কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মিডিয়া ল্যাবে সরঞ্জাম ঠিকমতো বুঝে না পেয়েও পুরো বিল পরিশোধের অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মিডিয়া ল্যাবের দরপত্র পায় ফুয়ানা ইনফো নামে একটি কোম্পানি। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৩ সালে ফুয়ানা ইনফো টেক লিমিটেডের কাছ থেকে ২৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকার ২৯ ধরনের সরঞ্জাম কিনেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। সম্প্রতি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ ল্যাবের কাজ শুরু করলে সেখানে দুটি ট্রাইপড ও ভিডিও এডিটিং পিসির কেবল পাওয়া যায়নি, যার আনুমানিক মূল্য দেড় লাখ টাকা। তবে কোম্পানির রিসিভ কপির তথ্য অনুযায়ী, এসব সরঞ্জাম বুঝিয়ে দিয়েছে তারা। এদিকে সরঞ্জাম না পেয়েও বিল পরিশোধের সুপারিশ করেছিলেন বিভাগটির তৎকালীন চেয়ারম্যান ও ল্যাব স্থাপন কমিটির আহ্বায়ক কাজী এম.
জানতে চাইলে ল্যাব স্থাপন কমিটির সদস্য এএমএম সাইদুর রসিদ বলেন, ট্রাইপড না পাওয়ার বিষয়টি কমিটির আহ্বায়ককে জানানো হয়। তাঁর সম্মতিতেই রিসিভ কপিতে স্বাক্ষর করেন তিনি।
রিসিভ কপিতে স্বাক্ষর রয়েছে ল্যাব স্থাপন কমিটির আহ্বায়ক কাজী এম. আনিছুল ইসলামেরও। তবে অস্বীকার করেছেন তিনি। এ ব্যাপারে কাজী এম. আনিছুল ইসলাম বলেন, তিনি দায়িত্ব ছাড়ার আগে সব বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু বর্তমান বিভাগীয় চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসানের দাবি, তিনি সব সরঞ্জাম বুঝে পাননি।
ফুয়ানা ইনফোর প্রজেক্ট ম্যানেজার মোফাজ্জল হোসেন জানান, তিনবারে সরঞ্জাম ডেলিভারি দিয়েছেন তারা। সরঞ্জাম পাঠানোর আগে কয়েকবার চেক করে দেখেছেন, কোনো কিছু বাকি আছে কিনা। আবারও কাগজপত্র যাচাই করে দেখা হবে।
বিভাগের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমরা কোম্পানিকে জানিয়েছি, তবুও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যমুনা সেতুর যানজট এড়াতে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে যানবাহনের চাপ
ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরতি পথে যমুনা সেতু-সংলগ্ন মহাসড়কে তীব্র যানজট। তাই অনেকে পাবনার কাজীরহাট ফেরিঘাট দিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন। কাজীরহাট-আরিচা ফেরিঘাটে ভোগান্তি ছাড়াই যানবাহন পারাপার হচ্ছে। আগের ৪টি ফেরির সঙ্গে আরও ২টি যুক্ত হওয়ায় এই নৌপথে মোট ৬টি ফেরি চলাচল করছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) ও বাস কাউন্টারগুলোর সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে যমুনা সেতু-সংলগ্ন সড়কে যানজট শুরু হয়। শুক্র ও গতকাল শনিবার যানজট তীব্রতর হয়। এর মধ্যে শনিবারের যানজটে পাবনা-ঢাকা পথে যাতায়াতকারী অনেক বাস আটকে পড়ে। এতে পাবনা, বেড়াসহ বিভিন্ন বাস কাউন্টারে ঢাকাগামী বাসের সংকট দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকাগামী বাস ও ব্যক্তিগত ছোট গাড়িগুলো যমুনা সেতুর যানজট এড়াতে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথের ফেরি পারাপার বেছে নেয়। এতে আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত কাজীরহাট ফেরিঘাটে ঢাকাগামী বিভিন্ন যানবাহনের চাপ আছে।
বিআইডব্লিউটিসির কাজীরহাট ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘আগে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে ৪টি ফেরি চলাচল করত। ঈদ উপলক্ষে এখন আরও ২টি ফেরি বাড়িয়ে মোট ৬টি ফেরি করা হয়েছে। এগুলো হলো ২টি রো রো ফেরি শাহ আলী ও বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান এবং ৪টি সেমি রো রো ফেরি বাইগার, গৌরী, চিত্রা ও ধানসিঁড়ি। এই ৬টি ফেরি দিয়ে নির্বিঘ্নে যানবাহনের চাপ সামলানো যাচ্ছে। বাসসহ যানবাহনগুলোকে ফেরিঘাটে বেশি দেরি করতে হচ্ছে না।’
কাজীরহাট ফেরিঘাট হয়ে ঢাকামুখী আলহামরা পরিবহনের যাত্রী আবু হানিফ বলেন, ফেরিতে ওঠানামা মিলিয়ে আড়াই ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে। আর আরিচা থেকে ঢাকা পর্যন্ত তেমন যানজট ছিল না। খুব ভালোভাবে ঢাকা পৌঁছাতে পেরেছেন। অথচ আরও দুই ঘণ্টা আগে রওনা দিয়েও তাঁর পরিচিত একটি পরিবারকে যমুনা সেতু-সংলগ্ন সড়কে ৫-৬ ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়।
বিআইডব্লিউটিসির কাজীরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। তবে সবচেয়ে বেশি চাপ ছিল শনিবার। আমাদের বেশ বেগ পোহাতে হলেও যানবাহনগুলো ভালোভাবে পার করে দিয়েছি। শনিবার আমাদের এই ঘাট হয়ে ফেরিতে ১০১টি বাস, ৪০১টি ছোট গাড়ি ও ৮০টি ট্রাক পার হয়েছে। আর আজ রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৫টি বাস, ১৬টি ট্রাক, ৪২টি ছোট গাড়ি ও ২০০টি মোটরসাইকেল পার হয়েছে।’
বেড়া ও ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী আলহামরা পরিবহনের বেড়া শাখার ব্যবস্থাপক বরকত আলী বলেন, ‘যমুনা সেতুর যানজটে আমাদের কয়েকটি বাস এখনো আটকে আছে। এতে নির্ধারিত সময়ে শুধু আমাদের বাসই নয়, অন্য কোম্পানির বাসগুলোও ঢাকার উদ্দেশে ছাড়তে পারছে না। আর কোনো বাস ঢাকা থেকে বেড়া এসে পৌঁছানোর পর সেই বাস এখন থেকে আমরা কাজীরহাট ফেরিঘাট হয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে দিচ্ছি। বতর্মান অবস্থায় এই পথে যাতায়াতে যাত্রীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন।’