পাবনায় রেললাইনের পাশে ব্যবসায়ীর মাথাবিচ্ছিন্ন লাশ, পরিবারের অভিযোগ হত্যা
Published: 29th, April 2025 GMT
পাবনার ঈশ্বরদীতে বাদশা হোসেন (৫৫) নামের এক ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার উমিরপুর এলাকায় রেললাইনের পাশে তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়। তাঁর শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন ছিল।
বাদশা হোসেন ঈশ্বরদী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) রোডের ‘মিঠুন স্টোর’-এর মালিক ছিলেন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে তুলে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে রেললাইনের পাশে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
উমিরপুর এলাকার কয়েকজন বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ চিৎকার শুনতে পান। পরে এলাকার লোকজন গিয়ে দেখেন, রেললাইনের পাশে মাথাবিচ্ছিন্ন লাশ পড়ে আছে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
বাদশা হোসেনের ছেলে মিঠুন হোসেন বলেন, ‘রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার কাদেরের মোড় থেকে কয়েকজন অস্ত্রের মুখে বাবাকে তুলে নিয়ে যায়। আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করি। পরে পুলিশ বাবার মরদেহ উদ্ধার করে।’
মিঠুন হোসেন আরও বলেন, কিছুদিন আগে মুঠোফোনে তাঁর বাবার কাছে বড় অঙ্কের চাঁদা দাবি করা হয়েছিল। টাকা না দেওয়ায় দুর্বৃত্তরা তাঁকে অপহরণ করে হত্যা করেছে। পরে ঘটনাটি আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনা বলে চালানোর জন্য রেললাইনের পাশে মরদেহ ফেলে রাখা হয়।
ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, এটি আত্মহত্যা। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি।
৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে।
আরো পড়ুন:
দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে
সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।
উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।”
চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।
মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত