গাইবান্ধায় ফয়জার নেই, আছে তাঁর ‘পোড়া চা’, স্বাদ নিতে আসেন দূরদূরান্তের মানুষ
Published: 14th, April 2025 GMT
‘পোড়া চা’ বানিয়ে সাড়া ফেলেছিলেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার মধ্য রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামের ফয়জার রহমান। ছয় মাস হলো তিনি মারা গেছেন। এখন তাঁর বড় ছেলে সাদেকুল ইসলাম ‘পোড়া চা’ বিক্রি করেন। সঙ্গে যুক্ত করেছেন আরও কিছু স্বাদের চা। ফলে বেচাকেনা বেড়েছে, বেড়েছে আয়রোজগারও।
বিশেষ প্রক্রিয়ায় মাটির কাপ পুড়িয়ে তাতে দুধ, চিনি, চাপাতি মিশিয়ে এই পোড়া চা তৈরি করা হচ্ছে। দূরদূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসছেন এই চায়ের স্বাদ নিতে।
‘পোড়া চা’–এর দোকানটির নাম ‘ফয়জার টি স্টল’। দোকানটির অবস্থান গাইবান্ধা পুলিশ লাইনস-ত্রিমোহিনী সড়ক ঘেঁষে। ২০২০ সালে নিজের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ফয়জার তৈরি করেছিলেন বিশেষ পোড়া চা। এটি ক্রমেই জনপ্রিয় হয়। ফয়জারের ছেলে সাদেকুল বলেন, তাঁর বাবা বেঁচে থাকতে প্রতিদিন দুই মণ দুধের চা বিক্রি করতেন। এখন তিনি প্রতিদিন বিক্রি করছেন ১০ মণ দুধের চা। বাবার সময় প্রতি কাপ পোড়া চা ছিল ১৫ টাকা, এখন সেটার দাম ৩০ টাকা। বাবার খরচ বাদে মাসিক আয় হতো ১০–১৫ হাজার টাকা। তাঁর আয় দাঁড়িয়েছে মাসে ৩৫–৪০ হাজার টাকা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকে।
সম্প্রতি ওই দোকানে গিয়ে দেখা যায়, চা বানাতে ব্যস্ত সাদেকুল। তাঁকে সাহায্য করছেন তাঁর ছোট ভাই সাব্বির (২৫) ও দুই কর্মচারী। দোকানে টানানো ব্যানারে চায়ের দাম দেওয়া আছে। ক্রেতারা পছন্দমতো চা নিচ্ছেন। এক পাশে মাটির তৈরি কাপ বড় সসপ্যানে রেখে আগুন দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে। আরেক পাশে একটি থালার ওপর সারিবদ্ধভাবে সেই পোড়া কাপ রাখা। অন্যদিকে চুলায় রাখা পাতিলে দুধ, চাপাতি আর চিনি দিয়ে তৈরি হচ্ছে চা। সেই চা আগুনে পোড়া কাপে ঢেলে ক্রেতাদের দেওয়া হচ্ছে। দোকানের ভেতরে ও বাইরে বসানো টঙে চা পান করছেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। দীর্ঘ সময় দুধ জ্বাল দেওয়ায় এবং মাটির কাপটি গরম থাকায় চায়ের স্বাদটা ভিন্ন হয়।
চা পান করতে আসা গাইবান্ধা শহরের পলাশপাড়া এলাকার কলেজছাত্র জিসান মাহমুদ বলেন, পোড়া চায়ের গল্প শুনে তিনি এখানে এসেছেন। ভিন্ন নামের এই চা অন্য চায়ের তুলনায় অনেক সুস্বাদু। তিনি জীবনে প্রথম এ ধরনের পোড়া চা খেলেন। গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালি এলাকার ব্যবসায়ী তামজিদুর রহমান জানালেন, তিনি ফেসবুকে পোড়া চায়ের কথা শুনে এখানে এসেছেন।
পলাশবাড়ী উপজেলার মহদিপুর এলাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নিয়মিত এখানে চা খেতে আসি। এখানে চায়ের গুণগত মান ভালো। এই চা খেলে ভালো লাগবে।’
মা সাজেদা বেগম, ছোট ভাই সাব্বির, স্ত্রী ফাতেমা খাতুন, তিন মেয়ে সাদিকা, সুমি ও আদরিকে নিয়ে সাতজনের সংসার সাদেকুলের। একমাত্র বোন রশিদা খাতুনের বিয়ে হয়েছে। সাদেকুলের স্ত্রী বাড়ির কাজের পাশাপাশি দোকানের দুধ জ্বাল করাসহ নানা কাজে সহযোগিতা করেন। ছেলের পরিশ্রমে সংসারের অভাব দূর হয়েছে, এতেই খুশি মা সাজেদা বেগম।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফয়জ র
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইলের ৭ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে টাঙ্গাইলে ৮টি আসনের মধ্যে ৭টিতে বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন। তবে, টাঙ্গাইল-৫ আসনের প্রার্থী পরে ঘোষণা করা হবে।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজার-১ আসনে ধানের শীষের কাণ্ডারী সালাহউদ্দিন
বিএনপির মনোনয়ন পেলেন নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর স্ত্রী
প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন, টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে ওবায়দুল হক নাসির, টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফর রহমান মতিন, টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ারে) আসনে উপজেলা বিএনপির সদস্য রবিউল আউয়াল লাভলু, টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী এবং টাঙ্গাইল-৮ আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পর টাঙ্গাইলের বিভিন্ন স্থানে প্রার্থীর সর্থকদের উল্লাস করতে দেখা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ৮টি আসনের মধ্যে সব আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রার্থী ছিল। এর মধ্যে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে একাধিক প্রার্থী থাকলেও কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল ব্যাপক গণসংযোগে করেছেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের ধারণা ছিলো, টুকু ও ফরহাদের মধ্যে একজন টাঙ্গাইল-৫ আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন।
ঢাকা/কাওছার/রফিক