জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর রাজধানীর গুলশান-বাড্ডা এলাকার আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মেহেদী ও রবিন নামের দুটি সন্ত্রাসী গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলছিল। সেই দ্বন্দ্বের জেরে ডিশ ব্যবসায়ী সুমন মিয়াকে হত্যা। মেহেদী গ্রুপের প্রধান মেহেদীর নির্দেশে সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করে বড় সাঈদ। এ কিলিং মিশনে অংশ নেয় পাঁচজনের ‘কিলার গ্রুপ’। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০ মার্চ সুমনের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে তারা।

এ ঘটনার মূল হোতা ওয়াসির মাহমুদ সাঈদ ওরফে বড় সাঈদ এবং কিলার মামুন ওরফে বেলালকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার এসব তথ্য জানায় র‌্যাব। 

সংস্থাটি আরও জানায়, ঘটনার ৮–১০ দিন আগে বড় সাঈদের নির্দেশে বিল্লাল ও মামুনের নেতৃত্বে মেহেদী গ্রুপের ৪–৫ জন সন্ত্রাসী নিয়ে কিলার গ্রুপ গঠন করা হয়। তারা প্রতিদিন সুমনের চলাফেরা পর্যবেক্ষণ করতো। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সাঈদের বাসায় মিটিং করে কিলার গ্রুপ এবং তার বাসা থেকে অস্ত্র নিয়ে গুলশান এলাকায় যায়। ওই রাতে গুলশান-১ পুলিশ প্লাজার সামনে সুমনকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। সুমনের মৃত্যু নিশ্চিত করেই পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।

র‌্যাব ১–এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) সালমান নূর আলম জানান, রাজধানীর গুলশান ও বনানী এলাকার ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ী সুমন মিয়াকে গুলশান-১ পুলিশ প্লাজার সামনে প্রকাশ্যে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর ভুক্তভোগী সুমনকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী পরদিন গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন।

তিনি জানান, মঙ্গলবার র‌্যাব ৮–এর সহযোগিতায় হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা বড় সাঈদকে পটুয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সাঈদ জানান, বেলালসহ আরও কয়েকজন হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়। তার দেওয়া তথ্যমতে ওইদিন রাতেই বেলালকে গাজীপুর টঙ্গী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকি পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার এবং ঘটনায় ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে। 

র‌্যাব ১–এর এ কর্মকর্তা বলেন, বড় সাঈদের মাধ্যমে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে বিগত কয়েক বছর গুলশান ও বাড্ডা এলাকায় চাঁদাবাজি করে আসা মেহেদী। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর মেহেদী পালিয়ে যায়। এরপর তার বাহিনীর সদস্যরা বড় সাঈদের মাধ্যমে ওই এলাকায় চাঁদা আদায় করে আসছিলেন। কিন্তু রবিন গ্রুপের হয়ে সুমন গুলশান–বাড্ডা এলাকায় চাঁদাবাজি শুরু করে। চাঁদাবাজির নিয়ে মেহেদী গ্রুপের সঙ্গে রবিন গ্রুপের সুমনের বিরোধের সৃষ্টি হয়। এতে সুমনকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে সাঈদ।

নিহত সুমনের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায়। তার বাবার নাম মাহফুজুর রহমান। তিনি রাজধানীর ভাষানটেক এলাকায় থাকতেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য স ঈদ র স মন র এল ক য় স মনক ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ। 

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির। 

আরো পড়ুন:

শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪

ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন

পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান,  অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।

গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়। 

তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।

পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”

নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ