চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপকূলে ২০২১ সালে জাহাজভাঙা কারখানা (ইয়ার্ড) ছিল ১৫০টি। এর মধ্যে ১০৫টি কারখানাকে পরিবেশবান্ধব (গ্রিন) করার লক্ষ্যে উন্নয়নকাজ করার অনুমোদন দিয়েছিল শিল্প মন্ত্রণালয়। এখন পর্যন্ত গ্রিন সনদ পেয়েছে মাত্র সাতটি কারখানা। আরও ১৭টি কারখানা গ্রিন করার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। তবে নানা সংকটে বাকি কারখানাগুলো ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। কারখানা বলতে রয়েছে কেবল জমি আর সামান্য যন্ত্রপাতি।

সীতাকুণ্ড উপকূলের সাতটি মৌজা নিয়ে গঠিত জাহাজভাঙা অঞ্চলে এসব কারখানার অবস্থান। কারখানা বন্ধ থাকায় এই সাত মৌজার বেশির ভাগই যেখানে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে, সেখানে নতুন করে জাহাজভাঙা অঞ্চল বাড়ানোর প্রচেষ্টা চলছে। সীতাকুণ্ডের বোয়ালিয়া নামক আরও একটি মৌজায় জাহাজভাঙা কারখানার জন্য ২০০ একর জমি বরাদ্দ চেয়েছেন কয়েকজন ব্যক্তি। ১০ বছর আগে এ আবেদন করা হলেও সম্প্রতি জেলা প্রশাসন থেকে আবেদনটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

নতুন করে জাহাজভাঙা অঞ্চল বাড়ানো হলে পরিবেশগত দূষণের পাশাপাশি আকিলপুর এলাকায় গড়ে ওঠা সৈকত নষ্ট হবে বলে অভিমত স্থানীয় বাসিন্দাদের। এ ছাড়া জাহাজভাঙা কারখানামালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিআরএ) শুরু থেকে নতুন জাহাজভাঙা অঞ্চলের বিরোধিতা করে আসছে। তাদের ভাষ্য, এত ইয়ার্ড ও নতুন অঞ্চলের দরকার নেই। বরং বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানা সরকারি সহযোগিতায় অন্য কোনো ব্যক্তি নতুন করে চালুর উদ্যোগ নিতে পারেন।

২০১১ সালের ২০ অক্টোবর শিল্প মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন দিয়ে জাহাজভাঙার জন্য সীতাকুণ্ড উপকূলের সাতটি মৌজাকে নির্ধারণ করে দেয়। তাতে বলা হয়, সীতাকুণ্ড উপজেলার উত্তর ছলিমপুর, ভাটিয়ারি, জাহানাবাদ, শীতলপুর, দক্ষিণ সোনাইছড়ি, মধ্য সোনাইছড়ি ও উত্তর সোনাইছড়ি এই সাত মৌজায় জাহাজভাঙা কাজের জন্য ইজারা দেওয়া খাসজমি অন্তর্ভুক্ত করে পরিবেশসম্মত জাহাজভাঙা শিল্পাঞ্চল ঘোষণা করা হলো। মূলত পরিবেশ দূষণরোধ, নিরাপদ শ্রম পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য এই প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল মন্ত্রণালয়।

বোয়ালিয়া মৌজাকে জাহাজভাঙা অঞ্চলের অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করেন মাদার স্টিল নামে একটি জাহাজভাঙা কারখানার মালিক আবুল কাশেমসহ কয়েকজন ব্যক্তি। মাদার স্টিল ছাড়াও কাশেমের আরও তিনটি কারখানা রয়েছে। ওই তিনটি কারখানা এখন পর্যন্ত পরিবেশবান্ধব করা না হলেও নতুন মৌজায় কারখানার আবেদন করেছেন তিনি।

২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসন বরাবর করা একটি আবেদনে আবুল কাশেম লিখেছেন, ‘আমি বোয়ালিয়া মৌজায় কয়েক বছর আগে কিছু জায়গা কিনেছি। এটা পরিবেশ সম্মত জাহাজভাঙা কারখানার উপযুক্ত হলেও সরকারি অনুমোদনের অভাবে ওই মৌজায় জাহাজভাঙা কারখানা স্থাপন করা যাচ্ছে না। এই মৌজায় জাহাজভাঙা কারখানা স্থাপনের অনুমোদন দিলে ব্যক্তিগতভাবে উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারব।’ গেজেটভুক্ত হওয়ার প্রত্যাশায় অপেক্ষা করতে করতে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন বলেও আবেদনে কাশেম উল্লেখ করেন।

গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর কাশেমসহ কয়েকজন ইয়ার্ডমালিক আবার নতুন করে তদবির শুরু করেন। আবেদনের বিষয়ে জেলা প্রশাসন বিএসবিআরএর মতামতও নেয়। কয়েক মাস আগে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন তাঁদের আবেদনটিতে মতামত দিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় বরাবরে পাঠিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ বোর্ডের মহাপরিচালক এ এস এম শফিউল আলম তালুকদারের নেতৃত্বে একটি দল আজ রোববার সীতাকুণ্ডে ইয়ার্ডের জন্য বিদ্যমান মৌজা এবং প্রস্তাবিত মৌজা পরিদর্শনে গেছে।

জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো.

সাদি উর রহিম জাদিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘নতুন করে মৌজা বাড়ানোর জন্য একটি আবেদন কয়েক বছর আগে থেকে পড়ে ছিল। ওখানে প্রায় ২০০ একর নতুন করে জায়গা চেয়েছেন কারখানামালিকেরা। ওখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্পের জায়গাও রয়েছে। মন্ত্রণালয় আমাদের কাছে এ–সংক্রান্ত কিছু বিষয় অনুসন্ধানের জন্য দিয়েছিল। আমরা অনুসন্ধান করে আবেদনকৃত ভূমির চেয়ে আরও কম জায়গা দেওয়া যেতে পারে মর্মে মতামত দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি।’

জানতে চাইলে আবেদনকারী আবুল কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই এলাকায় ইয়ার্ড হলে ভাঙা বেড়িবাঁধ রক্ষা হবে। আমার লাভ নয়, এতে দেশের লাভ হবে। সবাই মনে করছে আমার আগ্রহ বেশি। অথচ জেলা প্রশাসন যে পরিমাণ জায়গার সুপারিশ করেছে বলে শুনেছি, তাতে আমার জায়গা পড়েনি। আমরা ১০ বছর আগে মৌজা বাড়ানোর আবেদন করেছিলাম। বন্ধ হয়ে যাওয়া ইয়ার্ডে কারখানা চালু করতে ব্যাংকঋণসহ নানা ঝামেলা হবে।’

২০২১ সাল থেকে এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসন ও শিল্প মন্ত্রণালয় বরাবরে চারটি চিঠিতে জাহাজভাঙা কারখানামালিকদের সংগঠন বিএসবিআরএ নতুন করে ইয়ার্ডের অঞ্চল না বাড়ানোর আবেদন জানায়। পাশাপাশি তারা রুগ্ণ ইয়ার্ডকে কীভাবে চালু করা যায়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। এ বিষয়ে সংগঠনটির কোনো সদস্য বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি। তবে একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, লিখিত আবেদনের বক্তব্যগুলোই তাঁদের বক্তব্য।

২০০১ সালের ২০ মে শিল্প মন্ত্রণালয় বরাবর বিএসবিআরএর সভাপতি আবু তাহের স্বাক্ষরিত আবেদনে ১৫০টি ইয়ার্ড রয়েছে উল্লেখ করা হয়েছিল। আবেদনে বলা হয়, ‘বোয়ালিয়া মৌজাকে অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা না করে সাতটি মৌজার বন্ধ ইয়ার্ডগুলোকে সরকারি সহযোগিতায় সচল করা এবং অঞ্চলের অবশিষ্ট ভূমিতে আরও ইয়ার্ড স্থাপন করা সমীচীন হবে।’ ২০২৩ সালের ৭ মে ও ২০২৪ সালের ২৫ নভেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর পৃথক আরও দুটি চিঠি দেওয়া হয় বিএসবিআরএর পক্ষ থেকে। এতে স্বাক্ষর করেন সংগঠনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কামাল উদ্দিন আহমেদ। এই দুই চিঠিতেও একই আবেদন জানানো হয়। সবশেষ এ বছরের ১৩ এপ্রিল শিল্পসচিব বরাবর একটি আবেদন জানানো হয়। এতে স্বাক্ষর করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জহিরুল ইসলাম। এই আবেদনে বলা হয়, ‘বর্তমান ঘোষিত অঞ্চলে নানা কারণে ৬০ থেকে ৭০টি ইয়ার্ড কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে। তা ছাড়া অঞ্চলের ভেতর যে পরিমাণ খালি জায়গা রয়েছে, সেখানে নতুন করে আরও বেশ কিছু ইয়ার্ড করা সম্ভব হবে। তাই জাহাজভাঙা ইয়ার্ডের অঞ্চল বর্ধিতকরণের পরিবর্তে বিদ্যমান অঞ্চলে যেসব ইয়ার্ড বন্ধ আছে, সেগুলো চালু এবং খালি জায়গায় সরকারি সহযোগিতায় নতুনভাবে ইয়ার্ড স্থাপন সম্ভব।’ জাহাজভাঙা অঞ্চল বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হলে পরিবেশসহ নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার সৃষ্টির আশঙ্কাও করা হয় চিঠিতে।

২০০ জাহাজের জন্য ৫০ ইয়ার্ড যথেষ্ট

২০২৪ সালে বাংলাদেশে পুরোনো জাহাজ আসে ১৩৬টি। আগের বছর ২২৩ সালে আসে ১৬৬টি। গত এক দশকে প্রতিবছর গড়ে ১৮৯টি করে পুরোনো জাহাজ আমদানি হয়েছে। বাংলাদেশে যেসব জাহাজ আমদানি হয়, সেগুলো ভাঙতে একটি ইয়ার্ডের তিন মাস সময় লাগে। একটি কারখানায় একসঙ্গে একাধিক জাহাজ ভাঙার কাজ খুব কম হয়। তবে গ্রিন ইয়ার্ডে একসঙ্গে একাধিক জাহাজ ভাঙার সক্ষমতা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ৫০ থেকে ৬০টি জাহাজভাঙা কারখানা ব্যবহার করে বছরে ২০০টির বেশি জাহাজ ভাঙা যায়।

শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত দিক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইপসা। ইপসার সমন্বয়কারী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘এতগুলো ইয়ার্ড বেকার পড়ে রয়েছে। সেখানে নতুন করে কার্যক্রম চালু করা যেতে পারে। নতুন করে ইয়ার্ড হোক, এলাকার লোকজন তা চান না। কারণ, এটা বড় একটা দূষণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। এলাকার লোকজনের স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত নানা সমস্যা দেখা দেয়। নতুন করে অঞ্চল বাড়ানো কোনোভাবে উচিত হবে না।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য পর ব শ ব এসব সরক র বর বর স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ