দেশে বিনিয়োগ প্রক্রিয়া কতটা সহজ
Published: 8th, April 2025 GMT
কোরিয়ার বিশ্বখ্যাত কোম্পানি ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাং বাংলাদেশে বিদেশিদের বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অতীতে এ দেশের অনেক সরকার সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আনার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেই চেষ্টাই করছে, তবে অত্যন্ত কার্যকর পন্থায়। এই সরকার বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। তাই বাংলাদেশকে ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করার জন্য তিনি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলন উপলক্ষে গতকাল সোমবার চীন, ভারত, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ৬০ জন বিনিয়োগকারী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কোরিয়ান রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (কেইপিজেড) পরিদর্শনে গেলে তাঁদের এই আহ্বান জানান কিহাক সাং। কেইপিজেড পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ইয়াংওয়ান করপোরেশন। পরিদর্শনে যাওয়া বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্য থেকে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি কিহাক সাং–এর কাছে জানতে চান, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা কী? জবাবে কিহাক সাং বলেন, প্রশাসনিক জটিলতা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা। তবে এই বাধা সত্ত্বেও বাংলাদেশ লাভজনক বিনিয়োগের জন্য একটি উত্তম গন্তব্য। এ কারণে তিনি এ দেশে ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ ও ব্যবসা সম্প্রসারণ করছেন বলে জানান।
গতকাল সকালে কেইপিজেডে যাওয়া বিদেশি প্রতিনিধিদের জন্য দুপুরে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এনএসইজেড) পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে তাঁরা বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের কর্মকাণ্ডও ঘুরে দেখেন। পরিদর্শন শেষে নেদারল্যান্ডসের বিনিয়োগ তহবিল এফএমওর জ্যেষ্ঠ ঋণ উপদেষ্টা মার্ক কারম্যান প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগের পূর্বশর্ত হচ্ছে অবকাঠামো–সুবিধা। বাংলাদেশে এ ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। সরেজমিনে সেই অগ্রগতির কিছু নমুনা দেখলাম। এখন বাংলাদেশ বিনিয়োগের প্রক্রিয়াটি সহজ করার মাধ্যমে সম্ভাবনাগুলো বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে পারলে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে।’
মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখার পর বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের ফটোসেশন। গতকাল বিকেলে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি।
৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে।
আরো পড়ুন:
দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে
সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।
উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।”
চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।
মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত