প্রেমিকার নগ্ন ভিডিও প্রচার: স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার
Published: 10th, May 2025 GMT
নাটোরের লালপুর উপজেলায় প্রেমিকার নগ্ন ভিডিও প্রচারের অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাফিউদ্দৌলা ওরফে শাফিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৯ মে) দিবাগত রাতে উপজেলার দুড়দুড়িয়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শাফি একই এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে। তিনি নর্থবেঙ্গল সুগার মিলের ইক্ষু ক্রয় কেন্দ্র ব্যবস্থাপক (সিআইসি) পদে কর্মরত রয়েছেন। তিনি লালপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রচার সম্পাদক।
শাফি ও ওই নারী নর্থবেঙ্গল সুপার মিলের মাধবপুর সেন্টারে কর্মরত থাকাকালে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ সময় সহকর্মীরা নিষেধ করলেও তারা পাত্তা দেননি। এরমধ্যে শাফির সহায়তায় সিআইসি পদটি বাগিয়ে নেন ওই নারী। এরপর থেকে তিনি শাফির সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দিতে থাকেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে শাফি এ নিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যেতে থাকেন।
আরো পড়ুন:
পাল্টা অভিযোগ পলাশের শ্বশুরের ‘শাশুড়ি এত দজ্জাল হয়, জানা ছিল না’
এসএসসি পরীক্ষার্থীকে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার
মামলায় করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে উপজেলার গোপালপুরের ভাড়া বাড়িতে নিয়ে কৌশলে মোবাইল ফোনে ওই নারীর বিভিন্ন অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারন করে রাখেন শাফি। বিষয়টি জানতে পেরে সেই সময় মীমাংসা করা হয়। গত ৬ থেকে ৯ মে অজ্ঞাত মোবাইল নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে সেসব ভিডিও পাঠিয়ে টাকা দাবি করা হয়। অন্যথায় ভিডিওগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। টাকা না দেয়ায় শুক্রবার (৯ মে) সন্ধ্যার দিকে ময়না মনি নামে ফেসবুক আইডি থেকে অশ্লীল ভিডিওগুলো ছড়িয়ে দেয়া হয়।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুজ্জামান বলেন, রাতে ভুক্তভোগী নারী লালপুর থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন। রাতেই অভিযান চালিয়ে শাফিকে গ্রেপ্তার করে নাটোর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/আরিফুল/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে স্থানীয়ভাবে ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু
রাজশাহীতে স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। আজ সোমবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত সাতজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। এর মধ্যে রাজশাহীরই পাঁচজন। রোগীদের ভাষ্য, স্থানীয়ভাবে তাঁরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া রাজশাহীর নতুন পাঁচ ডেঙ্গু রোগীর চারঘাট উপজেলার দুজন, বাঘার একজন এবং রাজশাহী নগরের দুজন রয়েছেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কে বিশ্বাস বলেন, এ বছর ডেঙ্গুর মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। বিগত বছর বিপুল পরিমাণ রোগীকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে। তবে এ বছর এখন থেকেই স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে এ বিষয়ে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। ব্যক্তিগতভাবেও সচেতনতা বাড়ানো দরকার। নয়তো পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে. তাঁদের বেশির ভাগই রাজশাহীতে থেকে আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল রাজশাহীর চারঘাট থেকে ভর্তি হয়েছেন ৬০ বছর বয়সী নুরুন্নাহার। তাঁর এক স্বজন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বাড়িতে থেকেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। বয়স বেশি হওয়ায় তাঁর অবস্থা একটু নাজুক।
রাজশাহী নগর থেকে আক্রান্ত হওয়া এক রোগীর বাবা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ছেলে শহরের মধ্যেই ছিলেন। কীভাবে আক্রান্ত হয়েছেন, জানেন না। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরা আরেকজন বলেন, রাজশাহী শহরে থেকেই আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী মেডিকেলে এ বছর এখন পর্যন্ত ৯৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন সাতজন। এ বছর চিকিৎসা নিয়ে ফিরেছেন ৭৮ জন। মারা গেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা দুই রোগী। বর্তমানে ভর্তি আছেন ১৩ জন। এই ১৩ জনই স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে রাজশাহীর রয়েছেন ৫ জন।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ভালো থাকায় এখন পর্যন্ত সেভাবে ডেঙ্গু ছড়ায়নি। এটি যাতে না ছড়ায়, সে বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করছে। ইতিমধ্যে ১২টি নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনা মূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা চালু করা হয়েছে। গতকাল রোববার ১৮ জনের পরীক্ষায় কারও ডেঙ্গু শনাক্ত হয়নি। এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার তাঁরা স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে সভা করেছেন। তাঁরা কয়েক দিনের মধ্যে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রচার চালাবেন।
রাজশাহীর সিভিল সার্জন এস আই এম রাজিউল করিম বলেন, রাজশাহীতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই হচ্ছে। এখন পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো রোগী ভর্তি হননি। উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতালগুলোতে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া আছে। ডেঙ্গুর লক্ষণ থাকলে যেন পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া হয়। এ ছাড়া তাঁদের স্বাস্থ্যকর্মীরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতার প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি ভালো আছে।