ঈদের ছুটিতে কয়েকদিন ধরে একপ্রকার ফাঁকা রাজধানী ঢাকার কাঁচাবাজার। বাজারে সব ধরনের পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক কম ছিল। কেননা চাহিদা ছিল কম। ফলে কাঁচাবাজারের অনেক পণ্য ঈদের আগের তুলনায় কম দরে বিক্রি হয়েছে।
ঈদের পর দ্বিতীয় দিনে গতকাল বুধবার বিভিন্ন বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। ঢাকার কিছু বাজারে সবজির দোকান খোলা দেখা গেলেও বিক্রি একেবারেই কম। শাকসবজির দামও ঈদের আগের তুলনায় কম। মাছ ও মাংসের দোকান অনেক জায়গায় বন্ধ ছিল।
মালিবাগ রেলগেট বাজারের সবজি বিক্রেতা রহিম উদ্দিন জানান, বেশির ভাগ সবজির দাম ঈদের আগের তুলনায় অনেক কম। তার পরও ক্রেতা নেই। সকালে কিছু ক্রেতা থাকলেও দুপুর গড়াতেই বাজার ফাঁকা হয়ে গেছে। রাজধানীর শান্তিনগর বাজার ঘুরে একই চিত্র পাওয়া গেছে। এ বাজারের বিক্রেতা আলতাব হোসেন বলেন, রাজধানীর বহু মানুষ গ্রামের বাড়িতে ঈদ কাটাতে গিয়ে এখনও ফেরেননি। যারা ঢাকায় আছেন, তারা এখনও ঈদের আগে করা বাজারসদাই দিয়ে চলছেন।
আরও কয়েকজন বিক্রেতা জানান, ঈদের আগে যেসব সবজি ৭০ থেকে ১০০ টাকায় কেনাবেচা হয়েছিল, সেগুলো এখন ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে কেনাবেচা হচ্ছে। যেমন– ১০০ টাকা দরের পটোল এখন ৪০ থেকে ৫০ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে। শিম কেনাবেচা হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকায় এবং বেগুন বিক্রি হতে দেখা যায় ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। সবজির পাশাপাশি মুরগির দামও কিছুটা কমেছে। ব্রয়লার মুরগি ঈদের আগে ২৩০ টাকা বা তার বেশিতে কেনাবেচা হয়েছিল। এখন তা ২১০ থেকে ২২০ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে। এদিকে পাড়া-মহল্লার ভ্যানে করে সবজি বিক্রেতার আনাগোনাও কম।
এবার ঈদের আগে সেমাই-চিনিতে স্বস্তি থাকলেও দাম বাড়ে দুধের। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রতি লিটার তরল দুধের প্যাকেট ১০০ টাকা এবং ৫০০ গ্রামের প্যাকেট ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় তরল দুধের দাম লিটারে বেড়েছে ১০ টাকা। গুঁড়া দুধের দামে তেমন হেরফের দেখা যায়নি। অন্যদিকে দাম বেড়ে যায় মাংসের। ঈদের আগে গরুর মাংসের দাম ছিল প্রতি কেজি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ