১৯ বছর পর বোদা উপজেলা বিএনপির সম্মেলন
Published: 19th, April 2025 GMT
ঢাক-ঢোলের সঙ্গে নেচে, গেয়ে, আনন্দ আর শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ১৯ বছর পর পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে বোদা মডেল পাইলট সরকারি স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়।
এর আগে, উপজেলার ১০ ইউনিয়নের নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা ব্যান্ড পার্টির সঙ্গে শোভাযাত্রা নিয়ে মাঠে উপস্থিত হলে সেখান থেকে এক আনন্দ মিছিল বের করে। পরে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়।
আরো পড়ুন:
জেলা প্রশাসক পদায়নে ৩ কোটি টাকা ঘুষের অভিযোগ
একটি মহলের ষড়যন্ত্রের অংশ: নওগাঁর ডিসি
খুলনার জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহার দাবিতে মানববন্ধন
বোদা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আসাদুল্লাহ আসাদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, বিএনপির রংপুর বিভাগের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, রংপুর বিভাগের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুর রহমান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন, ‘‘বোদা উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দুপুরে প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছে। আজকের দিনটি বোদাবাসীর কাছে স্মরণীয় দিন। আমরা আনন্দ উৎসব ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সম্মেল শুরু করেছি। আজকের এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আমরা বোদাবাসীকে একটা মেসেজ দিতে চাই, আজকে বোদা উপজেলা বিএনপি যেমন তাদের নিয়ম শৃঙ্খলা ওয়ার্ড পর্যায় থেকে শুরু করে নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে গতিশীল হয়েছে। এই গতিশীলের মধ্য দিয়ে যে নেতৃত্ব আসছে, তা থেকে আমরা আজ এই সম্মেলনে সবাই উপস্থিত হতে পেরেছি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যেভাবে আজকে সংগঠনকে এগিয়ে নিচ্ছে, তারই একটি বহিঃপ্রকাশ আজকের এই সম্মেলন।’’
অন্য বক্তারাও দলীয় কার্যক্রম আরো গতিশীল করতে প্রথম অধিবেশনে তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত ব্যক্ত করেন।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন সন্ধ্যায় শুরু হলে ৭১০ জন ডেলিগেট তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করবেন। এ সময় নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন খলিলুর রহমান খলিল, সহকারী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে থাকবেন জাকির হোসেন, মিনহাজ। দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে বিকেলে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।
সর্বশেষ ২০০৬ সালে বোদা উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হয়। নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি পার করে দীর্ঘ ১৯ বছর পর বোদা উপজেলা শাখার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন হচ্ছে।
ঢাকা/নাঈম/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
দোয়ার ফজিলত ও আদব
দোয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা বা প্রার্থনা করা। পরিভাষায় দোয়া হলো কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার রোধে মহান আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৩)
আল–কোরআনের বর্ণনা, ‘আর তোমাদের রব বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬০)
মুমিনের পরিচয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কী কী চোখজুড়ানো প্রতিদান লুকায়িত আছে।’ (সুরা-৩২ সাজদা, আয়াত: ১৬-১৭)
‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১)দোয়া ও আমল কবুল হওয়ার মূল শর্ত হলো ইখলাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তাঁকে ডাকো খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে।’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎ কাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১) ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পাক পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৭৩)
নবীজি (সা.) বলেন, ‘উষ্কখুষ্ক ধুলায় ধূসরিত অবস্থায় দীর্ঘ সফরকারী একজন যে স্বীয় দুই হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করে বলে, “হে প্রভু! হে প্রভু!” অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং সে হারাম দ্বারা লালিত, তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম: ১৬৮৬)
নির্জনে নীরবে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫)। ‘পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহ্বান করো ভয় ও আশাসহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫-৫৬)
দোয়ার আদব হলো দৃঢ়সংকল্প ও আকুতির সঙ্গে দোয়া করা, দোয়া কবুলে প্রবল আশাবাদী হওয়া।
হজরত জাকারিয়া (আ.) তাঁর দোয়ায় বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার কাছে দোয়া করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪) হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘আশা করি, আমার প্রতিপালকের নিকট দোয়া করে আমি বিফল হব না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪৮)
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]