কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়নের বসুয়ারা গ্রামে সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের বাড়িতে আজ শনিবার হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মুজিবুল হকের বাড়ির বাসিন্দাদের ভাষ্য, ছাত্রশিবিরের নেতা–কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। তবে শিবিরের ভাষ্য, স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।

মুজিবুল হক কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদে আছেন।

মুজিবুল হকের বাড়ির একাধিক বাসিন্দা ও তাঁর ভাতিজা আব্দুল আউয়াল বলেন, আজ সকালে পাশের পদুয়া রাস্তার মাথায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মহিউদ্দিন রনির সঙ্গে মুজিবুল হকের আরেক ভাতিজা আহসান উল্লাহর রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। বিকেলে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জামায়াত-শিবিরের নেতা–কর্মীরা পদুয়া বাজারে মিছিল বের করেন। তাঁরা সেখান থেকে বসুয়ারা গ্রামে মিছিল নিয়ে গিয়ে মুজিবুল হকের বাড়ির দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। কিছু লোক আরেকটি বাড়ির ফটক ভেঙে আব্দুল আউয়ালের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন। এ ছাড়া বাড়ির অন্তত আটটি ঘরের জানালার কাচ ভাঙচুর করেন। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর বাড়ির লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি নুরুল ইসলাম। শনিবার রাতে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মুজিবুল হকের ভাতিজা আহসান উল্লাহর নেতৃত্বে শনিবার সকালে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মহিউদ্দিন রনির ওপর হামলা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন পদুয়া বাজারে। মিছিলটি বসুয়ারা গ্রামে গিয়ে শেষ হয়। এরপর স্থানীয় কিছু বিক্ষুব্ধ মানুষ মুজিবুল হকের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এ ঘটনায় ছাত্রশিবির বা জামায়াতের কোনো নেতা–কর্মী জড়িত নন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে আছেন সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। ওই দিন তাঁর বাড়ির জানালার কয়েকটি কাচ ভাঙচুর করা হয়েছিল।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম জ ব ল হক র ব ড় এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, চালক আটক

ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে রোববার রাতে যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা সড়কের তিনতালাব পুকুর পাড় নামক স্থানে বাসটি আটক করে এবং বাসের ড্রাইভারকে আটক করে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। এসময় বাসের হেলপার পালিয়ে যায়।
 
পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ওই কলেজ ছাত্রী ও ড্রাইভারকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়, ঢাকায় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। রোববার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে উঠেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি যেতে বানিয়াচং যাওয়ার পথে শায়েস্থাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে নামার কথা থাকলেও তিনি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে যান। ফলে বাস তাকে শায়েস্থাগঞ্জে না নামিয়ে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ওই কলেজছাত্রী একটি লোকাল বাসে উঠে। সেই বাসে কয়েকজন যাত্রী ছিল, বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে বাসের চালক ও হেলপার তাকে বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

এ বিষয়ে ওই ছাত্রী জানায়, তিনি ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। তার পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে তিনি ঢাকায় ঈদ করেছে। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি আসেননি এই জন্য আজকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন।

বানিয়াচং থানার সেনাক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা কলেজছাত্রী ও বাস চালককে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছি।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি দুলাল মিয়া জানান, ঘটনার পর বাস চালককে আটক করা হয়েছে এবং হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা লেখার কাজ চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ