অভিনয়ে গ্ল্যামার নায়িকা হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু কৌশানী মুখার্জির। বেশ কিছু রোমান্টিক সিনেমায় অভিনয় করে দর্শকের নজর কেড়েছেন তিনি। তারপরও সবসময় চেয়েছেন, ব্যতিক্রমী চরিত্র দিয়ে পরিপূর্ণ অভিনয়শিল্পী হয়ে উঠতে। সেটি সহজ ছিল না। কিন্তু ব্যতিক্রমী গল্প, চরিত্র ছাড়া যে লালিত স্বপ্ন পূরণ হবে না, তা বুঝতেও সময় লাগেনি। সে কারণে এখন সেসব নির্মাতার সঙ্গে কাজ করছেন, যারা পর্দায় তাঁকে নতুনভাবে তুলে ধরার সুযোগ দিচ্ছেন। এভাবে অভিনয় ক্যারিয়ারে বাঁকবদল ঘটেছে বলে স্বীকার করেছেন কলকাতার আলোচিত এই অভিনেত্রী।

সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘‘২০১৮ সালে একটা ভালো ফেজ ছিল। যে সব হিরোর সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে ছিল, তা কিছুটা হলেও পূরণ হয়েছে। তারপর আমি একটা ডাউনফল দেখেছি। বুঝে গেছি, অভিনেত্রী হিসেবে আমার যা চাওয়া, তা এভাবে পূরণ হবে না। তাই কিছুদিন বিরতি নিয়েছি। বছরে একটা হলেও সে কাজটি বেছে নিয়েছি, যেখানে নিজেকে আলাদাভাবে তুলে ধরা যাবে। এ ভাবে এক-দু’বছর কাজ করে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আজ ‘কিলবিল সোসাইটি’-এর মতো সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ এসেছে। এই জার্নি আমাকে শিখিয়েছে, ধৈর্য রাখতে হবে। এই বেস্ট ফেজটা যাতে আরও অনেক দিন টেকে, কারও যেন নজর না লাগে, সেই দিকে এখন খেয়াল রাখতে হবে।’’ 

যেসব নির্মাতার সিনেমায় অভিনয় করে আজকের এই অবস্থান তাদের প্রসঙ্গে কৌশানীর ভাষ্য, ‘‘একেক জনের গল্প উপস্থাপনের ভঙ্গি একেক রকম। তাই নিজ থেকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কখন কোন নির্মাতার সঙ্গে কাজ করলে ক্যারিয়ারের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হবে। যেমন নির্মাতা শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘বহুরূপী’ সিনেমায় দর্শকের কাছে আমাকে একেবারে আলাদাভাবে তুলে ধরেছে। এই সিনেমায় কাজ করা সম্ভব হতো না, যদি না রাজ চক্রবর্তীর ‘আবার প্রলয়’-এর ভিন্নধাঁচের গল্প ও চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেতাম।”

কৌশানীর কথায়, “একইভাবে সৃজিত মুখার্জির ‘কিলবিল সোসাইটি’ সিনেমার গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে কাজের সুযোগ হতো না যদি না ‘বহুরূপী’ আমাকে দর্শকের কাছে নতুনভাবে না চেনাতো। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, ক্যারিয়ারের বাঁকবদলে গুণী নির্মাতাদের অবদান সবচেয়ে বেশি।”

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ