বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট দেবে অন্তর্বর্তী সরকার
Published: 2nd, May 2025 GMT
আগামী অর্থবছরের জন্য বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট দেবে অন্তর্বর্তী সরকার—এমনটাই বলেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট দেব। আমরা বাজেটে প্রত্যাশার ফুলঝুড়ি দেব না। আগে বড় বড় বাজেট অনুমোদন করা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা যে বাজেট দেব, তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করব।’
গতকাল বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরামর্শক কমিটির ৪৫তম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট সামনে রেখে এনবিআর এবং ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) এই সভার আয়োজন করে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু ও সংগঠনটির বর্তমান প্রশাসক মো.
করছাড় বা কর রেয়াতের দিন চলে গেছে বলে মন্তব্য করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘রেয়াতের দিন চলে গেছে। আইএমএফের চাপে আছি। রাজস্ব বাড়াতে হবে। সরকারও চালাতে হবে। কোনো খাতে রেয়াত দেওয়া মানে, সেখান থেকে কর পাব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা দর-কষাকষি করব। তবে পাল্টা শুল্ক ইস্যুতে তাদের চটাব না। এ নিয়ে আলোচনার জন্য ৯০ দিন সময় আছে। এর মধ্যে বিষয়টির সমাধান না হলে আমরা আরও সময় চাইব।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ‘বিগত সময়ে খরচের মহোৎসবের বাজেট করা হতো। আমরা ব্যয়ভিত্তিক নয়, একটি লক্ষ্যভিত্তিক বাজেট তৈরির পরিকল্পনা করছি।’ তিনি আরও বলেন, বিগত সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় করা হতো, ব্যয় করাটা যেন ঈদ পালন করা। যেটার কোনো প্রয়োজন নেই, প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে তা করা হয়েছে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, প্রতিবছর এনবিআরকে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের দায় দেওয়া হচ্ছে। তখন এনবিআরও গণহারে কর আরোপ করে। তাই ব্যবসায়ীদের দায়িত্বের সঙ্গে প্রস্তাব দেওয়া প্রয়োজন, যাতে তা বাস্তবায়ন করা যায়। তিনি আরও বলেন, কর ন্যায্যতা কায়েম করা না গেলে সমাজে দুর্বৃত্তায়ন হয়। আর দুর্বৃত্তরাই বারবার ক্ষমতায় আসে।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, ‘বিনিয়োগের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে চাকরির বাজার সৃষ্টি, যা বেসরকারি খাত ছাড়া সম্ভব নয়। আমরা সরকারকে ব্যবসা থেকে সরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। ব্যবসায়ীরাই ব্যবসা করবেন।’ তিনি বলেন, এফবিসিসিআই বাজেটে বাস্তবায়নের জন্য এক হাজার সুপারিশ দিয়েছে। সংখ্যা ১৫টি হলে চলতি বছরের মধ্যেই সেগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হতো। বাজেট নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সারা বছর সংলাপ হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
করকাঠামো যৌক্তিক করার কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে বলে মন্তব্য করেন ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খান। তিনি বলেন, ‘দেশের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো, আমাদের কাস্টমস বা শুল্ককাঠামো। বর্তমানে সর্বোচ্চ শুল্কহার ২৫ শতাংশ, যা অনেক দেশের তুলনায় বেশি। এর বাইরে সম্পূরক ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক যুক্ত হয়ে পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ব্যয়ের চাপ সৃষ্টি করে। এই করকাঠামো যৌক্তিক করা জরুরি।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট ব যবস য় সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা-৮ আসনে নির্বাচন করবেন মির্জা আব্বাস
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৩৭টি সংসদীয় আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেছে বিএনপি।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই তালিকা প্রকাশ করেন।
আরো পড়ুন:
যে আসন থেকে লড়বেন তারেক রহমান
২৩৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা, ৩টি আসনে লড়বেন খালেদা জিয়া
এর আগে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে দলীয় প্রার্থীদের প্রাথমিক নামের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়।
এ সময় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভ্যাব্য প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর পর আগামী ফেব্রুয়ারিতে আমরা গণতান্ত্রিক নির্বাচন পেতে যাচ্ছি। সেই নির্বাচন প্রায় ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা দেওয়া হচ্ছে। আর যেসব আসনে যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে, সেটি বিএনপি সমন্বয় করে নেবে।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “দিনাজপুর-৩ থেকে আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বগুড়া-৭ ও ফেনী-১ আসন থেকেও লড়বেন তিনি।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিতি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ