মিয়ানমার শিগগিরই সাড়ে ৫ লাখ রোহিঙ্গার নাম যাচাই-বাছাই শুরু করবে: খলিলুর রহমান
Published: 8th, April 2025 GMT
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ শিগগিরই সাড়ে ৫ লাখ রোহিঙ্গার নাম যাচাই-বাছাই শুরু করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ খলিলুর রহমান।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে খলিলুর রহমান এ তথ্য জানান।
খলিলুর রহমান জানান, তিনি ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউ থান শিউর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে অগ্রগতি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ প্রত্যর্পণ-উপযুক্ত আড়াই লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে ১ লাখ ৮০ হাজার জনকে চিহ্নিত করেছে। ৭০ হাজার রোহিঙ্গার নাম ও ছবির বিষয়ে কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার আলোচনা চালিয়ে যাবে।
হাই রিপ্রেজেনটেটিভ বলেন, ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ছয়টি ব্যাচে মোট ৮ লাখ রোহিঙ্গার একটি তালিকা মিয়ানমারকে পাঠিয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা বাকি সাড়ে ৫ লাখ রোহিঙ্গার তালিকা যত দ্রুত সম্ভব যাচাই-বাছাই শেষ করবে।
বিমসটেক সম্মেলনের অর্জন সম্পর্কে খলিলুর বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী দুই বছরের জন্য বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর আঞ্চলিক জোটের (বিমসটেক) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন এবং তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) এই সংস্থাকে আরও কার্যকর ও গতিশীল করে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, ‘বিমসটেকের সদর দপ্তর বর্তমানে ঢাকায় অবস্থিত, আমরা আশাবাদী যে সব দেশ মিলে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারব।’
বিমসটেক সদস্যদেশগুলোর মধ্যে বহুল আলোচিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) বিষয়ে অগ্রগতি হয়নি উল্লেখ করে খলিলুর রহমান বলেন, তবে ঢাকা এ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার উদ্যোগ নেবে।
সম্মেলনের সময় সদস্যদেশগুলোর মধ্যে সামুদ্রিক পরিবহন সহযোগিতা-সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে জানান খলিলুর রহমান।
হাই রিপ্রেজেনটেটিভ বলেন, ‘আমরা আশা করছি যে সামুদ্রিক পরিবহন, বন্দর ব্যবস্থাপনা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও জোরদার হবে। সদস্যদেশগুলোর মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি পাবে।’
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে সম্প্রতি বিমসটেক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব মসট ক
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি।
৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে।
আরো পড়ুন:
দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে
সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।
উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।”
চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।
মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত