নাটোরের লালপুর উপজেলায় প্রেমিকার নগ্ন ভিডিও প্রচারের অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা  সাফিউদ্দৌলা ওরফে শাফিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৯ মে)  দিবাগত রাতে উপজেলার দুড়দুড়িয়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

শাফি একই এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে। তিনি নর্থবেঙ্গল সুগার মিলের ইক্ষু ক্রয় কেন্দ্র ব্যবস্থাপক (সিআইসি) পদে কর্মরত রয়েছেন। তিনি লালপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রচার সম্পাদক।   

শাফি ও ওই নারী নর্থবেঙ্গল সুপার মিলের মাধবপুর সেন্টারে কর্মরত থাকাকালে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ সময় সহকর্মীরা নিষেধ করলেও তারা পাত্তা দেননি। এরমধ্যে শাফির সহায়তায় সিআইসি পদটি বাগিয়ে নেন ওই নারী। এরপর থেকে তিনি শাফির সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দিতে থাকেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে শাফি এ নিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যেতে থাকেন।

আরো পড়ুন:

পাল্টা অভিযোগ পলাশের শ্বশুরের ‘শাশুড়ি এত দজ্জাল হয়, জানা ছিল না’

এসএসসি পরীক্ষার্থীকে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার

মামলায় করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে উপজেলার গোপালপুরের ভাড়া বাড়িতে নিয়ে কৌশলে মোবাইল ফোনে ওই নারীর বিভিন্ন অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারন করে রাখেন শাফি। বিষয়টি জানতে পেরে সেই সময় মীমাংসা করা হয়। গত ৬ থেকে ৯ মে অজ্ঞাত মোবাইল নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে সেসব ভিডিও পাঠিয়ে টাকা দাবি করা হয়। অন্যথায় ভিডিওগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। টাকা না দেয়ায় শুক্রবার (৯ মে) সন্ধ্যার দিকে ময়না মনি নামে ফেসবুক আইডি থেকে অশ্লীল ভিডিওগুলো ছড়িয়ে দেয়া হয়। 

লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুজ্জামান বলেন, রাতে ভুক্তভোগী নারী লালপুর থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন। রাতেই অভিযান চালিয়ে শাফিকে গ্রেপ্তার করে নাটোর আদালতে পাঠানো হয়েছে। 

ঢাকা/আরিফুল/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ছুরি মেরে স্কুলছাত্র হত্যা যুবকের বাড়িতে আগুন

গাজীপুরের শ্রীপুরে এক স্কুলছাত্রকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর হামলাকারীর বাড়িতে আগুন দিয়েছে জনতা। শুক্রবার রাতে পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লোহাগাছ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রাত ১০টার দিকে হামলার শিকার হয় স্কুলছাত্র জিহাদ হাসান জয়। ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে আগুন দেওয়া হয় একই এলাকার মোজাম্মেল 
হকের বাড়িতে।
নিহত জিহাদ হাসান জয় (১৫) ওই এলাকার বোরহান উদ্দিনের ছেলে। সে শ্রীপুর টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এলাকাবাসী জানায়, শুক্রবার বিকেলে জিহাদ হাসান জয় ও তার বন্ধুরা স্থানীয় সরকারবাড়ী মাঠে ফুটবল খেলছিল। খেলা শেষ করে তারা মাঠে বসে বিশ্রাম নেওয়ার সময় একই এলাকার মোজাম্মেল হক (৩৩) সেখানে যান। সে জয়ের বন্ধু একই এলাকার মুদি দোকানি হাবিবুর রহমানের ছেলে জুনায়েদকে হত্যার হুমকি দেন। এর প্রতিবাদ করে জয়। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি হলে মোজাম্মেল চলে যান। জয়ও চলে যায় বাসায়।
কয়েক ঘণ্টা পরই মোবাইল ফোনে কল করে সরকার মার্কেটে যেতে বলে। বন্ধুরা জানায়, রাত ১০টার দিকে পাঁচ বন্ধুর সঙ্গে সেখানে যায় জয়। এর আনুমানিক ১৫ মিনিট পর মোজাম্মেল সেখানে এসেই জয়কে গালাগালি শুরু করে। এক পর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে জয়ের পেটে আঘাত করে পালিয়ে যান। 
এলাকাবাসীর জয়কে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত ১২টার দিকে মারা যায় জয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মোজাম্মেলের বাড়িতে হামলা চালায় এলাকার লোকজন। এক পর্যায়ে তারা আগুন ধরিয়ে দিলে বাড়ির আসবাব পুড়ে যায়।
মোজাম্মেল এলাকায় সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্ত হিসেবে পরিচিত। নিহত জয়ের বাবা বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘মোজাম্মেল এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। সে সহযোগীদের নিয়ে আমার নিষ্পাপ ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে। পেটে ছুরিকাঘাতের পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে অণ্ডকোষেও আঘাত করেছিল তারা।’
এ ঘটনায় বোরহান উদ্দিন বাদী হয়ে শনিবার সকালে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১২ জনকে আসামি করে শ্রীপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। আসামি তালিকায় মোজাম্মেল (৩৩), সাগর (৩০) ও আবু বকর সিদ্দিকের (৫৫) নাম আছে। 
শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, এরই মধ্যে ৩ নম্বর আসামি আবু বকর সিদ্দিককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে তাকে গাজীপুর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রধান আসামি মোজাম্মেলসহ অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ