নির্বাচনী প্রচারণার মতো সমাবেশের মাধ্যমে বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ক্ষমতায় আরোহনের ১০০তম দিন উদযাপন করেছেন। সমাবেশে তিনি ‘কমিউনিস্ট উগ্র বাম বিচারকদের’ উপর সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, “কিছুই আমাকে থামাতে পারবে না।”

ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের আমেরিকা থেকে এল সালভাদরের একটি কুখ্যাত কারাগারে পাঠানোর একটি ভিডিওর মনোমুগ্ধকর দৃশ্যও পরিবেশন করেন। তবে তার ৮৯ মিনিটের বিচ্ছিন্ন এবং এলোমেলো ভাষণ শেষ হওয়ার আগেই সমাবেশ ছেড়ে লোকজন চলে যায়।

ট্রাম্প বলেছেন, “আমাদের দেশের ইতিহাসে যেকোনো প্রশাসনের সবচেয়ে সফল প্রথম ১০০ দিন উদযাপন করতে আমরা আজ রাতে আমাদের জাতির প্রাণকেন্দ্রে এখানে এসেছি! ১০০ দিনে আমরা প্রায় ১০০ বছরের মধ্যে ওয়াশিংটনে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এনেছি।”

ট্রাম্প তার পূর্বসুরী ৪৫তম ও ৪৭তম প্রেসিডেন্টের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা করেন। তার পূর্বসুরীরা গ্যাং, কার্টেল এবং সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশের অনুমতি দিয়েছে বলে মিথ্যা অভিযোগ করেন তিনি। 

ট্রাম্প বলেন, “ডেমোক্রেটরা ব্যাপক আক্রমণ এবং গণ-অভিবাসনের শপথ নিয়েছে। আমরা গণ-নির্বাসন প্রদান করছি।”

ট্রাম্প ১৭৯৮ সালের যুদ্ধকালীন ক্ষমতাবলে এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট ব্যবহারের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। এই আইন প্রেসিডেন্টকে শত্রু দেশের নাগরিকদের আটক বা নির্বাসিত করার অনুমতি দেয়। ট্রাম্প তার ভাষণে সেসব আদালতকে টার্গেট করেন, যারা প্রথম ১০০ দিনে তার অনেক পদক্ষেপকে বাধাগ্রস্ত করেছে।

তিনি বলেছেন, “আমরা মুষ্টিমেয় কমিউনিস্ট, উগ্র-বামপন্থী বিচারকদের আমাদের আইন প্রয়োগে বাধা দেওয়ার এবং কেবলমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের অনুমতি দিতে পারি না।বিচারকরা আমাদের দেশকে সুরক্ষিত রাখার নামে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।”

ট্রাম্প বলেন, “এটা ভালো কিছু নয়, কিন্তু আমি আশা করি আমাদের দেশের স্বার্থে সুপ্রিম কোর্ট এটাকে বাঁচাতে চলেছে, কারণ আমাদের কিছু করতে হবে। এই লোকেরা কেবল আমাদের দেশকে ধ্বংস করতে চাইছে। আমেরিকাকে আবার নিরাপদ রাখার মিশনে আমাকে কেউ থামাতে পারবে না।”
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র দ শ

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে ইরানের নতুন হামলায় নিহত বেড়ে ৫, আহত ২৯

ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয় বলে জানায় জেরুজালেম পোস্ট। বিবিসি আরও দুইজন নিহতের খবর দেয়। এরপর আরেকজনের ফলে নতুন হামলায় ইসরায়েলে নিহত বেড়ে পাঁচজনে পৌঁছাল।

আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ