অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমানকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে নিয়োগের বিরোধিতা করে বাতিলের দাবি জানিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।

বিবৃতি বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে খলিলুর রহমানের ১ ঘণ্টা ধরে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়। এরপরই তাকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিয়োগ করা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জনগণকে বীতশ্রদ্ধ করে তুলেছে। সরকারকে এ নিয়োগ বাতিল করে বিশ্বাসযোগ্যতার বিষয়ে সন্দেহ দূর করতে হবে।

আরো পড়ুন:

এবারের শোভাযাত্রা সর্ববৃহৎ ও জাঁকজমকপূর্ণ হবে: চারুকলা

মঙ্গল শোভাযাত্রা বাঙালি সংস্কৃতির বিকৃতি : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গিয়ে অজিত দোভালের সরাসরি তত্ত্বাবধায়নে থেকে বাংলাদেশে প্রতিবিপ্লব ঘটানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। এই অজিতের সঙ্গে খলিলুর রহমান গত ৩ এপ্রিল ব্যাংককে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন। তার ওই বৈঠক জুলাই বিপ্লবের আনুগত্য বিরোধী ও জাতীয় নিরাপত্তা পরিপন্থী অসদাচরণ ছিল।

এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট স্পর্শকাতর তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে কি না তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে গত শনিবার জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ বিবৃতি দিয়েছিল। কিন্তু সরকার এ উদ্বেগকে গুরুত্ব তো দেয়ইনি, উল্টো খলিলুর রহমানকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিয়োগ করেছে। এর মধ্য দিয়ে সরকারের অস্বাভাবিক আচরণ প্রকাশ পেয়েছে।

জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের দাবি, সেনাপ্রধানের বিদেশ সফর চলাকালে একজন বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ বেসামরিক ব্যক্তিকে জাতীয় প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট অধিক্ষেত্রের দায়িত্ব প্রদান জুলাই বিপ্লবে ভূমিকা রাখা সেনাবাহিনীকে অবমূল্যায়নের পদক্ষেপ। সেনাবাহিনীকে দুর্বল ও রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্বহীন করার ষড়যন্ত্র হিসেবে তাকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এ অবস্থায় সরকারসহ সবাইকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো অশুভ শক্তির ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিকে এ পদে নিয়োগের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা গোপনীয়তা ফাঁস হয়ে যাওয়া ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার বিষয়ে সতর্ক হতে আহ্বান জানিয়ছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির

আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ‘নির্বাচন বাতিল বা বিলম্বের ষড়যন্ত্র’ রুখে দিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি বলেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে হলে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন সেনপাড়ায় সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তরের সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান এবং সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের এই শাখার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ফেরদৌস আহমেদ।

সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লূনা নূর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোতালেব হোসেন ও মহানগর কমিটির সদস্য রিয়াজ উদ্দিন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী সাজ্জাদ জহির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত চার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে। শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে শ্রমিক, কৃষক, যুব ও নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। বামপন্থীদের সরকার গঠন করতে সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাঁদের নেতৃত্বেই আগামী দিনের ক্ষমতায় লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে।

সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান ছিল, আজ তারাই রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, ব্যবস্থার পরিবর্তনই সময়ের দাবি। কমিউনিস্টরা সেই ব্যবস্থার পরিবর্তনের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আহ্বান জানাই, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। আগামীকাল থেকেই আমরা জাতীয় নির্বাচনের কাউন্টডাউন (ক্ষণগণনা) দেখতে চাই।’

নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু না হলে জনগণের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট ও শোষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামকে জনগণের আন্দোলনে রূপ দেবে।’

সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দেশীয় দোসরদের হাতে দেশের সম্পদ লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এখনো অনিশ্চিত যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না। কারণ, বর্তমান সরকার এখনো সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। জনগণ আজ অর্থনৈতিক সংকট, বৈষম্য ও দুর্নীতির শিকার। একদিকে জনগণের ঘামঝরানো টাকায় দেশ চলছে, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা দেশের সম্পদ লুট করছে। সমুদ্রবন্দর, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগসহ জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: দুলু
  • অদৃশ্য শক্তি ও ফ্যাসিষ্টরা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত খোরশেদ
  • নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির