পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন পাকিস্তান আগ বাড়িয়ে ভারতে হামলা চালাবে না, তবে প্রতিশোধ নেয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে। ভারতের সাথে সাম্প্রতিক উত্তেজনা এবং পাহলগাম হামলার আলোকে নয়াদিল্লির অভিযোগের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ইসলামাবাদের কূটনৈতিক পদক্ষেপের বিষয়ে সংসদে দেয়া বক্তব্যে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) তিনি এ কথা বলেন।

আজ বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন। 

সংসদে ইসহাক দার জানান, হামলা হলে পাকিস্তান একই উপায়ে প্রতিশোধ নেবে, কিন্তু তারা আগ বাড়িয়ে ভারতে হামলা শুরু করবে না। 

আরো পড়ুন:

নিয়ন্ত্রণরেখায় ষষ্ঠ দিনের মতো ভারত–পাকিস্তানের গোলাগুলি

কলকাতায় হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, নিহত ১৪ 

পহেলগাম হামলার ঘটনায় উত্তেজনা বৃদ্ধির পর পাকিস্তানের কূটনৈতিক পদক্ষেপের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, আজারবাইজান, কুয়েত, বাহরাইন এবং হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের পাকিস্তানের উদ্বেগের বিষয়ে কথা হয়েছে।

তিনি বলেন, তিনি কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সরাসরি কথা বলেছেন। সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের প্রতি স্পষ্ট সমর্থন প্রকাশের জন্য তিনি চীন ও তুরস্কের প্রশংসা করেছেন।

উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তাদের কী ঘটেছে তা ব্যাখ্যা করেছি- ভারতের মানসিকতা, এর ইতিহাস এবং সেই ইতিহাসের আলোকে এর উদ্দেশ্য কী হতে পারে সে সম্পর্কে আমাদের উদ্বেগ তুলে ধরেছি।”

ইসহাক দার উল্লেখ করেন, গোয়েন্দা প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ভারত কোনো ধরনের উত্তেজনা বৃদ্ধির কথা ভাবছে।

পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ভারত গত দুই বছর ধরে পরিবর্তিত পরিস্থিতির উল্লেখ করে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানিচুক্তি পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে, যা উভয় দেশের মধ্যে পানিবন্টন ব্যবস্থা নির্ধারণ করে।

তিনি পহেলগাম হামলার কথা উল্লেখ করে বলেন, “অন্যান্য সবার মতো আমারও সন্দেহ আছে যে, এই নাটকটি এই চুক্তি স্থগিত করার জন্য সাজানো হয়েছিল। তিনি বলেন, “এটি একটি ফলস ফ্ল্যাগ অভিযান ছিল, ভারত কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। আমরা পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সাথে যা বলি তা হলো, এই (হামলার) সাথে পাকিস্তানের কোনো সম্পর্ক নেই।” 

ইসহাক দারের মতে, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ পহেলগাম হামলার একটি স্বাধীন তদন্তের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সম্পূর্ণরূপে জেনেও যে, এর সাথে পাকিস্তানের কোনো সম্পর্ক নেই।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবারো স্পষ্ট করে সংসদে বলেন, পাকিস্তানের জলসীমায় ভারতের কোনো হস্তক্ষেপ সহ্য করা হবে না এবং এটি যুদ্ধের পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচনা করা হবে।

গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগাম এলাকায় ভয়াবহ সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এই ঘটনায় পাকিস্তানকে পরোক্ষভাবে দায়ী করে ভারত। নয়াদিল্লির অভিযোগ সীমান্ত সন্ত্রাসবাদে সমর্থন করছে ইসলামাবাদ।

এর জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু নদের পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে নয়াদিল্লি। পাশাপাশি পাকিস্তানের নাগরিকদের ভিসা বাতিল এবং প্রধান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিল, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বন্ধ এবং ভারতীয় বিমানকে আকাশসীমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গত ৬ দিন গুলিবিনিময়ের মতো ঘটনা ঘটেছে। 

গতকাল মঙ্গলবার ভারতের শীর্ষ সেনা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই বৈঠকে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে পাকিস্তান হামলার জন্য সবুজ সংকেত তিনি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসহ ক দ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমস্যা কী, সমাধান কোথায়: শুনুন তামিমের মুখে

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় সমস্যা কী? কোন বিষয়টি সবার আগে সমাধান করা উচিত?

দুটি প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই অনেক কথাই বলবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কারও বিষয়টি ভালো জানার কথা। যেমন তামিম ইকবাল। প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্র তামিমের সামনে দুটি প্রশ্ন রেখেছিলেন। তামিমের উত্তর, ‘আমার কাছে মনে হয় যে আমাদের ফ্যাসিলিটিজ (অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধা) নাই।’

প্রথম আলোর কার্যালয়ে উৎপল শুভ্রকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে আড্ডার মেজাজে তামিম বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন। নিজের ক্যারিয়ার, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য—এসব নিয়েও বেশ খোলামেলা কথা বলেন সাবেক এই ওপেনার।

আলাপচারিতার একপর্যায়েই বাংলাদেশ ক্রিকেটে এ মুহূর্তের সমস্যার প্রসঙ্গ উঠেছিল। অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধার অভাবকে সামনে টেনে এনে তামিম বলেছেন, ‘একটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দলের যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার হয় কিংবা বাংলাদেশের মতো দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার একটি (ক্রিকেট), যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, তার আশপাশেও নেই। পৃথিবীর তৃতীয়, চতুর্থ ধনী বোর্ডের যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, আমরা এর আশপাশেও নেই।’

তামিম বিষয়টি ভালোভাবে ব্যাখ্যা করলেন, ‘ক্রিকেট দলের প্রতি ভক্তদের যে প্রত্যাশা, সেটা পূরণের জন্য যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার, আমরা তার আশপাশেও নেই। আপনি মাঝারি মানের ক্রিকেটার হতে পারেন কিংবা মাঝারি মানের ব্যাটসম্যান হতে পারেন, সঠিক অনুশীলনের মাধ্যমে কিন্তু আপনি মাঝারি মান থেকে দুই ধাপ ওপরে উঠতে পারবেন।’

মুশফিকুর রহিম

সম্পর্কিত নিবন্ধ