প্রথমবারের মতো তৈরি হলো মস্তিষ্কের থ্রিডি মানচিত্র
Published: 16th, April 2025 GMT
সায়েন্স ফিকশন কিংবা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনিতে এক সময় দেখা মিলত মস্তিষ্কের ব্যবচ্ছেদ। মানব মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট কয়েকটি টিস্যু বা নিউরন ওলট-পালট করে তাদের কবজা করে নিত কাহিনির নায়ক কিংবা খলনায়করা। এই পুরো বিষয়ের অবতারণা হয়েছিল ব্রেইন ম্যাপিং বা মানব মস্তিষ্কের মানচিত্রকে কেন্দ্র করে।
বিজ্ঞানের এই চরম উৎকর্ষের সময়ে এসে নিজেদের দীর্ঘ পরিশ্রম ও গবেষণায় কল্পনার এ বিষয়কে এবার সত্যি করে দেখিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। একটি ইঁদুরের মস্তিষ্কের ধূলিকণার সমান অংশ ব্যবহার করে তৈরি করা হলো এক ত্রিমাত্রিক মানচিত্র। যে মানচিত্রে দেখা যাচ্ছে নিউরনগুলো কীভাবে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত এবং কীভাবে তারা কাজ করে। খবর সিএনএনের
মাত্র এক ঘনমিলিমিটার মস্তিষ্কের টিস্যুতে বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন ৮৪ হাজার নিউরন এবং ৫০ কোটির বেশি সংযোগ বা সিন্যাপ্স। এই অংশে নিউরনের তারের জাল প্রায় ৫ দশমিক ৪ কিলোমিটার লম্বা, যা নিউইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কের দৈর্ঘ্যের চেয়েও বড়।
২২টি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও ১৫০ জন বিজ্ঞানী মিলে এই বিশাল কাজটি করতে সময় লেগেছে প্রায় ১০ বছর। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ও যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালেন ইনস্টিটিউট ফর ব্রেইন সায়েন্স, বেলর কলেজ অব মেডিসিন এবং প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছে প্রকল্পটি।
প্রথমে গবেষকরা একটি জীবন্ত ইঁদুরকে একটি ছোট ট্রেডমিলে দৌড়াতে দেন এবং তাকে সিনেমার ছোট ছোট ক্লিপ ও ঝুঁকিপূর্ণ খেলাধুলার ভিডিও দেখান। তখন ইঁদুরটির মস্তিষ্ক কীভাবে কাজ করছে, তা রেকর্ড করা হয়। এর পর ইঁদুরকে অচেতন করে তার মস্তিষ্কের অংশকে ২৮ হাজার পাতলা স্লাইসে কেটে ছবিগুলো তোলা হয়। পরে সেই ছবিগুলো কম্পিউটারের সাহায্যে জোড়া লাগিয়ে তৈরি হয় পুরো মানচিত্র।
এ গবেষণায় মোট ১ দশমিক ৬ পেটাবাইট তথ্য পাওয়া গেছে। ২২ বছর ধরে একটানা এইচডি ভিডিও চালানোর সমান এ তথ্য। বিজ্ঞানীরা এরই মধ্যে সবার জন্য উন্মুক্ত করেছেন এসব তথ্য।
পুরো ইঁদুরের মস্তিষ্কের মানচিত্র তৈরি করতে আরও কয়েক বছর লাগবে। মানুষের মস্তিষ্কের পূর্ণ ম্যাপ তৈরি করা এখনও অনেক কঠিন হলেও এ আবিষ্কার সেই লক্ষ্যপানে এক বিশাল পদক্ষেপ।
গবেষকরা বলছেন, এই মানচিত্র ভবিষ্যতে আলঝেইমার, পারকিনসন, অটিজমসহ জটিল মস্তিষ্কজনিত নানা রোগ বুঝতে ও নতুনভাবে গবেষণা করতে সাহায্য করবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে।
আগামী বছরের ১-২৩ মার্চ অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে নারী এশিয়া কাপ। ১২ দলের এই টুর্নামেন্টের ড্র সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ দুপুরে। যেখানে শক্তিশালী গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ।
‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ উজবেকিস্তান, চীন ও উত্তর কোরিয়া। জাঁকজমকপূর্ণ ড্রতে বাংলাদেশ ছিল চার নম্বর প্লটে। সঙ্গী ছিল ইরান ও ভারত। গ্রুপিং ড্রতে টুর্নামেন্টের একমাত্র অভিষিক্ত দল বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপের তৃতীয় দল নির্বাচিত হয়।
পরের রাউন্ডে ‘বি’ গ্রুপের চতুর্থ দল হয় উজবেকিস্তান। এরপর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চীন বাংলাদেশের গ্রুপের দ্বিতীয় দল হয়। সবশেষ দল হিসেবে এই গ্রুপে যুক্ত হয় উত্তর কোরিয়া। যারা ২০১০ সালে প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছিল।
ড্র অনুষ্ঠানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও এএফসি অংশগ্রহণকারী সকল দেশের অধিনায়ক ও কোচকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। প্রথমবার নারী এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের কেউ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি। গতকাল অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কোচ, খেলোয়াড়রা ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন করে হারবার ব্রিজের সামনে। সেখানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ছাড়া, তাইওয়ান,ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল দুর্বার। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ পড়েছিল কঠিন ‘সি’ গ্রুপে, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল বাহরাইন (র্যাঙ্কিং ৯২), তুর্কমেনিস্তান এবং স্বাগতিক মিয়ানমার (র্যাঙ্কিং ৫৫)। র্যাঙ্কিংয়ের বিচারে পিছিয়ে থাকলেও মাঠের পারফরম্যান্সে বোঝার উপায় ছিল না।
প্রথম ম্যাচেই বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ঋতুপর্ণার জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ২-১ ব্যবধানে হারায় মিয়ানমারকে। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকেও ছাড়েনি মেয়েরা। ৭-০ গোলের দাপুটে জয় তুলে নেয় তারা।
এই জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। আগামী বছর মার্চে বসবে টুর্নামেন্টের ২১তম আসর, যেখানে খেলবে ১২টি দেশ।
ঢাকা/ইয়াসিন