পুলিশ দেখেই দৌড় দিয়েছিলেন ইউপি সদস্য আবু বক্কর ছিদ্দিক ওরফে বাবুল (৪২)। গ্রেপ্তার এড়াতে সামনে পুকুর দেখে সেখানেই ঝাঁপ দেন তিনি। এরপর পুকুরে থাকা অবস্থায় পুলিশকে হাতজোড় করে বলতে থাকেন, ‘আমার মা মারা গেছে, গ্রেপ্তার করবেন না, ছেড়ে দিন।’ কিন্তু পুলিশ তাঁর কথা শোনেনি। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় পুকুর থেকে উঠিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।

কক্সবাজারের খুরুশকুল ইউনিয়নের কাওয়ার পাড়ায় আজ সোমবার বিকেল চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। গ্রেপ্তার আবু বক্কর ছিদ্দিক খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলার আসামি তিনি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

ইলিয়াস খান প্রথম আলোকে বলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের মিছিলে হামলা ও ভাঙচুরের একটি মামলায় ইউপি সদস্য আবু বক্কর আসামি ছিলেন। আজ বিকেলে পুলিশ কাওয়ার পাড়ায় অভিযানে গেলে ইউপি সদস্য পুলিশ দেখে দৌড় দেন। একপর্যায়ে তিনি একটি পুকুরে ঝাঁপ দেন। সেখান থেকে উঠিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসা হয়।

পুকুরে নেমে পুলিশকে গ্রেপ্তার না করতে অনুরোধ জানান ইউপি সদস্য আবু বক্কর ছিদ্দিক। আজ বিকেলে কক্সবাজারের খুরুশকুল ইউনিয়নে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

রাজু ভাস্কর্যে সমবেত কণ্ঠে গাওয়া হলো জাতীয় সংগীত

সন্ধ্যা নামার খানিক পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে সমবেত কণ্ঠে ভেসে এল, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি।’

শাহবাগে জাতীয় সংগীত অবমাননা করার অভিযোগে গতকাল সোমবার সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেছেন ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল সংগঠনের নেতা–কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে উপস্থিত ছিল বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, জাতীয়বাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীসহ কয়েকটি ছাত্রসংগঠন। এ ছাড়া বিভিন্ন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও অংশ নিতে দেখা যায়। তবে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা–কর্মীদের কাউকে দেখা যায়নি।

সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে সম্মিলিতভাবে এই সংগীত গাওয়া হয়। এর আগে ও পরে রাজু থেকে স্লোগান ওঠে, ‘তুমি কে আমি কে, বাংলাদেশি বাংলাদেশি,’ ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা,’ ‘একাত্তরের বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই, চব্বিশের বাংলায়, রাজাকারের ঠাঁই নাই,’ ‘একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’ প্রভৃতি।

আয়োজকেরা জানান, ১০ মে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে বিক্ষোভ চলাকালে কয়েকজনকে জাতীয় সংগীত গাইতে বাধা দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে তাঁরা সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়ার আয়োজন করেছেন।

জাতীয় সংগীত গাওয়ার পর গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো পাকিস্তানপন্থার রাজনীতি চলবে না, ভারতপন্থী রাজনীতিও চলবে না, শুধু বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি চলবে। আগামীর বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি করতে হবে।’ বাকের আরও বলেন, ‘গোলাম আযম এই বাংলার কে? আমি এই প্রশ্ন রাখতে চাই। বাংলাদেশে যারা একাত্তরের বিরোধী ছিল, সে যে-ই হোক, সে এই বাংলার হতে পারে না।’

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক আবদুল কাদেরও একই কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আজকের প্রতিবাদ বাংলাদেশপন্থীদের সম্মিলিত প্রতিবাদ। যারা নতুন করে আবার আঘাত করবে, টুঁটি চেপে ধরবে, সার্বভৌমত্বে আঘাত করবে, তাদের আমরা একটা বার্তা দিয়েছি যে বাংলাদেশপন্থীরা এখনো জীবিত আছে।’

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি নূজিয়া হাসিন রাশা বলেন, ‘আজকের এই জাতীয় সংগীত গাওয়া ছিল আমাদের একধরনের প্রতিবাদ।’ তিনি বলেন, ‘শাহবাগে জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় জামায়াত–শিবির বাধা দেয়। এটাকে শুধু বাধা হিসেবে দেখলে চলবে না। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি সব সময়ই একাত্তরকে খর্ব করতে চায়।’

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানসুরা আলম বলেন, ‘একাত্তর আনকম্প্রোমাইজিং, একাত্তর নিয়ে আমরা বাংলাদেশিরা কারও সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করব না। একাত্তর আমাদের অস্তিত্ব।’

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন, ‘আমরা কি এমন ঐক্য করব, যে ঐক্য করলে আমরা জাতীয় সংগীত গাইতে পারব না? তবে ন্যূনতম ঐক্য লাগবে; কিন্তু সেটা একাত্তর এবং চব্বিশের গণহত্যাকারীদের স্পেস দিয়ে নয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ