ফতুল্লা থানার কাশীপুর ইউনিয়নে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর ইউনিয়ন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে কাশীপুর ইউনিয়ন কার্যালয়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কাশীপুর ইউনিয়ন শাখার সভাপতি আলহাজ্ব শাহাদাত হোসেন রানা। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ফতুল্লা থানা শাখার সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আমান উল্লাহ আমান।

তিনি বক্তব্যে সংগঠনের আদর্শ ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন এবং বলেন, বর্তমান সময়ে নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ নিয়ে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা আগের চেয়ে অনেক বেশি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এদেশে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ গঠনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

সম্মেলনের একপর্যায়ে প্রধান অতিথি বিগত সেশনের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন এবং ২০২৫-২০২৬ সেশনের জন্য ২১ সদস্য বিশিষ্ট একটি নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। এতে সভাপতি হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হন আলহাজ্ব শাহাদাত হোসেন রানা।

নবগঠিত কমিটিতে সহ-সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন মুফতী ইমদাদুল হক ও আলহাজ্ব মুক্তার হোসেন। সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এম.

শফিকুল ইসলাম এবং জয়েন্ট সেক্রেটারির দায়িত্ব পেয়েছেন মুহা. মামুন ফিরোজ।

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন সাংগঠনিক সম্পাদক মুহা. আব্দুল জলিল, প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মুহা. রবিউল আলম, দফতর সম্পাদক মুহা. সিরাজুল ইসলাম, অর্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহা. আক্তার হোসেন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা আহমাদ কবীর, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুহা. মাসুম, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুহা. আব্দুল আজিজ, কৃষি ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মুহা. পারভেজ প্রধান, মহিলা ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক মুহা. বজলু সিকদার, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মুহা. আল-আমিন, সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব মুহা. হুমায়ুন কবীর, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মুহা. জাহাঙ্গীর হোসেন, এবং স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মুহা. রাজিবুল ইসলাম। সাধারণ সদস্য হিসেবে রয়েছেন মুহা. আবুল হোসেন, মুহা. নূর হোসেন ও আলহাজ্ব মুহা. গিয়াস উদ্দিন।

সম্মেলনে বক্তারা সংগঠনের কার্যক্রম আরও গতিশীল করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং স্থানীয় পর্যায়ে ইসলামিক মূল্যবোধ ছড়িয়ে দিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। এছাড়াও সমাজের বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলায় সংগঠনের সদস্যদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার তাগিদ দেওয়া হয়।

সম্মেলন শেষে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। 
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আলহ জ ব অন ষ ঠ সদস য ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ