খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। রবিবার (১৩ এপ্রিল) ‍দুপুর ৩টার দিকে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী একসঙ্গে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। এ সময় ফটকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তার শিক্ষার্থীদের বাধা দেননি।

প্রায় ৫২ দিন পর ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান নেন। তারা সেখান থেকে হল খুলে দেওয়ার দাবি জানান।

বিকেল পৌনে ৪টার দিকে শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। শিক্ষকরা তাদের বলেন, সিন্ডিকেটের সভা ছাড়া একাডেমিক কার্যক্রম ও হল খুলে দেওয়া সম্ভব নয়।

আরো পড়ুন:

রাবি ছাত্রীর ভিডিও ধারণ, বহিরাগত দুজনকে পুলিশে সোপর্দ

এসএসসি পরীক্ষা: কুমিল্লায় ছাত্রের চেয়ে ছাত্রী বেশি ২৯ হাজার

এ সময় রোকেয়া হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড.

আশরাফুল আলম, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলাম, ফজলুল হক হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. এবিএম আওলাদ হোসেন, অমর একুশে হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. সালাউদ্দিন আহমেদ, ছাত্র কল্যাণের সহযোগী পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম, সহকারী ছাত্র কল্যাণ পরিচালক রাজন কুমার রাহা, প্রফেসর ড. ফারুক হোসেন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল আজিজ উপস্থিত ছিলেন। 

এর আগে, কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বন্ধ থাকা খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েটে) ক্যাম্পাসে প্রবেশের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। তাদের প্রবেশ ঠেকাতে কুয়েটের ফটকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় কুয়েট প্রশাসন। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। 

আজ দুপুর ২টা থেকেই শিক্ষার্থীরা কুয়েটের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। এসময় শিক্ষকরা সেখানে যান। দুই পক্ষের আলোচনা শেষে আইডি কার্ড যাচাই শেষে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।

ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম ও আবাসিক হলগুলো বন্ধ ঘোষণা করেন কুয়েট কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষার্থীরা গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রবিবার দুপুর ২টায় বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে ঢুকে হলে উঠার ঘোষণা দিয়ে আসছিলেন। তা ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একাধিক সভা, প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি, বিজ্ঞপ্তি জারি ও অভিভাবকদের মোবাইলে এসএমএস দিয়ে শিক্ষার্থীদের কুয়েটে না পাঠানোর অনুরোধ জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, হল বন্ধ থাকায় লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। অনেকের টিউশনিসহ আয়ের উৎস নষ্ট হচ্ছে।

এর আগে কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ বলেন, “শিক্ষার্থীরা যাতে বন্ধ থাকা ক্যাম্পাসে না ফেরে সেজন্য শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদেরকে বিভিন্নভাবে বোঝানো হয়েছে। বিষয়টি বিভাগীয় কমিশনার ও পুলিশ কমিশনারকেও অবহিত করা হয়েছে।”

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বন ধ থ ক

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ