১১ দাবিতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সংবাদ সম্মেলন
Published: 2nd, May 2025 GMT
বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ বছর করাসহ ১১টি দাবি জানিয়েছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
শুক্রবার (২ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড.
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে হাত দিয়েছে। এটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। আমরা জানি, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড, জাতি গঠনের কারিগর শিক্ষক। দেশের সিংহভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী দ্বারা। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বিষয় এই যে, একই কারিকুলাম ও সিলেবাসে পাঠদান করা হলেও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মাত্র ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া, ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসাভাতা পেয়ে থাকেন। অবসরে যাওয়ার পর ৩-৪ বছরেও অবসর-সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পাচ্ছেন না। ইউনেস্কোর সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষা খাতে জাতীয় বাজেটের ২০ শতাংশ অথবা জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দ করার কথা থাকলেও ধারাবাহিকভাবে জিডিপির মাত্র ২ শতাংশের আশপাশে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এই বরাদ্দ ন্যূনতম ৪ শতাংশ করলেই শিক্ষা খাতের বিরাজমান সমস্যার বিরাট অংশ সমাধান করা সম্ভব।
কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির দাবিগুলো হলো:
১। সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মতো এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদেরও শতভাগ উৎসবভাতা, বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতা দিতে হবে।
২। ১১টি বিষয়ের ওপর গঠিত ১১টি সংস্কার কমিশনের মতো শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
৩। উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ এবং উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের জ্যেষ্ঠ প্রভাষকের পদ বাতিল করে আগের মতো সহকারী অধ্যাপকের পদ চালু করতে হবে।
৪। বেসরকারি কলেজে অনার্স ও মাস্টার্সসহ বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়োগ করা শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করাসহ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবিলম্বে এমপিওভুক্ত করতে হবে।
৫। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মতো অবসর-সুবিধা দিতে হবে। এ বিধান না হওয়া পর্যন্ত অবসরে যাওয়ার তিন মাসের মধ্যেই কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর তহবিলের টাকা দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে।
৬। বেসরকারি কলেজে সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপকের পদ সৃষ্টি করতে হবে।
৭। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মতো সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ বছর করতে হবে।
৮। শিক্ষা প্রশাসনে বেসরকারি শিক্ষকদের আনুপাতিক হারে পদায়ন করতে হবে।
৯। অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে আগের মতো অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে।
১০। অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগও শিক্ষক নিয়োগের মতো এনটিআরসিএ বা অন্য যেকোনো বিকল্প শিক্ষক নিয়োগ কমিশনের মাধ্যমে করতে হবে।
১১। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের ওপর হামলা, নির্যাতন, লাঞ্ছনা ও চাকরিতচ্যুতি বন্ধ করা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে।
ঢাকা/এএএম/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষকদ র ব সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করলো বিএসইসি
গত ৫ মার্চ চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে হেনস্তা করার অভিযোগে নিজ সংস্থার ২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইসঙ্গে এ ঘটনায় দুইজন কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বিএসইসির জরুরি কমিশন সভায় এ কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। আজ বুধবার সকালে কাজে যোগ দেওয়ার পর সাময়িক দরখাস্তের আদেশ হাতে পেয়েছেন তারা।
বিএসইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সাময়িক বরখাস্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন- বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্মপরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপপরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), উপপরিচালক আল ইসলাম (৩৮), উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম (৪২), উপপরিচালক তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), সহকারী পরিচালক রায়হান কবীর (৩০), সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন, সহকারী পরিচালক আবদুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী (৩১) এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফকে (২৯)।
মামলার আসামিদের বাইরে আরো যে ৬ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তারা হলেন- পরিচালক আবুল হাসান, পরিচালক ফখরুল ইসলাম মজুমদার, অতিরিক্ত পরিচালক মিরাজ উস সুন্নাহ, উপ-পরিচালক নানু ভূঁইয়া, সরকারি পরিচালক আমিনুর রহমান খান এবং সহকারী পরিচালক তরিকুল ইসলাম।
যে দুই কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে, তারা হলেন- মাকসুদা মিলা, সহকারী পরিচালক (রেজিস্ট্রেশন) এবং কাউসার পাশা বৃষ্টি, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা।
বরখাস্তের আদেশে হিসেবে গত ৫ মার্চ শেয়ারবাজার তদন্ত কমিটির চারটি প্রতিবেদনের বিষয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় বৈঠককালে কমিশনের অনুমতি ছাড়াই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জোরপূর্বক প্রবেশ করে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের হেনস্তা এবং ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
সাময়িক বরখাস্ত মিরাজ উস সুন্নাহর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক কমিশন সভায় ঢুকে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অভিযোগ আনা হলেও ওই সভায় চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের সঙ্গে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এ ঘটনায় আগেই (গত ৬ মার্চ) ১৬ জনের বিরুদ্ধে বিএসইসি চেয়ারম্যানের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান বাদী হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলাটি করেছিলেন। এ মামলায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে জামিনে আছেন তারা।
মামলার ১৬ আসামির মধ্যে নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে এরই মধ্যে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে। আরেকজন নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার আবেদন করেছেন।
ওই মামলার আসামিদের বাইরে আরো ছয়জনকে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ এনে বরখাস্ত করা হয়েছে।