নিয়মিত হাঁটতে সঠিক জুতা নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি হাঁটায় আরাম দেয়, পায়ের ব্যথা কমায় এবং আঘাতজনিত সমস্যা প্রতিরোধ করে। সঠিক ওয়াকিং শ্যু বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় বিবেচনা করা উচিত—সঠিক সাইজ: জুতার সাইজ পায়ের আকারের সঙ্গে মানানসই হওয়া উচিত। খুব বেশি টাইট বা বেশি ঢিলেঢালা জুতা পরা উচিত নয়। আঙুলের সামনে কিছুটা জায়গা থাকা উচিত, যাতে হাঁটার সময় চাপ না পড়ে।
জুতার ওজন: হালকা জুতা হাঁটার জন্য বেশি উপযুক্ত। এটি হাঁটার সময় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে না।
সোলের গঠন ও গুণাগুণ
আউটসোল (নিচের অংশ): রাবারের তৈরি জুতা ভালো। এটি ভালো গ্রিপ দেয় এবং পিছলে যাওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। মাটিতে বা রাস্তার সঙ্গে ভালোভাবে খাপ খায় এমন ননস্লিপ ডিজাইন থাকা জরুরি।
মিডসোল (মাঝের অংশ): এটি পায়ে শকের (ধাক্কা বা কম্পন) প্রভাব কমায় এবং আরামদায়ক অনুভূতি দেয়। ইভা (EVA) ফোম বা জেল কুশনপ্রযুক্তি যুক্ত থাকলে দীর্ঘক্ষণ হাঁটার জন্য ভালো।
ইনসোল (ভেতরের অংশ): নরম কুশন থাকা উচিত, যাতে পায়ের তালুতে চাপ কম পড়ে। অর্থোপেডিক ইনসোল থাকলে পায়ের গঠন অনুযায়ী অতিরিক্ত সাপোর্ট দেয়।
অ্যাঙ্কেল ও আর্চ সাপোর্ট: যাঁদের পায়ের তালুর বাঁক বেশি বা কম, তাঁদের জন্য বিশেষ ধরনের আর্চ সাপোর্ট থাকা জরুরি। গোড়ালির জন্য ভালো সাপোর্ট থাকলে দীর্ঘক্ষণ হাঁটার সময় এটি গোড়ালি ও হাঁটুকে সুরক্ষা দেয়।
শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার ক্ষমতা: জুতার ওপরের অংশ এমন উপাদানে তৈরি হওয়া উচিত, যাতে বাতাস চলাচল করতে পারে। জালযুক্ত বা ক্যানভাসের তৈরি জুতা ভালো। এটি ঘাম শোষণ করে এবং পা ঠান্ডা ও আরামদায়ক রাখে। সিনথেটিক লেদারও আরামদায়ক হতে পারে।
হিলের উচ্চতা: জুতার হিল খুব বেশি উঁচু বা নিচু হওয়া উচিত নয়। সাধারণত শূন্য দশমিক ৫ থেকে ১ দশমিক ৫ ইঞ্চি হিল থাকা ভালো, যা হাঁটার জন্য আরামদায়ক হয়। সম্পূর্ণ সমান (ফ্ল্যাট) জুতা ব্যবহার না করাই ভালো।
বাঁকানোর সুবিধা: বাঁকানোর সুবিধা থাকলে সহজে পায়ের আঙুল বাঁকানো যায়। একেবারে শক্ত ও অনমনীয় জুতা হাঁটার জন্য উপযুক্ত নয়।
লেইস বা ভেলক্রো (চিপকানো ফিতা): হাঁটার জুতায় সাধারণত লেইস বা ভেলক্রো থাকা ভালো, যাতে এটি ভালোভাবে পায়ে ফিট হয়। সহজে খুলতে বা পরতে ভেলক্রো স্ট্র্যাপ ভালো বিকল্প হতে পারে, বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য।
স্থায়িত্ব ও গুণগত মান: দীর্ঘস্থায়ী ও ভালো ব্র্যান্ডের জুতা নির্বাচন করা উচিত, যা সহজে নষ্ট হয় না।
প্রয়োজনে বিশেষ জুতা: প্লান্টার ফ্যাসাইটিস বা হিল স্পার থাকলে আর্চ সাপোর্ট ও হিল কুশনযুক্ত জুতা বেছে নেওয়া উচিত। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য নরম ও সেলাইবিহীন ইনসোল থাকা উচিত, যাতে ঘর্ষণজনিত ক্ষত না হয়। ফ্ল্যাটফুট থাকলে বিশেষ ধরনের আর্চ সাপোর্টযুক্ত জুতা ব্যবহার করা উচিত।
এম ইয়াছিন আলী, ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ ও চেয়ারম্যান, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর চ স প র ট ট র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বকাপে জায়গা করতে বিশ্বকাপজয়ীকে কোচের দায়িত্ব দিল ইতালি
দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা যে কতটা গৌরবের আর আনন্দের, সেটা একজন বিশ্বকাপ জয়ের-অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খেলোয়াড়ের চেয়ে আর কে ভালো বোঝাতে পারবেন?
আর এমন ভাবনা থেকেই এবার গানারো গাত্তুসোকে জাতীয় ফুটবল দলের কোচ নিয়োগ দিয়েছে ইতালি। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা করা নিয়ে শঙ্কায় আছে। এর আগে খেলতে পারেনি ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে। টানা তৃতীয় আসর যাতে দর্শক হয়ে না থাকতে হয়, সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী গাত্তুসোকে দায়িত্ব দিয়েছে ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশন এফআইজিসি।
২০২৬ বিশ্বকাপের ইউরোপিয়ান বাছাইয়ে ইতালি খেলছে ‘আই’ গ্রুপে। পাঁচ দলের গ্রুপ থেকে শুধু শীর্ষ স্থানধারী দলই বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করতে পারবে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দল প্লে-অফে খেলার সুযোগ পাবে। এই মুহূর্তে ‘আই’ গ্রুপে ৪ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে নরওয়ে। ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ইসরায়েল। ইতালির অবস্থান তিনে, ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট।
গত সপ্তাহে নরওয়ের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হারার পরই এফআইজিসি কোচ লুসিয়া স্পালেত্তিকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিদায় নিশ্চিতের পরও সোমবার মল দোবার বিপক্ষে ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়ান স্পালেত্তি, ম্যাচটি ইতালি ২-০ ব্যবধানে জেতে।
নরওয়ে নিজেদের প্রথম চার ম্যাচের চারটিতেই জেতায় ইতালি এখন চাপে আছে। হাতে এখনো ৬টি ম্যাচ বাকি। তবে শীর্ষস্থানে থাকতে হলে নিজেদের বাকি সব ম্যাচ তো জিততেই হবে, নরওয়েকেও পয়েন্ট হারাতে হবে। আর এমন জটিল পরিস্থিতির মধ্যেই ইতালি দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন গাত্তুসো।
৪৭ বছর বয়সী গাত্তুসো ২০০০ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ইতালির জাতীয় দলে খেলেছেন। এর মধ্যে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের সেরা পারফরমারদের একজন ছিলেন। সব ম্যাচেই শুরুর একাদশে ছিলেন, পরে জায়গা করে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপের অলস্টার একাদশেও। ২০১৩ সালে সুইজারল্যান্ডের ক্লাব সিওনে খেলোয়াড় কাম কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেন। তখন থেকে গত ১২ বছরে মোট ৯টি ক্লাবের ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন গাত্তুসো। যার মধ্যে আছে নিজের সাবেক ক্লাব এসি মিলান এবং ভ্যালেন্সিয়া ও মার্শেই। সর্বশেষ ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব হাইদুক স্প্লিটের দায়িত্বে ছিলেন, যা গত মাসে পারস্পরিক সমঝোতায় ছেড়ে দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোচ হিসেবে মোট ৩৭৬টি ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়িয়ে গাত্তুসোর জয়ের হার ৪২.৮২ শতাংশ। জিতেছেন ১৬১টিতে, ড্র ১০৮ আর হার ১০৭-এ।
এখন দেখার বিষয়, ইতালি দলে তার সাফল্যের হার কতটা হয়, বিশেষ করে যখন দলের দরকার শতভাগ জয়। ইতালি জাতীয় দল তাদের পরবর্তী ম্যাচ খেলবে ৫ সেপ্টেম্বর এস্তোনিয়ার বিপক্ষে।