ঘটনার প্রায় ২ মাস পর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। নগরীর মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার মো. হোচেন আলী নামে এক ভুক্তভোগী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালতে মামলাটি করেন। আদালত বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে খানজাহান আলী থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার মামলা হলেও বিষয়টি জানাজানি হয় শনিবার। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে আগের ঘোষণা অনুযায়ী, কর্তৃপক্ষের নিষেধ উপেক্ষা করে বন্ধ থাকা কুয়েটে আগামীকাল রোববার দুপুর ২টায় শিক্ষার্থীদের ঢোকার কথা রয়েছে। এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।  

মামলায় ২২ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হলেন– কুয়েট শিক্ষার্থী ওমর ফারুক, জাহিদুর, ওবাইদুল্লাহ, মোহন, গালিব রাহাত, তানভীর মাহিন, রায়হান, শেখ মুজাহিদ, সাজ্জাদ ফরহাদ, হিমেল, শোভন, ইছা আনছারী, আবু হাসান খালিদ, ইয়াছিন রোওয়ান, ফজলে রাব্বি, জাহিদুল ইসলাম নায়েল, সাফতি আনছারী, আব্দুর রাহিম মৃধা, আজমাইন ইসরাক অর্ণব, মুজাহিদ, মাহাদি হাসান ও অভি।

বাদী তাঁর অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে তিনি কুয়েট রোড দিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন। পকেট গেটের সামনে গেলে আসামিরা তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে রড ও লাঠি দিয়ে মারধর করে। 

এদিকে শিক্ষার্থীরা কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোববার দুপুর ২টায় বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে ঢুকে হলে উঠার ঘোষণা দিয়ে আসছেন। তা ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও পাল্টা উদ্যোগ নেয়।

কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড.

মুহাম্মদ মাছুদ বলেন, ছাত্রছাত্রীরা যাতে বন্ধ ক্যাম্পাসে না ফেরে  সে ব্যাপারে শিক্ষার্থী অভিভাবকদের বিভিন্নভাবে বোঝানো হয়েছে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (নর্থ) আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, কুয়েট ক্যাম্পাসের দুই গেটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে

১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।

এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ