সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানসহ ১৯ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
Published: 8th, April 2025 GMT
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, তাঁর স্ত্রী নাজমা রহমান এবং তাঁদের দুই ছেলের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজম, তাঁর স্ত্রী এবং এক ছেলে ও এক মেয়ের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মাল্টি সিকিউরিটিজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান তারেক ইমাম, তাঁর স্ত্রী ও ছেলে এবং ম্যাক্স ও তমা গ্রুপের পাঁচজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ঘুষ ও বদলি–বাণিজ্যর মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। নজিবুর রহমান, তাঁর স্ত্রী নাজমা রহমান, তাঁদের দুই ছেলে ফুয়াদ এন এ রহমান ও ফারাবী এন এ রহমানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজম, তাঁর স্ত্রী জাহানারা ইয়াসমিন, ছেলে রায়হান আবিদ ও মেয়ে আমেনা আজমের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়, আলী আজমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে হাজার হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।
দুদকের তথ্য বলছে, মাল্টি সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সিইও হাসান তারেক ইমাম, তাঁর স্ত্রী সিলমাত চিশতি ও মেয়ে পিমা ইমামের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
এ ছাড়া ম্যাক্স ও তমা গ্রুপের আতাউর রহমান ভূইয়া, রাসনাত তারিন রহমান, মুকিতুর রহমান, গোলাম মোহাম্মদ ও গোলাম মোহাম্মদের স্ত্রী কানিজ ফাতেমার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তমা গ্রুপ ও ম্যাক্স গ্রুপের পরিচালকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আমদানির নামে ভুয়া এলসি খুলে বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শফি উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী খাদিজা বেগমের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। নাবিল গ্রুপের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামের স্ত্রী ইসরাত জাহানের বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি মাজহারুল ইসলামের স্ত্রী লায়লা খানের নামে থাকা একটি ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?