‘অপারেশন সিঁদুর’ চালানোর আগে পাকিস্তানকে অবহিত করেছিল ভারত। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের এই ‘স্বীকারোক্তির’ পর ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। 

ভারতেরর প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, হামলার আগে পাকিস্তানকে সবকিছু জানিয়ে দিয়ে ভারতের নিরাপত্তা ও সেনাদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। 

শনিবার রাহুল গান্ধী এক্স-এ জয়শঙ্করের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। সেখানে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “অপারেশনের শুরুতে, আমরা পাকিস্তানকে একটি বার্তা পাঠিয়ে বলেছি, ‘আমরা সন্ত্রাসী অবকাঠামোতে হামলা চালাচ্ছি এবং আমরা পাক সেনাদের ওপর হামলা চালাব না। এতে পাক সেনাদের দূরে সরে যাওয়ার এবং এতে জড়িত না হওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু তারা আমাদের এই ভালো পরামর্শ না নেওয়াকে বেছে নেয়।”

সমালোচনার মুখে ভারতের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি) দাবি করেছে, জয়শঙ্কর পাকিস্তানকে হামলার আগে হামলা সম্পর্কে জানানো হয়েছে, এমন কিছু বলেননি। তার কথা ভুলভাবে প্রচারিত হচ্ছে।

রাহুল গান্ধী এক্স- এ এক পোস্টে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, “কে এটা অনুমোদন করেছে? এর জন্য আমাদের বিমানবাহিনী কত বিমান হারিয়েছে?”

আম আদমি পার্টির (এএপি) রাজ্যসভার সদস্য সঞ্জয় সিং কথিত পূর্ব সতর্কতাকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা’ বলে অভিহিত করেছেন। 

তিনি বলেছেন, “পাকিস্তানকে আগে থেকে জানানো ভারত এবং আমাদের সেনাবাহিনীর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা। এটি নজিরবিহীন এবং ক্ষমার অযোগ্য।”

তিনি আরো বলেন, “এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উত্তর দিতে হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কতটা সত্যি বলছেন। আর আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে দাবি করেছেন সেগুলোর সত্যতা কতটুকু। কেন পাকিস্তানকে আগে বলা হলো। এটি কি উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনা ছিল? ভারতের মানুষের এ ব্যাপারে জানার অধিকার আছে। মোদি সরকারকে উত্তর দিতে হবে। তারা কি সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বেঈমানি এবং আমাদের নিরাপত্তাকে অবমূল্যায়ন করেছে কি না। এরপর বিরোধী দল সাধারণ মানুষকে জানাবে এবং এর সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করবে।”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পরর ষ ট রমন ত র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।

আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি সভায়’ এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।

তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। এসব সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ