নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে নদী সংস্কার এবং খাল, বিল, পুকুর, জলাশয়সহ প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক আন্দোলন  ‘তরী বাংলাদেশ’।

শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকার হাজারীবাগে বুড়িগঙ্গা তীরবর্তী একটি রেস্টুরেন্টে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ আহ্বান জানান। ‘নদী রক্ষায় একসাথে, নদী বাঁচাও দেশ বাঁচাও’ স্লোগানে এ সভার আয়োজন করে  তরী বাংলাদেশ।

সভায় তরী বাংলাদেশের আহ্বায়ক শামীম আহমেদ বলেন, নদীকে আমরা যে যার মতো করে ব্যবহার করছি। কেউ দূষণ করছি, কেউ দখল করছি। কিন্তু নদী সুরক্ষায় আমরা কেউ কাজের কাজ করছি না, কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছি না। ঢাকার চারপাশ ঘিরে রয়েছে অসংখ্য নদী। এসব নদী সংরক্ষণ করে নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনতে পারলে জলপথে যোগাযোগ এবং পণ্য পরিবহনের কাজ অনেক সহজ ও সাশ্রয়ী হতো। ঢাকার ভেতরের যানবাহনের চাপ অনেকটাই কমে আসত।

তিনি এ বিষয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নদী ও জলাশয় রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানান। 

লেখক ও সম্পাদক গাজী তানভীর আহমদের সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ‘দুর্বার’ সভাপতি এ সালাম সময়, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন তরী বাংলাদেশের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য খালেদা মুন্নি এবং সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক জি এম রুস্তম খান।

এছাড়াও নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষায় সরকার এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা, উদ্যোগ ও করণীয় বিষয়ে আলোচনা করেন নদী ও পরিবেশ কর্মী আলাউদ্দিন আহমেদ, আনন্দ বিনোদনের সম্পাদক এস এ এম সুমন, ক্রাইম রিপোর্টার্স কাউন্সিলের সাংগঠনিক সম্পাদক কিশোর ডি.

কস্তা, ডেইলি সকালের কাগজের সম্পাদক আব্দুল হালিম নিশান, তরী বাংলাদেশ আহবায়ক কমিটির সদস্য সুশান্ত পাল, সাভার শাখার সদস্য মো. হান্নান, মোহাম্মদ আহসান কবির, ঢাকা উত্তর সিটির সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রামের সদস্য মোহাম্মদ হোসাইন প্রমুখ।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নদ র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’

নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি। 

৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে। 

আরো পড়ুন:

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা। 

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী। 

উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” 

চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।” 

চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়। 

মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ