ভারতে মারধরের শিকার দুই বাংলাদেশিকে ফেরত, দেশে ফিরে কারাগারে
Published: 23rd, April 2025 GMT
ভারতে মারধরের শিকার দুই বাংলাদেশি কৃষককে রোববার দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পরে সোমবার ভারত সীমান্তে অনুপ্রবেশের মামলায় তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। তারা হলেন- হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার তুলশীপুর গ্রামের আবদুল আলীর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন (৫৩) ও একই গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে জামাল মিয়া (৫৪)।
ভুক্তভোগীদের স্বজনরা জানান, তোফাজ্জল ও জামাল মিয়া গত ১২ এপ্রিল সকালে গ্রামের পাশে কৃষিকাজ করতে গিয়ে ভুলে ভারতের পশ্চিম ত্রিপুরা সিদাই এলাকায় ঢুকে পড়েন। এ সময় সেখানকার লোকজন তাদের আটক করে মারধর শুরু করেন। এ ঘটনার ভিডিও চিত্র সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, দুই বাংলাদেশিকে লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হচ্ছে এবং তাদের একজন ভারতীয় নিরাপত্তা সদস্যের পায়ে পড়ে সাহায্য চাইছেন। পরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে। এরপর রোববার বিকেলে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়। দেশে ফেরার পর তাদের বিরুদ্ধে ‘ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের’ অভিযোগে বিজিবির পক্ষ থেকে মামলা করা হয়।
বিজিবি হবিগঞ্জ-৫৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানজিল আহমেদ জানান, ভারতে আটক দুই বাংলাদেশিকে ফেরত চেয়ে প্রস্তাব দেয় বিজিবি। পরে বিএসএফ সদস্যরা হরিণখোলা সীমান্ত ফাঁড়ি বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে রোববার বিকেলে পতাকা বৈঠক করেন। ওই দিন সন্ধ্যায় আটক বাংলাদেশি তোফাজ্জল হোসেন ও জামাল মিয়াকে হস্তান্তর করেন। তারা ভারতে অনুপ্রবেশ করায় তাদের মাধবপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।
মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুলাহ আল মামুন বলেন, ভারতে আটক দু’জনের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশে অভিযোগে মাধবপুর থানায় মামলা হয়েছে। সোমবার আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ধবপ র
এছাড়াও পড়ুন:
কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।
খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।
উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।
উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।