মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ শিগগিরই সাড়ে ৫ লাখ রোহিঙ্গার নাম যাচাই-বাছাই শুরু করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ খলিলুর রহমান।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে খলিলুর রহমান এ তথ্য জানান।

খলিলুর রহমান জানান, তিনি ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউ থান শিউর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে অগ্রগতি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ প্রত্যর্পণ-উপযুক্ত আড়াই লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে ১ লাখ ৮০ হাজার জনকে চিহ্নিত করেছে। ৭০ হাজার রোহিঙ্গার নাম ও ছবির বিষয়ে কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার আলোচনা চালিয়ে যাবে।

হাই রিপ্রেজেনটেটিভ বলেন, ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ছয়টি ব্যাচে মোট ৮ লাখ রোহিঙ্গার একটি তালিকা মিয়ানমারকে পাঠিয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা বাকি সাড়ে ৫ লাখ রোহিঙ্গার তালিকা যত দ্রুত সম্ভব যাচাই-বাছাই শেষ করবে।

বিমসটেক সম্মেলনের অর্জন সম্পর্কে খলিলুর বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী দুই বছরের জন্য বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর আঞ্চলিক জোটের (বিমসটেক) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন এবং তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) এই সংস্থাকে আরও কার্যকর ও গতিশীল করে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, ‘বিমসটেকের সদর দপ্তর বর্তমানে ঢাকায় অবস্থিত, আমরা আশাবাদী যে সব দেশ মিলে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারব।’

বিমসটেক সদস্যদেশগুলোর মধ্যে বহুল আলোচিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) বিষয়ে অগ্রগতি হয়নি উল্লেখ করে খলিলুর রহমান বলেন, তবে ঢাকা এ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার উদ্যোগ নেবে।

সম্মেলনের সময় সদস্যদেশগুলোর মধ্যে সামুদ্রিক পরিবহন সহযোগিতা-সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে জানান খলিলুর রহমান।

হাই রিপ্রেজেনটেটিভ বলেন, ‘আমরা আশা করছি যে সামুদ্রিক পরিবহন, বন্দর ব্যবস্থাপনা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও জোরদার হবে। সদস্যদেশগুলোর মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি পাবে।’

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে সম্প্রতি বিমসটেক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব মসট ক

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ