রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য জামায়াতে ইসলামী সর্বোচ্চ ছাড় দিতে রাজি আছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। তিনি বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী সংস্কারকে দলীয় নয়, দেশ ও জনগণের জন্য কাজ বলে মনে করছে। তাই জামায়াত সংস্কারের জন্য সর্বোচ্চ ছাড় দিতে রাজি আছে।

শনিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

নায়েবে আমির জানান, জামায়াতে ইসলামী সংস্কারের বিষয়ে দলীয় অবস্থান পুনর্বিবেচনা করেছে। যেসব বিষয়ে প্রথমে জামায়াত একমত ছিল না, পরে আলোচনার মাধ্যমে কিছু বিষয়ে একমত হয়েছে।

মো.

তাহের বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রসেস এবং ইস্যুতে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে নয়, দেশের স্বার্থে-জাতীয় স্বার্থে সবার কল্যাণে জামায়াতে ইসলামী বিবেচনা করছে। এ কারণেই আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে যেগুলো উত্তম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, সেখানে প্রয়োজনে আমরা আমাদের মতো পরিবর্তন করে ঐকমত্য পোষণ করেছি। আমরা যখনই বুঝতে পারছি, আমাদের যে সিদ্ধান্ত বা চিন্তা তার চেয়ে আরও ভালো হতে পারে দেশ ও জাতির জন্য, তখনই আমরা পরিবর্তন আনছি। কারণ একটাই, আমাদের লক্ষ্য, কিন্তু দলীয় নয়, জাতীয় অর্জন।

বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আর ২-১ দিনের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের সংলাপ শেষ হবে। তারপর দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপ শুরু হবে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো অনেক বিষয়ে একমত হয়েছে। কিছু জায়গায় দ্বিমত আছে। যেসব দ্বিমত আছে সেসব বিষয়ে আগের বৈঠকে পুনর্বিবেচনা করার জন্য বলা হয়েছিল।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার ও ড. ইফতেখারুজ্জামান।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহেরের নেতৃত্বে দলটির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি (ভারপ্রাপ্ত) এ টি এম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ ও বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম র র জন য ঐকমত য ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব

কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তবে কারা, সেটা স্পষ্ট করেননি তিনি।

আজ শনিবার বিকেলে রংপুর নগরের সেন্ট্রাল রোডে জাপা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ মন্তব্য করেন।

শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দল ইতিমধ্যে ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে বা স্বাক্ষর করে একধরনের ফাঁদে পড়ে গেছে। কিছু রাজনৈতিক দল বলছে, ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে। এখানে প্রতারক ও প্রতারণা শব্দটি উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো এ রকম সংস্কার চাইনি।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ঐকমত্য তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে জাপা মহাসচিব বলেন, কমিশন ৫৬টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি দলকে বাদ দিয়েছে। যে দলগুলো সেখানে গেছে, তাদের মধ্যে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে মতবিরোধ আছে। এক ভাগকে ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ করেছে। অন্য আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে পরে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করেছে।

বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বলে দাবি করেছেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। কারণ, নির্বাচিত সরকার সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করেছে ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। এই মুহূর্তে দেশে যে প্রশাসনিক কাঠামো আছে, তার ব্যাপারে তথ্য উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন, তাঁরা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কথামতো প্রশাসন সাজিয়েছে, তার সঙ্গে এনসিপি আছে। এই তিন দলের বাইরে অন্য কোনো দল যদি ভোটে আসে, এই প্রশাসনিক কাঠামো সেই দলকে সুষ্ঠু ভোট হতে দেবে না।

গণভোটের দাবি নজিরবিহীন উল্লেখ করে শামামী হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সংবিধানে এই মুহূর্তে গণভোট কোনো প্রভিশনে নেই। বর্তমানে গণভোটের যে দাবি উঠেছে, সংসদে পাস হওয়ার আগে এই দাবি বাস্তবায়ন হলে ঐকমত্য কমিশনকে সংসদের মর্যাদা দেওয়া হবে। ঐকমত্য কমিশন সার্বভৌম নয়, নির্বাচিত নয় ও সংসদ নয়। সংসদকে এড়িয়ে গিয়ে কোনো আইন পাস করা হলে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।

এ সময় জাপার কো–চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, রংপুর জেলার আহ্বায়ক আজমল হোসেন, সদস্যসচিব হাজী আবদুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামানসহ জাপা ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণভোট নিয়ে মতভেদে উপদেষ্টা পরিষদের উদ্বেগ
  • দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কেন এমন দুর্বোধ্য পথ
  • এক সপ্তাহের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে ‘ঐকমত্য সুপারিশ’ দেওয়ার আহ্বান
  • সনদ বাস্তবায়নে দ্রুত সিদ্ধান্ত, আরপিওতে পরিবর্তন আসছে
  • তড়িঘড়ি না করে সংবিধান সংস্কারে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান
  • কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব
  • দেশের মানুষ ১৭ বছর ধরে নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে: সাইফুল হক
  • জুলাই সনদে সই না করা অংশের দায় নেব না: মির্জা ফখরুল
  • ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশকে ‘অশ্বডিম্ব’ বললেন সিপিবি সভাপতি