘শুধু একটু দেখে নিই’ ভেবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হারিয়ে ফেলেন। এটি মানসিক চাপ বাড়ায় এবং সকালের শান্তি নষ্ট করে।

নিয়ম করুন, সকালের নাশতা বা কিছু কাজ শুরু না করা পর্যন্ত ফোন বা সামাজিক মাধ্যমে যাবেন না। সকালে খবর পড়া এড়িয়ে চলুন। কারণ, এটি নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে পারে। যখন ফোন ব্যবহার করবেন, তখন ইতিবাচক ও প্রেরণাদায়ক কনটেন্ট দেখুন, যা আপনার দিনকে উজ্জ্বল করবে।

৫. শরীরচর্চা করুন

শরীরচর্চার উপকারিতা আমরা সবাই জানি। বিশেষ করে এই সময়ে, যখন অনেকে বাড়ি থেকে কাজ করছেন, শরীরচর্চা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। বাড়িতে কাজ করার ফলে ঘাড়ে ও পিঠে ব্যথা, পেশির সমস্যা বাড়ছে।

সকালে মাত্র ৩০ মিনিট শরীরচর্চা, যেমন যোগ, পাইলেটস, হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং বা ব্রিস্ক ওয়াক, আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াবে এবং মনকে সতেজ করবে।

ইউটিউবে হাজারো ধরনের ব্যায়ামের ভিডিও পাওয়া যায়, যা বাড়িতে সামান্য জায়গায় করা যায়। যদি বাইরে যাওয়ার সুযোগ থাকে, তবে সকালে ৩০ মিনিট হাঁটুন। লক্ষ্য হলো শরীরকে সচল রাখা এবং শক্তি বৃদ্ধি করা।

আরও পড়ুনসুস্থ জীবন যাপনে মহানবী (সা.)-এর ৯ অভ্যাস২৪ জুলাই ২০২৫সকালে মাত্র ৩০ মিনিট শরীরচর্চা, যেমন যোগ, পাইলেটস, হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং বা ব্রিস্ক ওয়াক, আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াবে এবং মনকে সতেজ করবে।৬. পুষ্টিকর নাশতা গ্রহণ

ব্যস্ততার কারণে অনেকে সকালের নাশতা বাদ দেন, কিন্তু গবেষণা বলছে, পুষ্টিকর নাশতা দিনভর মনোযোগ বাড়ায়, অপ্রয়োজনীয় চিনির লোভ কমায় এবং শক্তি জোগায়। নাশতায় উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার, যেমন ওটস বা মাল্টিগ্রেইন রুটি, স্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন অ্যাভোকাডো বা বাদাম, গ্রিক ইয়োগার্ট এবং ফল অন্তর্ভুক্ত করুন।

সময় কম থাকলে একটি স্মুদি তৈরি করুন—পালংশাক, আপেল এবং হিমায়িত কলা ব্লেন্ড করে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর নাশতা তৈরি করা যায়। এটি দিনের শুরুতে সবুজ শাকসবজি গ্রহণের একটি সহজ উপায়।

৭. নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন

বাড়ি থেকে কাজ করার সময় অনেকে ক্যাজুয়াল পোশাকে থাকেন। বরং সকালে সুন্দর পোশাক পরুন, যা আপনার মেজাজ উজ্জ্বল করবে। একটু পছন্দের সুগন্ধি ব্যবহার করলে আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

আল্লাহ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১

নবীজি (সা) বলেছেন, ‘আল্লাহ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১)। নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা শুধু বাহ্যিক নয়, বরং এটি আপনার মানসিক প্রস্তুতি ও দিনের জন্য উৎসাহ বাড়ায়।

সকাল আমাদের দিনের ভিত্তি। ইসলাম আমাদের শেখায় যে সকাল আল্লাহর বরকত নিয়ে আসে। তাহাজ্জুদ, ফজরের পর জাগ্রত থাকা, করণীয় তালিকা তৈরি, স্ক্রিন থেকে দূরে থাকা, শরীরচর্চা, পুষ্টিকর নাশতা এবং নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন—এই সাতটি অভ্যাস আমাদের সকালকে উৎপাদনশীল করবে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

সূত্র: দ্য মুসলিম ভাইব ডট কম

আরও পড়ুনরহমতের দুয়ারে হাজিরা১৫ জুন ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ