মাদারীপুরের ডাসারে বাকি না দেওয়ায় মুদিদোকানি প্রতিবন্ধী দম্পতিকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গতকাল রোববার রাতে ডাসার উপজেলার কমলাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আহত দুজন হলেন কমলাপুর এলাকার আবদুল মান্নান হাওলাদার (৭০) ও তাঁর স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৫৫)। তাঁরা উভয়েই শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। তাঁদের গতকাল রাতে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁর নাম এনায়েত সরদার (৪৫)। তিনিও একই এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বাড়ির সামনে একটি মুদিদোকান চালিয়ে আয় করে আসছেন মান্নান ও তাঁর স্ত্রী নুরজাহান। দোকানটি থেকে প্রায় ৫ মাস আগে ৩০০ টাকার পণ্য বাকিতে নেন এনায়েত সরদার। আগের পাওনা না মিটিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় আবারও ৯০ টাকার পণ্য বাকি চান তিনি। এতে আপত্তি জানান ওই প্রতিবন্ধী দম্পতি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এক সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে ওই দম্পতিকে মারধর করেন এনায়েত সরদার। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাঁদের আহত করা হয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুরুজাহান বেগম বলেন, ‘দোকান করে যা আয়রোজগার হয়, তা দিয়াই আমাগো সংসার চলে। এনায়েত আমাগো দোকান থেইকা বাকিতে সদাই নেয়। পাওনা পরিশোধ না কইরে নতুন করে আবারও বাকি চাইলে আমার স্বামী মানা করে। এরপর তারে হামলা করে, কোপ দেয়। আমি ছাড়াইতে গেলে আমারেও মারধর করে। আমি এর বিচার চাই।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এনায়েত সরদার বলেন, ‘আমি এলাকার কোনো দোকান থেকে বাকিতে সদাই খাই না। এসব আমার নামে মিথ্যে অভিযোগ। বিষয়টি পুলিশও জানে। তবে ওই দুজনের ওপর কারা হামলা করেছে, তা আমার জানা নেই।’

ঘটনার পরপর হাসপাতাল ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভুক্তভোগী দম্পতির কাছে লিখিত অভিযোগ চাওয়া হয়েছে বলে জানান ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এহেতাশামুল ইসলাম। তিনি বলেন, তাঁরা অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সেই রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যা ঘটেছিল

২৩ আগস্ট রাতে আমাদের গ্রেপ্তার

সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ,  ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এ এইচ এম কামরুজ্জামন, এই লেখক শেখ আবদুল আজিজ ও আবদুস সামাদ আজাদ—এই ৬ জনকে ১৯৭৫ সালের ২৩ আগস্ট একসঙ্গে গ্রেপ্তার করে আমাদের পল্টনে কন্ট্রোল রুমে একটি ভাঙা বাড়িতে নেওয়া হয়। আমরা বসা অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি সৈয়দ আহমদকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জনৈক কর্নেল ফারুককে অনুরোধ করেছিলেন।

কর্নেল ফারুক উত্তরে বলেছিলেন, ‘আপনাদের সবার ট্রায়াল এখানে হবে।’ আমাদের উদ্দেশ করে বলা হয়েছিল, ‘ইউ উইল হ্যাভ টু জাস্টিফাই ইয়োর করাপশন।’ এ কথা শুনে আমরা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। ভাবলাম, এটা কোর্ট নয়, আদালত নয়, কীভাবে এখানে বিচার হবে? এই পরিস্থিতিতে আমাদের পরস্পরের কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
ইতিমধ্যে মেজর ডালিম এসে এইচ এম কামারুজ্জামানের সঙ্গে আস্তে আস্তে কথা বলতে লাগল। কামরুজ্জামান ডালিমকে বলেছিল, ‘এ রকম তো কথা ছিল না!’ তারপর ডালিম চলে গেল। আমাদের সামনে আমাদের সহানুভূতিশীল পুলিশ কর্মচারীরা দৌড়াদৌড়ি করছিল। কিছু সময় পর তারা এসে বলল, ‘আপনারা এই গাড়ি ও মাইক্রোবাসে তাড়াতাড়ি ওঠেন; সেন্ট্রাল জেলে যেতে হবে।’ আমরা গাড়িতে উঠলাম এবং ভাবলাম, বেঁচে গেলাম। সেন্ট্রাল জেলে প্রবেশ করলাম। আমাদের নতুন জেলে থাকার জায়গা করে দেওয়া হলো।

শেখ আবদুল আজিজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ