জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: আন্দোলনের মুখে সরকার যেসব সিদ্ধান্ত নিল
Published: 17th, May 2025 GMT
আন্দোলনের মুখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে আন্দোলনস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ইউজিসি যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেগুলো হলো—সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পরিচালন বাজেট বাড়ানো হবে। আবাসন সংকট নিরসনে দ্রুত অস্থায়ী হল নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুত বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট অনুমোদন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা—এই তিন দাবিতে কিছুদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুনদাবি পূরণের আশ্বাস, অনশন ভাঙলেন জগন্নাথের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা৪ ঘণ্টা আগেধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিন দফা বাস্তবায়নের দাবিতে গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে লং মার্চ করেন জগন্নাথের শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুর ১২টার দিকে তাঁদের লং মার্চ কাকরাইলে পৌঁছালে বাধা দেয় পুলিশ। এক পর্যায়ে বাধা পার হয়ে শিক্ষার্থীরা যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশত শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর ওই দিন বেলা দুইটা থেকে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুনআন্দোলন শেষ করলেন জগন্নাথের শিক্ষার্থীরা৩১ মিনিট আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন জগন ন থ
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমতি ছাড়াই গাসিক কর্মকর্তা কিবরিয়ার বিদেশ যাত্রা
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি বিধি লঙ্ঘন, তথ্য গোপন, অনুমতি ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ ও বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর গত ১৫ সেপ্টেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিক শাহেদ আলম নামে এক ব্যক্তি।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গোলাম কিবরিয়া সরকারি কর্মকর্তা হয়েও তথ্য গোপন করে বেসরকারি পাসপোর্ট (নং A০১২৬৬৬১২) সংগ্রহ করেছেন, যা সরকারি চাকরি বিধিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন। ওই পাসপোর্ট ব্যবহার করে তিনি একাধিকবার কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বিদেশ ভ্রমণ করেছেন।
অভিযোগকারী দাবি করেন, তিনি ২০২৪ ও ২০২৫ সালের বিভিন্ন সময়ে কানাডা সফর করেছেন, যার কোনো অনুমোদন তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নেননি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সর্বশেষ ২০২৫ সালের ১৯ জুন কানাডা সফরের সময় তিনি প্রায় ৫০ হাজার মার্কিন ডলার সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, গোলাম কিবরিয়া নিয়মিত বিদেশ ভ্রমণের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করে কানাডায় সেকেন্ড হোম এবং ব্যবসায়িক বিনিয়োগ করেছেন। তার নামে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা পাচারের দুর্নীতির মামলাও চলমান রয়েছে। এমন অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি এখনো পদে বহাল থেকে প্রভাব খাটাচ্ছেন এবং যেকোনো সময় বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অভিযোগকারী বলেন, “তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নিয়মিত বিদেশে যাচ্ছেন, যা সরকারি চাকরি বিধিমালার সরাসরি লঙ্ঘন এবং গুরুতর শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
সূত্র জানায়, গোলাম কিবরিয়া গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের একজন বিতর্কিত কর্মকর্তা। তার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি এখন ওপেন সিক্রেট। তিনি দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে কানাডায় স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা করছেন। গাজীপুরবাসীর স্বার্থে এমন বেপরোয়া ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) মুহাম্মদ সোহেল হাসান বলেন, “লিখিত অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে যাচাই করা হয়েছে। প্রশাসক মহোদয় বিষয়টি নিয়ে অবগত আছেন। তথ্য গোপন করে বিদেশ যাত্রা শাস্তিযোগ্য অপরাধ, প্রমাণ মিললে বিভাগীয় তদন্তে পাঠানো হবে।”
এ বিষয়ে জানতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো. আমিন আল পারভেজ বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি। অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে শোকজ করা হয়েছিল এবং তিনি জবাবও দিয়েছেন। শোকজের প্রতিবেদনটি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি।”
এ বিষয়ে গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/রেজাউল/এস