বৈশ্বিক বাজারে দাম কিছুটা কমায় দেশের বাজারেও সোনার দাম ভরিপ্রতি সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৩৪২ টাকা কমেছে। তারপরও ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনা কিনতে ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা লাগবে।
সোনার নতুন এই দর আজ বুধবার বিকেল ৪ টাকা ১৫ মিনিটে সারা দেশে কার্যকর হয়েছে বলে জানায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি। তার কয়েক মিনিট পর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায় সমিতির স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান।
আজ দিনের শুরুতে সোনার দাম ভরিতে ৫ হাজার ৩৪২ টাকা বৃদ্ধি পায়। এতে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম বেড়ে হয় প্রায় ১ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। দেশের সোনার বাজারে ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ দাম। বিকেলে আবার দর কমানো হয়।
আজ বিকেলে কার্যকর হওয়া দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে হলমার্ক করা প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৯৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ৪১ হাজার ১৬৯ টাকায় বিক্রি হবে। সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম কমে হবে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৮০ টাকা।
বিকেলে দাম কমার আগপর্যন্ত হলমার্ক করা প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনা ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮৮ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ লাখ ৬৯ হাজার ৮০৫ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ১ লাখ ২০ হাজার ৫১২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তার মানে, প্রতি ভরি সোনার দামে ২২ ক্যারেটে ৫ হাজার ৩৪২ টাকা, ২১ ক্যারেটে ৫ হাজার ১৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটে ৪ হাজার ৩৭৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম কমেছে ৩ হাজার ৭৩২ টাকা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করার পর সোনার দাম হু হু করে বাড়ছিল। ৯ এপ্রিল তিন মাসের জন্য পাল্টা শুল্ক আরোপ স্থগিত করলে সোনার দাম একটু কমে আবার বাড়তে শুরু করে। কারণ, পাল্টা শুল্ক স্থগিত হলেও ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক সব দেশের ওপর কার্যকর করা হয়। বিশ্ববাজারে গতকাল মঙ্গলবার সোনার দাম প্রতি আউন্স ৩ হাজার ৫০০ ডলার স্পর্শ করেছিল, যা যেকোনো সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনের ওপর পাল্টা শুল্ক কমানোর ইঙ্গিত দেওয়ার পাশাপাশি ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে বরখাস্ত করার হুমকি থেকে সরে আসায় আজ সোনার দাম কমতে শুরু করে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, স্পট মার্কেটে আজ সোনার দাম ১ দশমিক ৬ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স ৩ হাজার ৩২৮ ডলার হয়েছে।
মূলত বিশ্ববাজারে সোনার দামে পতন শুরু হওয়ায় দেশেও দাম সংশোধন করেছে জুয়েলার্স সমিতি। যদিও তারা বরাবরের মতো বলেছে, স্থানীয় বাজারে বিশুদ্ধ সোনার দাম হ্রাস পেয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ২২ ক য র ট দ ম কম
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ