পহেলা মে থেকে সারাদেশে ডিম ও মুরগির খামার বন্ধ রাখার ঘোষণা প্রত্যাহার করেছে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।

সোমবার বিকেলে সংগঠনের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, সোমবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ছাড়াও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ (ডিজি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) নেতৃবৃন্দ ও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ১০ থেকে ১২ জন প্রান্তিক ডিম ও মুরগি উৎপাদনকারী খামারিদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে অধিদপ্তরের ডিজি খামারিদের ১০ দফা দাবি ও বাস্তব সমস্যা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

এদিন সভায় বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) পক্ষ থেকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডিজিকে ‘শাহরুখ স্মারকলিপি’ নামক একটি লিখিতও দাবি প্রদান করা হয়। এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডিজি মহোদয় খাদ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি সরকার নির্ধারিত ডিম-মাংসের ন্যায্য মূল্য বাস্তবায়নে বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ইতোমধ্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নির্দেশনায় পোলট্রি খাদ্যের দাম কেজিপ্রতি ১ থেকে দেড় টাকা পর্যন্ত কমেছে। পাশাপাশি ফিড, বাচ্চা ও ওষুধের মূল্য নির্ধারণে তদন্ত চলছে। এতে ভবিষ্যতে আরও দাম কমতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে বিপিএ জানায়, সরকারের এই সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে সভায় উপস্থিত সব প্রান্তিক খামারি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাই সরকারের প্রতি আস্থা রেখে এবং জনগণের স্বার্থে ঘোষিত ১ মে থেকে খামার বন্ধের কর্মসূচি প্রত্যাহার করছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে প্রান্তিক খামারিদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ১ মে থেকে দেশের সব খামার পুরোদমে চালু রাখার পাশাপাশি খামারিদের সরকারের সব নিয়মকানুন মেনে বৈধভাবে খামার পরিচালনার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। তবে আগামী দিনে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দেয়া ১০ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে আবারও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দিয়েছে সংগঠনটি।

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সংক্ষিপ্ত ১০ দফা দাবিগুলো হলো-
১) জাতীয় মূল্য নিয়ন্ত্রণ কমিটি গঠন করতে হবে।
২) সরকারিভাবে ফিড মিল ও হ্যাচারি স্থাপন করতে হবে।
৩) কোম্পানির কন্ট্রাক্ট ফার্মিং ও উৎপাদন নিষিদ্ধ করতে হবে।
৪) স্বাধীন বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করতে হবে।
৫) ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের পুনর্বাসন করতে হবে।
৬) খামারিদের রেজিস্ট্রেশন ও আইডি কার্ড প্রদান করতে হবে।
৭) জাতীয় পোলট্রি উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।
৮) সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
৯) প্রশাসনিক অভিযান চালিয়ে ন্যায্য বাজার নিশ্চিত করতে হবে।
১০) জাতীয় বাজেটে প্রান্তিক খামারিদের বরাদ্দ ও সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র র ন করত

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ