মাদারীপুরে বাকিতে পণ্য না দেওয়ায় প্রতিবন্ধী দম্পতিকে কুপিয়ে জখম
Published: 28th, April 2025 GMT
মাদারীপুরের ডাসারে বাকি না দেওয়ায় মুদিদোকানি প্রতিবন্ধী দম্পতিকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গতকাল রোববার রাতে ডাসার উপজেলার কমলাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আহত দুজন হলেন কমলাপুর এলাকার আবদুল মান্নান হাওলাদার (৭০) ও তাঁর স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৫৫)। তাঁরা উভয়েই শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। তাঁদের গতকাল রাতে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁর নাম এনায়েত সরদার (৪৫)। তিনিও একই এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বাড়ির সামনে একটি মুদিদোকান চালিয়ে আয় করে আসছেন মান্নান ও তাঁর স্ত্রী নুরজাহান। দোকানটি থেকে প্রায় ৫ মাস আগে ৩০০ টাকার পণ্য বাকিতে নেন এনায়েত সরদার। আগের পাওনা না মিটিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় আবারও ৯০ টাকার পণ্য বাকি চান তিনি। এতে আপত্তি জানান ওই প্রতিবন্ধী দম্পতি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এক সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে ওই দম্পতিকে মারধর করেন এনায়েত সরদার। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাঁদের আহত করা হয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুরুজাহান বেগম বলেন, ‘দোকান করে যা আয়রোজগার হয়, তা দিয়াই আমাগো সংসার চলে। এনায়েত আমাগো দোকান থেইকা বাকিতে সদাই নেয়। পাওনা পরিশোধ না কইরে নতুন করে আবারও বাকি চাইলে আমার স্বামী মানা করে। এরপর তারে হামলা করে, কোপ দেয়। আমি ছাড়াইতে গেলে আমারেও মারধর করে। আমি এর বিচার চাই।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এনায়েত সরদার বলেন, ‘আমি এলাকার কোনো দোকান থেকে বাকিতে সদাই খাই না। এসব আমার নামে মিথ্যে অভিযোগ। বিষয়টি পুলিশও জানে। তবে ওই দুজনের ওপর কারা হামলা করেছে, তা আমার জানা নেই।’
ঘটনার পরপর হাসপাতাল ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভুক্তভোগী দম্পতির কাছে লিখিত অভিযোগ চাওয়া হয়েছে বলে জানান ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এহেতাশামুল ইসলাম। তিনি বলেন, তাঁরা অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি কার্যালয়ে মাইক্রোসফট টিমসের ব্যবহার নিষিদ্ধ করছে জার্মানির একটি স্টেট, কেন
সরকারি কার্যালয়ে মাইক্রোসফটের টিমসসহ বেশ কয়েকটি সফটওয়্যারের ব্যবহার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানির উত্তরাঞ্চলীয় শেলসভিগ-হোলস্টেইন স্টেট। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে আগামী তিন মাস পর পুলিশ, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনের অধিকাংশ কর্মকর্তা মাইক্রোসফট টিমস ব্যবহার করতে পারবেন না। তথ্য সংরক্ষণে বিদেশি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নিজস্ব ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তুলতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
স্টেট গভর্নমেন্টের ডিজিটাল রূপান্তরবিষয়ক মন্ত্রী ডির্ক শ্রোয়েডটার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা তথ্যের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চাই। এ জন্যই মাইক্রোসফট টিমসের ব্যবহার বন্ধ করে দিচ্ছি।’ নতুন সিদ্ধান্তের আওতায় প্রাথমিকভাবে শেলসভিগ-হোলস্টেইন স্টেটের ৬০ হাজার সরকারি কর্মচারীর মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার কর্মী এই পরিবর্তনের আওতায় আসবেন। পরবর্তী ধাপে আরও প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষককে একই ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
স্টেট গভর্নমেন্ট ২০২৪ সাল থেকেই ধাপে ধাপে মাইক্রোসফটের সফটওয়্যার ব্যবহারের বিকল্প খুঁজে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই পরিবর্তনের অংশ হিসেবে অফিস ব্যবস্থাপনায় মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ও এক্সেলের পরিবর্তে ‘লিব্রে অফিস’ এবং ই–মেইল ও ক্যালেন্ডার ব্যবস্থাপনায় ‘মাইক্রোসফট আউটলুক’–এর জায়গায় ‘ওপেন-এক্সচেঞ্জ’ ব্যবহার শুরু হয়েছে।
পরবর্তী ধাপে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ বাদ দিয়ে একটি লিনাক্সভিত্তিক বিকল্প চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। ডির্ক শ্রোয়েডটার জানান, ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপজুড়ে জ্বালানিনির্ভরতা নিয়ে যেমন সচেতনতা তৈরি হয়েছে, তেমনি ডিজিটাল নিরাপত্তা ও তথ্য নিয়ন্ত্রণ নিয়েও নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। তার ভাষায়, ‘এই যুদ্ধ আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, আমরা শুধু জ্বালানিতেই নয়, তথ্যপ্রযুক্তিতেও কতটা নির্ভরশীল। এখন সময় এসেছে এসব নির্ভরতা কাটিয়ে ওঠার।’ স্টেট গভর্নমেন্ট জানিয়েছে, মাইক্রোসফটের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোনো ক্লাউড সেবার বদলে জার্মানির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ক্লাউড প্ল্যাটফর্মেই তারা সরকারি তথ্য সংরক্ষণ করবে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর ইউরোপের নির্ভরতা নিয়ে কয়েক বছর ধরেই বিতর্ক চলছে। বিশেষত মাইক্রোসফটের বাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি প্রতিযোগিতাবিষয়ক তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ ছিল, মাইক্রোসফট তাদের ব্যবসায়িক অ্যাপ্লিকেশনের সঙ্গে টিমস সফটওয়্যার বান্ডিল করে বিক্রি করে, যা বাজারে প্রতিযোগিতার সুযোগ কমিয়ে দেয়। ডির্ক শ্রোয়েডটার বলেন, ‘শেলসভিগ-হোলস্টেইনের নেওয়া এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমাদের কাছে পরামর্শ চাওয়া হচ্ছে।’
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া