ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার ঘটনায় নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আরও বেড়েছে। গোয়েন্দা সূত্রের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার ইসলামাবাদ দাবি করে, ভারত আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে হামলা চালাতে পারে। তাই পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিজেদের আকাশসীমার নিরাপত্তা ও বিমানবন্দরগুলোয় সতর্কতা জারি করেছে দেশটি। এরই মধ্যে বুধবার পাকিস্তানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে ভারত।

চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে উভয় পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও চীন দুই পক্ষকে শান্ত থাকতে বলেছে। এনডিটিভি অনলাইন জানায়, গতকাল বুধবারও সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন মোদি। পেহেলগামে হামলার পর এটি কেবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটির (সিসিএস) দ্বিতীয় বৈঠক। প্রথম বৈঠকে সিন্ধুর পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতসহ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

এদিকে ভারতের সম্ভাব্য হামলা নিয়ে নিরাপত্তা উদ্বেগের মধ্যে নিজেদের আকাশসীমায় নজরদারি জোরদার করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) দেশটির আকাশসীমা দিয়ে চলাচলকারী দেশি-বিদেশি সব ফ্লাইট চলাচলের ওপর নজরদারি চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে। বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোর ফ্লাইটগুলো বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বিমানবন্দরগুলোতেও বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, সন্দেহজনক যেকোনো উড়োজাহাজের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কোনো ফ্লাইট নিয়ে সন্দেহ হলে উচ্চপর্যায়ের অনুমোদন ছাড়া ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হবে না। নিরাপত্তার কারণে বুধবার পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের গিলগিট ও স্কারদু শহরের নির্ধারিত সব বাণিজ্যিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, সতর্কতা হিসেবে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়ার কারণে নিজেদের আকাশসীমা সুরক্ষিত রাখতেই পাকিস্তান এসব পদক্ষেপ নিয়েছে।

গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আত্তাউল্লাহ তারার বলেন, পাকিস্তানের কাছে বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য আছে যে, ভারত ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে চাচ্ছে। তিনি কীসের ভিত্তিতে এমন তথ্য জানালেন, তা পরিষ্কার করেননি।

এ অবস্থায় মঙ্গলবার রাতেও কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়। টানা ষষ্ঠ রাতের এ গোলাগুলিতে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। সীমান্তে উত্তেজনার জন্য দু্ই দেশ একে অপরকে দোষারোপ করছে। 

উত্তেজনা নিরসনে মঙ্গলবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা বলেন। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, মহাসচিব ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মর্মান্তিক পরিণতি হতে পারে, এমন সংঘাত এড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি। সেই সঙ্গে গুতেরেস মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন। 

পরিস্থিতি শান্ত করতে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রও। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, তিনি দুই দেশের  পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলবেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি এবং স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি, যেন কেউ পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে না করে।’ 

গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেলেহগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ বেসামরিক মানুষ নিহত হন। ভারতের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করা হলেও কোনো ধরনের প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। অন্যদিকে পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। এরই মধ্যে দুই দেশ পাল্টাপাল্টি বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি পাকিস্তানের নাম না নিয়ে কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তানও। দেশটির সরকারের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, ইসলামাবাদ সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা জানায় এবং ভারতের যে কোনো সামরিক পদক্ষেপের  বিরুদ্ধে ‘সুচিন্তিত ও নিশ্চিত’ পদক্ষেপ নেবে। 

একই কথা বলেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। মঙ্গলবার পাকিস্তানের সিনেট অধিবেশনে তিনি বলেন, পাকিস্তান প্রথমে ভারতে আক্রমণ করবে না। তবে কোনো আঘাত এলে তার জবাব দেবে। ভারতের অভিযোগ মোকাবিলায় পাকিস্তান যে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছে, তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। পেহেলগাম হামলার জেরে সিন্ধুর পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করার ভারতীয় ঘোষণা প্রসঙ্গে ইসহাক দার বলেন, ‘ভারত দুই বছর ধরে সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি বদলাতে চাচ্ছে। আমার মতো অনেকেরই সন্দেহ— এ নাটক (পেহেলগাম হামলা) হয়তো সেই চুক্তি স্থগিতের অজুহাত।’

সিনেট অধিবেশনে পিপিপির সদস্য সৈয়দ মাসরুর আহসান কারাবন্দি পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই-প্রধান ইমরান খানকে সর্বদলীয় বৈঠকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানোর পক্ষে সমর্থন দেন। পিপিপির মাসরুর আহসান বলেন, সরকারকে নমনীয়তা দেখাতে হবে এবং বিরোধীদের কথা শুনতে হবে। উভয় পক্ষেরই অহংকার ত্যাগ করতে হবে। এর আগে তিনজন সিনেটর– আল্লামা নাসির আব্বাস, গুরদীপ সিং ও দোস্ত মোহাম্মদ পিটিআই নেতা ইমরানের মুক্তির দাবি জানান।

দ্য নিউজ জানায়, চলমান পরিস্থিতিতে বুধবার জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন পিটিআই নেতা ইমরান খান। তিনি বলেন, কিছু বিষয়ে দেশের মানুষের মধ্যে বিভাজন থাকতে পারে; কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির আগ্রাসন ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়ানোর বিষয়ে সবাইকে ঐকবদ্ধ থাকতে হবে। রাওয়ালপিন্ডির আদিয়াল কারাগারে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ইমরান এসব কথা বলেন। 

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানায়, পাশাপাশি আকাশসীমায়ও শুরু হয়েছে নজরদারি। বুধবার কাশ্মীর সীমান্তে ভারতীয় বিমানবাহিনীর চারটি রাফায়েল যুদ্ধবিমান টহল দিচ্ছিল। এ সময় পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান সেগুলোকে শনাক্ত ও ধাওয়া করে। এতে রাফায়েল যুদ্ধ বিমানগুলো পালিয়ে যায়। 

চলমান উত্তেজনার মধ্যে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতা ও উস্কানির অভিযোগ তুলেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। মঙ্গলবারর সেনাবাহিনী এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দাবি করে, সম্প্রতি এক ভারত-প্রশিক্ষিত পাকিস্তানি নাগরিককে আটক করা হয়, যার কাছ থেকে একটি ভারতীয় ড্রোন ও ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) উদ্ধার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে ভারতীয় রুপিও পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়। 

অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাকিস্তানকে সমর্থন করে পোস্ট দেওয়ায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে অন্তত ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা ইঙ্গিত দিয়েছেন, ভবিষ্যতেও এ গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত থাকবে। 

পানিচুক্তি বাতিল নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে যাবে পাকিস্তান

সিন্ধুর পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করা নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) যাবে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। 

বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর এ চুক্তিতে সই করে দুই দেশের সরকার। চুক্তির কারণে পাকিস্তানের ৮০ শতাংশ কৃষি খামারের জন্য পানি পাওয়ার পথ নিশ্চিত হয়। পানিচুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্তের পর এখন আতঙ্কে দিন কাটছে পাকিস্তানের সিন্ধু নদ এলাকার বাসিন্দাদের।

পাকিস্তানের আইন ও বিচারমন্ত্রী আকিল মালিক জানান, ভারতের একতরফাভাবে চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত সোমবার রাতে তিনি রয়টার্সকে বলেন, ভিন্ন তিনটি আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট রমন ত র পরর ষ ট র পদক ষ প র পদক ষ প ন পর স থ ত নজরদ র র জন য ইসল ম সরক র ইমর ন সতর ক চলম ন

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান

জাতিসংঘের মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান বলেছেন, ‘আমাদের যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে, তার একটি হলো ঠিক এই মুহূর্তে বাংলাদেশ একটি স্বাভাবিক গণতন্ত্রের দেশ নয়। এখানে গণতন্ত্র চলছে না। কার্যত এটা পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে।’

টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট (টিজিআই) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে আইরিন খান এ কথা বলেন। বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে গত বুধবার ‘আইন থেকে অধিকার: বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণে ডিজিটাল স্বাধীনতার সুরক্ষা’ শীর্ষক এ ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। গতকাল রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ওয়েবিনারে বিদ্যমান ও নতুন সাইবার আইন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া এবং নাগরিকদের ওপর নজরদারিসহ ডিজিটাল সুশাসন-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় ও উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা হয়। টিজিআই–এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে নজরদারি সরঞ্জাম কেনার জন্য ১৯ কোটি ডলারের বেশি অর্থ ব্যয় করেছে।

ওয়েবিনারে সূচনা বক্তব্য দেন টিজিআই–এর নির্বাহী পরিচালক সাবহানাজ রশীদ দিয়া। গত বছরের জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশে বেশ কিছু সংস্কার হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সাবহানাজ রশীদ বলেন, ‘আমরা দেখেছি, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো বিষয়গুলোর ব্যাপারে কিছু উল্লেখযোগ্য তদন্ত, কমিশন ও প্রক্রিয়া করা হয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে আমরা নির্বিচার গ্রেপ্তার হতেও দেখেছি।’

টিজিআই–এর নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘গত কয়েক মাসে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। অতীতে আমাদের বিশ্লেষণে আমরা দেখেছি, এই আইন বাংলাদেশে নজরদারির সবচেয়ে সহায়ক এবং একই সঙ্গে এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য একটি বড় বাধা হিসেবে কাজ করেছে।’

আলোচনায় বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা খাতের বিষয়গুলো নিয়ে আইরিন খান বলেন, ‘আমাদের একটি অন্তর্বর্তী সরকার আছে, যার কর্তৃত্ব সীমিত। আমাদের একটি নিরাপত্তা খাত আছে; এই একটি মাত্র খাতে অভ্যুত্থান ও পরিবর্তনের কোনো প্রভাব পড়েনি। তাই এ ধরনের পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা খাতে সংস্কার নিশ্চিত করতে আমরা কী করতে পারি?’

জাতিসংঘের বিশেষ এই র‍্যাপোর্টিয়ার বলেন, ‘এই রূপান্তর বাস্তবায়নের জন্য নিরাপত্তা খাতকেই সহায়তা করতে এগিয়ে আসতে হবে (বর্তমান সরকারকে)। এখনো তাদের কাছে সব ধরনের (নজরদারি) সরঞ্জাম রয়েছে। আর সে কারণে পরবর্তী সরকারের নেতৃত্ব কে দেবে, তা নির্ধারণে অন্য সবার চেয়ে তাদের বাড়তি সুবিধা রয়েছে।’

পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ডিজিটাল পরিসরে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় বর্তমান সরকার কী করতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনায় আইরিন খান বলেন, ‘ডিজিটাল নিয়ে ভাবুন। আমি মনে করি না, সরকার তা করছে। তবে অন্য সবাই ডিজিটাল নিয়ে ভাবছে। তাই সরকারের ডিজিটাল নিয়ে এবং ডিজিটাল পরিসরে কীভাবে কাজ করবে, সে বিষয়ে ভাবা দরকার। (ইন্টারনেট) কোম্পানিগুলোকে ডাকুন, তাদের সঙ্গে কথা বলুন এবং ডিজিটাল পরিসর কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা মানুষকে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকেও বুঝতে দিন।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিনের প্রোগ্রাম অফিসার ডায়নাহ ফন ডার গেস্ট বলেন, ‘আমি মনে করি, নজরদারি নিজে থেকে অবৈধ নয়। সর্বত্র রাষ্ট্রগুলোর জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধের তদন্ত করা এবং নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু নজরদারি যখন ব্যাপক, অস্বচ্ছ ও অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়, তখন তা একটি বিপজ্জনক সীমা অতিক্রম করে।’

ওয়েবিনারে বলা হয়, বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ডিজিটাল স্বাধীনতা যেমন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, তথ্যে প্রবেশাধিকার এবং অনলাইনে নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি হয়ে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে সাইবার আইন ও এর প্রয়োগের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ; ডিজিটাল পরিসরে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা এবং মানুষের অধিকার সুরক্ষায় সংস্কারের সম্ভাবনা নিয়ে এতে আলোচনা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
  • কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি